একটি নিরাপদ আশ্রয় চান অসহায় শহিদুল-কারিমা দম্পতি

প্রকাশ | ১৫ জুন ২০২২, ১৫:২১

নুর আলম বাবু, নীলফামারী

দিন মজুর শহিদুল। কাক ডাকা ভোরে সংসারের চাহিদা মেটাতে বের হন রিকশা নিয়ে, সারা দিন পরিশ্রম করেন। রোদ হোক আর বৃষ্টি হোক প্রতিটি দিন দুশ্চিন্তায় কাটাতে হয় তাকে। মাথা গোঁজার নিরাপদ আশ্রয়স্থল নেই তার। অন্যের জমিতে ঘর তৈরি করে স্ত্রী-সন্তান  নিয়ে জোড়াতালি দেয়া ভাঙাচোরা ঘরে বসবাস করেন তিনি। নেই খাবারের কিংবা অসুখে চিকিৎসার নিশ্চয়তা। তিনি সৈয়দপুর উপজেলার খোদ্দবোতলাগাড়ী ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ড কিসামত কাদিখোল জেলেপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শহিদুল (৩৫) তার স্ত্রী কারিমার (২৬) বসতঘর ভাঙা বেড়া, মরিচা ধরে ঝরঝরে হয়ে গেছে গোটা ঘরের চালের টিন। টিনে তৈরি হয়েছে হাজারো ফুটো। আর তাতেই সামান্য বৃষ্টিতে ভিজে যায় ঘরের বিছানাপত্রসহ সবকিছু। দীর্ঘদিন মেরামতের অভাবে ঘরের কাঠামোর অবস্থা এতটাই জরাজীর্ণ যে যেকোনো সময় ঘরটি ভেঙে পড়তে পারে। তাদের বসতঘরের বর্তমান অবস্থা দেখে এটিকে ঘর না বলে বলা চলে মৃত্যু ফাঁদ।

শহিদুল বলেন, স্ত্রী /ছেলে নিয়ে ৩ সদস্যের পরিবার। আমার কোনো জমিজমা নাই। জমা রিকশা চালিয়ে পরিবারের সকলের খরচ জোগাতে হয়। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের যে দাম তাতে নুন আনতে পান্তা ফুরানো অবস্থা। অন্যের জমিতে বসবাস করি, জমির মালিক অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য বারবার বলেন, ধার দেনা করে ঘর মেরামত করার ইচ্ছা থাকলেও জমির মালিকের অনুমতি ছাড়া করতে পারি না। ঘরের চাল, বেড়া খুলে খুলে পড়ে যাচ্ছে, দুই মানুষ এই ভাঙা ঘরে বসবাস করছি। 

শহিদুল স্ত্রী কারিমা বলেন, ভাঙা ঘরে থাকতে আমাদের খুব কষ্ট হচ্ছে। রাতে একটু বৃষ্টি হলেই বিছানাপত্র গুটিয়ে বসে রাত কাটাতে হয়। ঘর বৃষ্টির পানিতে ভিজে যায়। ভাঙা বেড়ার ফাঁক দিয়ে প্রায়ই কুকুর বেড়াল ঘরে ঢোকে। একটু বাতাস হলেই ঘরের চাল দুলতে থাকে। আমরা সারাক্ষণ ঘরের নিচে চাপা পড়ার ভয়ে থাকি। প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পে একটি ঘরেরে জন্য আবেদন করেছি কিন্তু ঘর পাইনি । আমরা নিরাপদ একটা মাথা গোঁজার ঠাঁই চাই।

স্থানীয় আব্দুল রাজ্জাক বলেন, শহিদুল ও তার স্ত্রী বর্তমানে চরম ভোগান্তির শিকার। রোদ বৃষ্টিতে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে এখন এই বসতঘরটি মেরামতের জন্য জনপ্রতিনিধি ও বিত্তবানদের সহযোগিতার কোনো বিকল্প নাই।

(ঢাকাটাইমস/১৫জুন/এআর)