ইউরিক অ্যাসিড দূরে রাখবে যেসব ফল

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১২ জুন ২০২২, ১১:২৯

অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং খাদ্যাভাসের কারণে শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বাড়ে। বিশ্বের প্রায় সাড়ে ৪ কোটি মানুষ এই সমস্যায় কষ্ট পাচ্ছেন। প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়ার কারণে গাঁটের ব্যথায় শয্যাশায়ী হয়ে দিন কাটাচ্ছেন।

মানুষের দেহে অন্যতম উপাদান হচ্ছে ইউরিক অ্যাসিড। কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন দিয়ে তৈরি এই যৌগ আমাদের খাবার হজমে সহয়তা করে। শরীরের পিউরিন নামে অর্গান ইউরিক অ্যাসিড তৈরি করার মূল কারিগর। তবে শরীরের জন্য ইউরিক অ্যাসিডের যেমন ভালো দিক রয়েছে, তেমনি শরীরের ওপর এর বাজে প্রভাবও রয়েছে। তাই শরীরের ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি।

ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়ার কারণগুলো হচ্ছে অতিরিক্ত ওজন, অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান, পিউরিন অর্গানকে ভারী করে এমন খাবার খাওয়া, হাইপোথাইরয়েডিজম (থাইরয়েড গ্রন্থির কম হরমোন উৎপাদন), নির্দিষ্ট ডিউরেটিকস (ক্রমাগত কিডনির পানি ও লবণের পরিমাণ কমতে থাকা)।

এছাড়া অতিরিক্ত প্রোটিনও ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য দায়ী। রক্তে উচ্চমাত্রায় ইউরিক অ্যাসিড থাকাকে বলা হয় হাইপারুরিকেমিয়া। উচ্চমাত্রায় ইউরিক অ্যাসিডের ফলে বাতরোগের মতো রোগের আশঙ্কা দেখা দেয়।

শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের স্তর বৃদ্ধি পেলে গাউট রোগ দেখা দিতে পারে। এই রোগে গাঁটে ব্যথা হয়, ফোলা ভাব দেখা দেয় এবং উঠতে-বসতে অসুবিধা হয়। ইউরিক অ্যাসিড এক ধরনের কেমিক্যাল, যা পিউরিন নামক প্রোটিন ভেঙে উৎপন্ন হয়। ইউরিক অ্যাসিড কিডনি দ্বারা পরিশোধিত হয়ে প্রস্রাবের পথে বাইরে বেরিয়ে যায়। কিন্তু রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে কিডনিও একে নির্গত করতে পারে না।

শরীরের দূষিত রেচক হল এই ইউরিক অ্যাসিড। শরীরে পিউরিন ভেঙে তৈরি হয় ইউরিক অ্যাসিড। ইউরিক অ্যসিড রক্তে দ্রবীভূত হয়ে প্রস্রাবের সঙ্গে কিডনি দিয়ে যায়। কিন্তু অনেক সময় তা বেরোতে না পেরে রক্তেই জমা হতে শুরু করে।

রক্তে ইউরিক অ্যাসিড একবার বাড়তে শুরু করলেই জটিল হয় সমস্যা। শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে গেলে তখন তাকে বলা হয় হাইপারইউরিসেমিয়া। ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে তা গাঁটে জমে যায়। হাত-পায়ের জয়েন্ট ফুলে গিয়ে ব্যথা হয়। বেশি ব্যাথা হয় পায়ের পাতাতে। এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে জমতে থাকলে কিডনিতে পাথর হয়ে যায়।

ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায় হল পিউরিন সমৃদ্ধ খাবার কম খাওয়া। ইউরিক অ্যাসিডের জন্য ওষুধ চিকিৎসা তো আছেই। তবে তার আগেও বিশেষজ্ঞরা কিন্তু জোর দেন রোজকার ডায়েটে। প্রোটিন খাওয়ার উপর তৈরি হয় নিষেধাজ্ঞা।

ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে ডিমের কুসুম, মুসুর ডাল এবং খাসির মাংস খেতে একেবারেই মানা করা হয়। সেই সঙ্গে তালিকায় থাকে রাজমাও। তবে আমাদের দেশে ফলের অভাব নেই। সারা বছরই সুলভে প্রচুর পরিমাণে ফল পাওয়া যায়। আগেকার দিনে এই ফল খেয়েই মানুষ সুস্থ থাকতেন। তাই সস্তার কিছু ফল রাখুন প্রতিদিনের ডায়েটে। এই ফলই আপনার সমস্যার সুরাহা করবে, বাঁচাবে ওষুধের খরচ। সঙ্গে শরীরে দেবে পুষ্টিও।

আপেল

ইউরিক অ্যাসিডের সবচেয়ে ভাল ওষুধ হল আপেল। সম্প্রতি একটি সমীক্ষা থেকেই উঠে এসেছে এই তথ্য। আপেলের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার। এই ফাইবার রক্ত থেকে ইউরিক অ্যাসিড শোষণ করে নেয়। এছাড়াও থাকে ম্যালিক অ্যাসিড। যা ভিটামিন সি এর খুব ভাল উৎস। ার তাই রোজকার ডায়টে আপেল রাখতে ভুলবেন না।

সাইট্রাস ফল ইউরিক অ্যাসিড কমায়

ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে লেবু, আঙুর, আনারস, মুসাম্বির মত ফল প্রতিদিন খান। এর মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি। যা রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমায়। বাতের ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে। তবে যদি রাতে কোলচিসিন ওষুধ খান তাহলে সকালে লেবু না খাওয়াই ভাল। এতে ওষুধের কার্যকারিতা কমবে। সেই সঙ্গে গরম পানিতে লেবু দিয়েও খাবেন না।

ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার

ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে প্রতিদিনের তালিকায় অবশ্যই রাখবেন ভিটামিন ই। ভিটামিন ই সমৃদ্ধ ফল হল অ্যাভোগাডো। তবে তা সবসময় হাতের সামনে পাওয়া যায় না। পরিবর্তে সূর্যমুখীর বীজ, আমন্ড এসব খান। খেতে পারেন সবেদাও। এতে কিন্তু ব্যথা, প্রদাহ কমে। পা ফোলার সমস্যাতেও ভাল কাজ করে।

কলা খান

ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভূমিকা আছে কলারও। কলার মধ্যে আছে পটাশিয়াম। এছাড়াও কলাতে পিউরিনের পরিমাণ কম। আর তাই রোজ একটা করে কলা খেলেও ইউরিক অ্যাসিড থাকে মাত্রার মধ্যে।

চেরি

চেরি ফল এখন আমাদের দেশেও পাওয়া যায়। অনেকে বাড়িতে চাষও করছেন। লাল রঙের চেরি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। সেই সঙ্গে চেরিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি। আর তাই চেরি খেতে পারলেও কিন্তু অনেক উপকার পাবেন।

(ঢাকাটাইমস/১২ জুন/আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :