পারবেন তো হাবিবুল আউয়াল?

হাবিবুল্লাহ ফাহাদ, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৫ জুন ২০২২, ১১:৫৩ | প্রকাশিত : ১৫ জুন ২০২২, ১১:৫০

পারবেন তো কাজী হাবিবুল আউয়াল? প্রধান নির্বাচন কমিশনারের চেয়ারে আরাম করে বসার আগেই কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ভোট এলো দুয়ারে। শুরু হলো ভোটের ঢামাডোল। কিছুটা ঝক্কিও পোহাতে হচ্ছে নতুন কমিশনকে। কুমিল্লার ভোটের প্রচারের শুরুতেই আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য, প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারকে নিয়ে কিছুটা বিপাকেই পড়তে হচ্ছে তাদের।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে শুরুতে সতর্ক করা হয় বাহারকে। কাজ হয়নি তাতে। নির্বাচনী আচরণবিধি ভেঙে প্রচারণায় অংশ নেন তিনি। এরপর এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয় তাকে। এতেও ক্ষান্ত হননি বাহার। উল্টো গেছেন উচ্চ আদালতে। তাকে নির্বাচনের প্রচারে সুযোগ না দেওয়া কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। বাহার বহাল থেকেছেন এলাকাতেই। সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালকে প্রশ্ন করা হলে প্রকাশ করেন অসহায়ত্ব। বলেন, ‘বাহাউদ্দিন বাহার এলাকা না ছাড়লে নির্বাচন কমিশনের আর তেমন কিছু করার নেই।’

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট চলছে বুধবার সকাল ৮টা থেকে। এখন পর্যন্ত অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি সেখানে। তিন প্রার্থীই মোটাদাগে সন্তুষ্ট। কেবল ইভিএমে ভোটগ্রহণের ধীরগতির অভিযোগ করেছেন মনিরুল হক সাক্কু। তিনি এবার লড়ছেন টেবিল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে। গত দুবার নগরপিতা নির্বাচনে জয়ের মালা পরেন বিএনপির এই নেতা। যদিও ২০১২ সালে প্রথমবার বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় তিনি দল থেকে পদত্যাগ করে নাগরিক সমাজের ব্যানারে ভোটে অংশ নেন। ২০১৭ সালে দ্বিতীয়বারের নির্বাচনে তিনি ধানের শীষেই ভোটে লড়েন। তবে সেবার শপথ গ্রহণ করতে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পা ছুঁয়ে সালাম করায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এর পর থেকে দলীয় কর্মকাণ্ডে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন মনিরুল হক। পরে গত বছরের অক্টোবরে তাকে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যপদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এর পর গত ১৯ মে আজীবনের জন্য বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হন মনিরুল হক সাক্কু।

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নতুন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জন্য অগ্নিপরীক্ষা, বলছেন সংশ্লিষ্টরা। শান্তিপূর্ণ ভোটের নজির রাখার সুযোগও আছে এই নির্বাচনে। রাজনৈতিক দলগুলো অবশ্য এরই মধ্যে বাহার ইস্যুতে ইসির অপারগতার বিষয়টি আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছেন। তবে কঠিন কোনো সমালোচনায় যাচ্ছেন না তারা। অপেক্ষা করছেন ভোট শেষ পর্যন্ত কেমন হয়, সেটা দেখার জন্য।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অবশ্য মঙ্গলবার ঠাকুরগাঁওয়ে এক মতবিনিময় সভায় বলেছেন, ‘নিরপেক্ষ সরকার না থাকলে কোনো নির্বাচন কমিশনই কিছুই করতে পারবে না। তার অভিযোগ, দলীয় সরকারের অধীনে স্বাধীনভাবে ইসি কাজ করতে পারবে না।’

আবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি আগেও বলেছিলাম এই নির্বাচন কমিশন হচ্ছে আওয়ামী লীগের কিচেন কমিশন। এটা আবার প্রমাণিত হলো, এরা আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের মতো কাজ করছে।’

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ওপর যে অনেক দায়িত্ব, এ কথা আরও পরিষ্কার করে বলার কিছু নেই বলে মনে করেন নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠকেও এই বিষয়টি উঠে এসেছে। সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের দিকেই গুরুত্ব দিয়েছেন সবাই। সর্বশেষ প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে যিনি মেয়াদপূর্ণ করেছেন সেই কে এম নূরুল হুদাও বলেছেন, ‘বিএনপিকে বাদ দিয়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে না।’ যদিও তার মেয়াদকালে ইসির ভূমিকা নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন আছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে।

কুমিল্লা সিটি নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের প্রচেষ্টাও কম নয়। এ জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও নিয়েছে কমিশন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও আছে সতর্ক অবস্থানে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে চান তারা। এখন অপেক্ষা করতে হবে বিকাল ৪টায় ভোট শেষ হওযা পর্যন্ত। তারপর গণনায় খুলবে নতুন নগরপিতার ভাগ্য।

(ঢাকাটাইমস/১৫জুন/এইচএফ/এফএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :