ঢাকার ড্রেনে করোনার জীবাণু, ওয়াসার পানিতে নেই: গবেষণা

প্রকাশ | ৩০ মে ২০২২, ২০:১৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ঢাকায় ওয়াসার পরিশোধিত পানিতে করোনাভাইরাসের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তবে পয়োনিষ্কাশনের ড্রেনের পানিতে ৫৬ শতাংশ এবং কর্দমাক্ত স্থানের ৫৩ শতাংশে  করোনার জীবাণুর অস্তিত্ব মিলেছে।

ওয়াসার এবং আইসিডিডিআর,বি এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে। ছয় মাসব্যাপী এই গবেষণা চালানো হয়। সোমবার রাজধানীর ওয়াসা ভবনে গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়।

গবেষণায় নমুনা হিসেবে বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদী, ঢাকা ওয়াসার পাগলা স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, নারিন্দা, বাসাবো পয়োপাম্পিং স্টেশন, ঢাকা শহরের ভূ-পৃষ্ঠের পানি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি পুকুর ও মিরপুর মাজার পুকুরের পানি ব্যবহার করা হয়।

ফলাফলে দেখা যায়, ওয়াসার সরবরাহ করা পরিশোধিত পানিতে করোনাভাইরাসের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। ঢাকা শহরের পুকুর ও নদীর পানিতেও মেলেনি করোনার জীবাণু।

‘সার্ভে অব স্যুয়েজ অ্যান্ড আদার কন্টামিনেটেড সারফেস ওয়াটার অ্যান্ড ট্রিটেড ওয়াটার সোর্সেস ফর দ্য প্রেজেন্স অব সার্স কোভ-২ ইন অ্যান্ড অ্যারাউন্ড ঢাকা সিটি’ শীর্ষক গবেষণাটির নেতৃত্ব দেন আইসিডিডিআর,বির ইমেরিটাস সায়েন্টিস্ট ড. সিরাজুল ইসলাম।

গতানুগতিকভাবে নয় বরং প্রকৃত অবস্থা তুলে আনতেই গবেষণাটি চালানো হয়েছে বলে জানান ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান।

ওয়াসা এমডি বলেন, ‘শুধু করোনার সময়ে জীবন ও জীবিকা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মানাতে হাত ধোয়ার বিষয়টি দেখেছি। একই সঙ্গে আমাদের পানিতে করোনার কোনো অস্তিত্ব আছে কিনা সেটি দেখতে চেয়েছি। আশার কথা হলো, আমরা নিশ্চিত হলাম ঢাকা ওয়াসার পানিতে করোনার জীবাণু নেই।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ওয়াসার পানি সরাসরি পানযোগ্য হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন। বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে পুরাতন পাইপলাইনের জন্যও ওয়াসার পানি সরাসরি পানযোগ্য হচ্ছে না।’

তাজুল বলেন, ‘এছাড়া পাইপলাইনে ফুটার কারণে ওয়াসার পানি সরাসরি পান করা যাচ্ছে না। উৎপাদনস্থল পরিশোধন চ্যানেলে ওয়াসার উৎপাদিত পানি বিশুদ্ধ। এরপর সরবরাহের জন্য পাইপে দেওয়ার পর আর সেই পানি আর বিশুদ্ধ থাকে না।’

‘কারণ অবৈধভাবে পানি নিতে কিছু লোক পাইপলাইনে ফুটা করে আলাদা লাইন করছে। এতে পাইপে জীবাণু ও ময়লা ঢুকে পানি নষ্ট করে। পানি পানের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।’

ওয়াসার পাইপলাইনে যারা ফুটা করে তারা অপরাধ করছেন মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ‘এটি বন্ধ করতে হবে। তাদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। একইসঙ্গে নতুন পাইপলাইনের কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে। আমরা চাই ঢাকাবাসী নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানি পান করুক। অভিযোগ-অনুযোগ থাকবেই। তারপরও মানুষের জন্য কাজ করতে হবে।’

এসময় রাজধানীর এলাকাভিত্তিক ওয়াসার পানির দাম নির্ধারণ নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যারা বড়লোক গুলশানে থাকি আপনি আমাকে পানি খাওয়াবেন ১৫ টাকা দিয়ে আর বস্তির মানুষ পানি পায় না। অথচ উৎপাদন খরচ যদি হয় ২০ টাকা ২৫ টাকা...’

‘আমিবেশ কিছুদিন ধরে বলে আসছি, আমরা যারা বড়লোক, যারা গুলশানে থাকি, বনানীতে থাকি, আমাদের যে দাম নিবেন, যাত্রাবাড়ীতে থাকলেও সেই দাম নেবেন আবার ঢাকার বাইরে থাকলেও সেই দামই নেবেন? আমি বিত্তবান মানুষ আমাকে ভালো জায়গা রেখেছেন, যেখানে ফ্যাসিলিটি বেশি...তাহলে সেখানে পানির দাম কেন দাম বেশি হবে না?

(ঢাকাটাইমস/৩০মে/কেআর/ডিএম)