কিটোজেনিক ডায়েট মৃগীরোগের চিকিৎসায় আশার আলো দেখাচ্ছে: বিএসএমএমইউ উপাচার্য
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, কিটোজেনিক ডায়েট মৃগীরোগের চিকিৎসায় নুতন আশার আলো দেখাচ্ছে। তবে এই বিষয়ে আরো গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।
কিটোজেনিক ডায়েট হলো কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবারের পরিবর্তে প্রোটিন ও ফ্যাট জাতীয় খাবারে গুরুত্ব দেওয়া।
রবিবার দুপুরে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের ক্রিস্টাল বলরুমে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শিশু নিউরোলজি বিভাগে উদ্যোগে ‘কিটোজেনিক ডায়েট ইন পেডিয়াট্রিক এপিলেপসি: কারেন্ট এন্ড ফিউচার পারসপেক্টিভ ইন বিএসএমএমইউ” শীর্ষক অনুষ্ঠানে শিশু নিউরোলজি বিভাগ থেকে সদ্য পাসকৃত রেসিডেন্টগণদেরকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
বিএসএমএমইউর উপাচার্য বলেন, বিএসএমএমইউর সার্বিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ধরণের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। বিএসএমএমইউর বর্তমান প্রশাসন চিকিৎসা বিজ্ঞানের নতুন নতুন ইউনিট, ডিভিশন চালু করেছে এবং এই ধারা অব্যাহত রয়েছে। গবেষণা কার্যক্রম পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিএসএমএমইউর বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা দিতে যন্ত্রপাতিসহ যা যা প্রয়োজন হবে তার সবই নিশ্চিত করা হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে শিশু নিউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান গোপেন কুমার কুন্ডু বলেন, সারা বিশ্বে প্রায় পাঁচ কোটি লোক মৃৃগী রোগে আক্রান্ত। বাংলাদেশ এই সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ । বিশ্বের উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশে মৃগীরোগের আধিক্য রয়েছে। শিশুদের মধ্যে মৃগী রোগীর হার বড়দের তুলনায় বেশি পরিলক্ষিত হয়। ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ মৃগীরোগ বিভিন্ন ওষুধের মাধ্যমে সহজে নিরাময়যোগ্য বা নিয়ন্ত্রণযোগ্য। কিন্তু ২০ থেকে ৩০ শতাংশ মৃগী রোগ আছে যা শুধুমাত্র ওষুধের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ যোগ্য নয়। যাকে অনিয়ন্ত্রিত মৃগীরোগ বা রিফ্রাক্টরি এপিলেপসি বা ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স এপিলেপসি বলা হয়। একজন শিশু নিউরোলজিস্ট জন্য এই ধরনের মৃগীরোগ নিয়ন্ত্রণ করা একটি বড় চ্যালেঞ্জও। কিটোজেনিক ডায়েট এই ধরণের অনিয়ন্ত্রিত মৃগীরোগের ক্ষেত্রে একটি বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি। এটি কম শর্করা এবং উচ্চমাত্রার চর্বির সমন্বযয়ে একটি খাবার পদ্ধতি। এই খাবার পদ্ধতি মৃগীরোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। সম্প্রতি বিএসএমএমইউর শিশু নিউরোলজি বিভাগ এবং ইপনাতে অনিয়ন্ত্রিত মৃগীরোগে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে কিটোজেনিক ডায়েট চিকিৎসা পদ্ধতি শুরু করেছে। যদিও এখনও এই বিষয় নিয়ে অনেক গবেষণা করার সুযোগ রয়েছে। ইতিমধ্যে বিএসএমএমইউর সিনিয়র রেসিডেন্টরা এই বিষয়ে গবেষণা শুরু করেছেন। এই কিটোজেনিক ডায়েট চিকিৎসা পদ্ধতি শুরু হলে, খিঁচুনি বা মৃগী রোগের রোগের চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার প্রবণতা অনেকাংশেই কমে যাবে।
বিএসএমএমইউর শিশু নিউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. গোপেন কুমার কুন্ডুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) মো. জাহিদ হোসেন, উপ-উপাচার্য (একাডেমি) একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, শিশু অনুষদের ডিন ও ইপনার পরিচালক শাহীন আকতার, নিউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান আবু নাসার রিজভী। গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. কানিজ ফাতেমা, কনসালটেন্ট ডা. সানজিদা আহমেদ।
ঢাকাটাইমস/২৯মে/এএ