ঢাকায় এলাকাভেদে পানির দাম নির্ধারণের নির্দেশনা এলজিআরডি মন্ত্রীর

প্রকাশ | ৩০ মে ২০২২, ২১:০৯ | আপডেট: ৩০ মে ২০২২, ২১:৫০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

রাজধানীর অভিজাত এলাকায় পানির মূল্য বাড়িয়ে নিম্নবিত্তের মানুষ বা বস্তিবাসীকে সাশ্রয়ী মূল্যে পানি দিতে ওয়াসাকে নির্দেশনা দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

তিনি বলছেন, অভিজাতদের জন্য পানিতে ভর্তুকি দেয়ার বিষয়টা গ্রহণযোগ্য না। বরং অভিজাতদের জন্য পানির মূল্য বাড়িয়ে নিম্নবিত্তদের থেকে পানির মূ্ল্য কম নেয়াটা যৌক্তিক। শুধু পানি নয় হোল্ডিং ট্যাক্স, গ্যাস ও বিদ্যুৎসহ অন্যান্য ইউটিলিক্যাল সার্ভিসের মূল্যও জোনভিত্তিক নির্ধারণ করা উচিত বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।

সোমবার রাজধানীতে ঢাকা ওয়াসার হলরুমে আয়োজিত ‘জয়েন্ট রিসার্চ প্রজেক্ট অন কোভিড-১৯ বাই ঢাকা ওয়াসা অ্যান্ড আইসিসিডিডিআর বি’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ প্রসঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ভর্তুকি দিয়ে কোনো প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না। গরিব মানুষের কাছ থেকে রাজস্ব নিয়ে ধনীদের কম দামে পানি দেয়ার সুযোগ নেই। পানির দাম বাড়ানো বা কমানো ওয়াসা কর্তৃপক্ষের বিষয়। ২৫ টাকায় পানি উৎপাদন করে ১৫ টাকায় দেয়া সমর্থনযোগ্য নয়। নিম্নবিত্তের মানুষকে সাবসিডি দিয়ে পানি দেয়া যেতে পারে। কিন্তু যারা উচ্চবিত্ত বা অভিজাত এলাকায় বসবাস করেন তাদেরকে দেয়ার সুযোগ নেই। ‘ইকুইটেবল ডেভেলপমেন্ট’ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

তিনি জানান, ওয়াসা নিরাপদ পানি উৎপন্ন করে থাকে। সেই পানি যখন পাইপ লাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয় তখন অনেকে অনৈতিকভাবে পাইপ ছিদ্র করে সংযোগ নেয়। কিন্তু ছিদ্র ঠিকমত জোড়া না দেয়ায় অথবা বাসায় পানির রির্জাভ ট্যাংক বা ওভারহেড ট্যাংকের মাধ্যমে পানিতে ক্ষতিকর জীবাণু প্রবেশ করে। যা পরবর্তীতে সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে।

নতুন পাইপ লাইন স্থাপনের পাশাপাশি যারা পাইপলাইন থেকে অবৈধভাবে সংযোগ দিচ্ছে বা নিচ্ছে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনার নির্দেশ দেন মো. তাজুল ইসলাম।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঢাকা শহরের পানি সরবরাহের জন্য পুরনো পাইপ লাইনগুলো পরিবর্তন করে নতুনভাবে সংযোজন করা হচ্ছে, যাতে জীবাণুমুক্ত পানি সরবরাহ করা সম্ভব হয়। পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ থেকে মানুষকে বাঁচার জন্য সরকার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে এবং এ ব্যাপারে সতর্ক রয়েছে।

প্রধান অতিথি বলেন, প্রকল্প নেয়ার সময় ফিজিবিলিটি স্টাডি, জায়গা অধিগ্রহণ অথবা লোন নেগোসিয়েশনে বছরের পর বছর চলে যায় যা গ্রহণযোগ্য নয়। সব লোন নেয়া যাবে না। দেশের জন্য অথবা জিডিপিতে অবদান রাখবে এমন লোন নিয়ে প্রকল্প নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদেশিদের কাছ থেকে ভিক্ষা করে খাওয়ার জন্য দেশ স্বাধীন করেননি।

ঢাকায় চাহিদার তুলনায় বেশি পানি উৎপাদন হচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, পাঁচ হাজার বাসাবাড়িতে পানি সরবরাহ করার জন্য পাইপ লাইন বসানো হলেও সময়ের ব্যবধানে ওই এলাকায় জনসংখ্যা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে মানুষ ঠিকমতো পানি পাচ্ছে না। কারণ পানির সরবরাহের তুলনায় ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক বেশি।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী করোনার সঙ্গে অন্যান্য কোন ভাইরাস যাতে ওয়াসার পানিতে না থাকে সেই ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন।

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার তাকসিম এ খানের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইসিডিডিআর বি এর সাবেক নির্বাহী পরিচালক ড. জন ডি ক্লেমনস।

(ঢাকাটাইমস/৩০মে/কেআর/ইএস)