অবশেষে বঙ্গবন্ধুর খুনি রশিদের মেয়ে মেহনাজকে অব্যাহতি দিল গুলশান ক্লাব

সিরাজুম সালেকীন, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৫ জুন ২০২২, ০০:০৩ | প্রকাশিত : ০৪ জুন ২০২২, ২৩:৩৬

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি কর্নেল (অব.) খন্দকার আবদুর রশিদের মেয়ে খন্দকার মেহনাজ রশিদকে উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) এডমিনের চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে গুলশান ক্লাব।

‘বঙ্গবন্ধুর খুনি রশিদের মেয়ে গুলশান ক্লাবের উচ্চপদের চাকুরে? এটাও সম্ভব!’ শিরোনামে ঢাকাটাইমসে শুক্রবার একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপরই নড়েচড়ে বসে গুলশান ক্লাব কর্তৃপক্ষ। চাঞ্চল্যকর সংবাদটি নিয়ে তোলপাড়ের মধ্যে মেহনাজকে উচ্চপদের ওই চাকরি থেকে বরখাস্ত করার খবর এল।

জানা গেছে, দীর্ঘ আটমাস গুলশান ক্লাবে চাকরি করে আসা মেহনাজ শনিবার অফিসে আসেননি। ঢাকাটাইমসে সংবাদ প্রকাশের পর তাকে শুক্রবার মধ্যরাতেই বরখাস্ত করে চাকরিতে আসতে নিষেধ করে দেওয়া হয়।

গেল অক্টোবরে চাকরি নেওয়ার পর মেহনাজ গুলশান ক্লাবের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনারও দায়িত্ব পালন করেছেন। এমনকি তিনি বেশ দাপটের সঙ্গে ক্লাবে চলাফেরা করতেন।

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় দুই দফায় ছয় জনের ফাঁসি কার্যকর হলেও মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া রশিদসহ পাঁচ খুনি এখনো অধরা।

রশিদের মেয়ে মেহনাজ ২০০৯ সালে তৎকালীন ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে নূর তাপসকে হত্যাচেষ্টা মামলার অন্যতম আসামি।

একই বছরের অক্টোবরে এই মামলায় কারাগারেও যেতে হয়েছে তাকে। পরে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে দেশ ছেড়ে পাকিস্তানে পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি।

মেহনাজ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কুমিল্লা থেকে দুইবার সংসদ নির্বাচনও করেছেন। এছাড়া তার বাবা রশিদের দল ২০১৯ সালে নিবন্ধন হারানো ফ্রিডম পার্টির রাজনীতির সঙ্গেও তিনি জড়িত।

এদিকে বঙ্গবন্ধুর খুনির মেয়ের ক্লাবে চাকরি করার বিষয়টি জানাজানির পর সদস্যের মধ্যেও আলোচনা চলছে। প্রশ্ন উঠেছে, জাতির পিতার একজন আত্মস্বীকৃত খুনির মেয়েকে দেশের স্বনামধন্য একটি ক্লাব এভাবে জেনেশুনে চাকরি দিতে পারে কী না? এর পেছনে যাদের যোগসাজশ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থারও দাবি উঠেছে।

শনিবার দুপুরে ক্লাবটির হেল্প লাইনের কর্মকর্তা রিফাত ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘মেহনাজ ম্যাডাম ক্লাবে আসেননি। তিনি আর ক্লাবে নেই।।’ এরপর তিনি (রিফাত) তাহমিদ নামে একজনের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।

তাহমিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘উনি তো আর আমাদের সঙ্গে কর্মরত নেই। … উনি এখন ক্লাবে নেই, চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন।’

একইদিন রাতে গুলশান ক্লাবের সভাপতি রফিকুল আলম হেলাল ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘মেহনাজ বঙ্গবন্ধুর খুনি আবদুর রশিদের মেয়ে, এই পরিচয় জানার সঙ্গে সঙ্গে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। শনিবার তিনি অফিসে আসেননি।’

ঢাকাটাইমসের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, গত বছরের অক্টোবরে গুলশান ক্লাবে ডিজিএম এডমিন পদে চাকরি নেন খন্দকার মেহনাজ রশিদ। ক্লাবটির সাবেক সভাপতি সাইফুর রহমানের মেয়াদের শেষ সময়ে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

তবে বঙ্গবন্ধুর একজন খুনির মেয়ে উচ্চপদে চাকরি নিলেও ক্লাবটির সাবেক ও বর্তমান কমিটির কেউ তার চাকরির বিষয়ে প্রশ্ন তোলেননি। ফলে বীরদর্পেই মেহনাজ আটমাস ধরে সেখানে চাকরি করছেন।

গত বছর গুলশান ক্লাব থেকে ‘দি ক্লাব দি প্রেসিডেন্ট’ নামে একটি বই প্রকাশ হয়। এই প্রকাশনাটির সমন্বয়ের দায়িত্বও পালন করেন তিনি।

জাতির পিতার খুনির মেয়ে কীভাবে স্বনামধন্য অভিজাত ক্লাবে উচ্চপদে চাকরি নিয়েছে প্রশ্ন তুলেছেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন।

ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর উচিত খোঁজ খবর নেওয়া। এ ধরনের কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।’

(ঢাকাটাইমস/০৫জুন/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :