বাবুগঞ্জে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, স্বামী আটক

বরিশাল ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৬ জুন ২০২২, ২১:৫১

বরিশালের বাবুগঞ্জে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। ঘটনার পরপরই ঘাতক স্বামী মো. নান্টু সিকদারকে গ্রেপ্তার ক‌রে‌ছে পুলিশ।

বুধবার রা‌তে বাবুগঞ্জ উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণদিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

হত্যার ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপু‌রে নিহতের বড় ভাই মো. নূরে আলম বাদী হয়ে বাবুগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাবুগঞ্জ থানার ওসি মো. মাহাবুবুর রহমান।

নিহত মাহমুদা বেগম (২২) পার্শ্ববর্তী গৌরনদী থানার শরিকল ইউনিয়নের কুরিরচর গ্রামের খলিলুর রহমানের মেয়ে।

নিহতের স্বজন ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাত ১১টার দিকে নান্টু সিকদার আকস্মিক দা দিয়ে মাহমুদাকে কোপাতে শুরু করে। এ সময় মাহমুদা ডাকচিৎকার দিয়ে ঘরের বাইরে পালানোর চেষ্টা করে। চিৎকার শুনে মাহমুদার শ্বশুর চানমদ্দিন সিকদার এগিয়ে আসলে তাকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন নান্টু সিকদার। পরে মাহমুদার ভাসুর মিন্টু সিকদার এগিয়ে আসলে তাকেও কুপিয়ে আহত করেন নান্টু সিকদার।

স্বজনরা জানান, স্বামীর হাত থেকে বাঁচতে বাড়ির পাশে একটি বাগানে দৌড়ে পালান মাহমুদা বেগম। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি তার। সেখানে গিয়েও উপুর্যপুরি কুপিয়ে হত্যা করেন স্বামী নান্টু সিকদার। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নান্টু সিকদারকে আটক করেন এবং হত্যায় ব্যবহৃত দা উদ্ধার করে পু‌লিশ।

নিহতের ভাই নূ‌রে আলম ব‌লেন, বাবুগঞ্জ উপজেলার জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণদিয়া এলাকার চানমদ্দিন সিকদারের ছেলে নান্টু সিকদার (২৮) এর সাথে পার্শ্ববর্তী গৌরনদী উপ‌জেলার সরিকল ইউনিয়নের কুরিরচর গ্রামের মো. খলিলুর রহমানের মেয়ে মাহমুদা বেগমের সঙ্গে ৫/৬ বছর আগে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বিবাহের পরে তাদের দাম্পত্য জীবন ভালোভাবেই চলছিল। বিয়ের কয়েক বছর পরে স্বামী নান্টু সিকদার ঠিকমতো কাজ না করায় সংসারে অভাব অনটন দেখা দেয়। তারই ধারাবাহিকতায় গত এক সপ্তাহ আগে মাহমুদা বেগম তার বাবার বাড়িতে চলে যান। বাবার বাড়িতে যাওয়ার কয়েকদিন পরে স্বামী নান্টু সিকদারও শ্বশুর বা‌ড়ি যান।দুদিন পরে স্ত্রীকে নিয়ে নিজ বা‌ড়ি‌তে চ‌লে আ‌সে নান্টু।

নান্টু সিকদারের ভাই পিন্টু সিকদার জানান, কিছুদিন আগে মাহমুদা বেগমকে গলাটিপে হত্যার চেষ্টা চালায় নান্টু। এরপর মাহমুদা বাপের বাড়িতে চলে যায়। বুধবার বিকালে তিনি স্বামীর বাড়িতে ফিরে আসেন। রাতেই তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন স্বামীর নৃশংসতার শিকার হন।

জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য রব বেপারী জানান, খবর পেয়ে আগরপুর ক্যাম্প পুলিশ ও গ্রামবাসী ওই বাড়িতে ছুটে গেলে নান্টু সিকদার তাদেরও দা নিয়ে তেড়ে আসে। একপর্যায়ে ধাওয়া দিলে সে বাগানের ভেতরে দৌড়াতে থাকে। পুলিশ ও গ্রামবাসী ধাওয়া করে নান্টুকে আটক করেছে। নান্টু দীর্ঘদিন যাবত মানসিক রোগী। তাকে পরিবার থেকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল।

বাবুগঞ্জ থানার ওসি মো. মাহাবুবুর রহমান জানান, পারিবারিক কলহ, সন্তান না হওয়া এবং কাজকর্ম না করায় মানসিকভাবে অসহায় হয়ে পড়ার কারণে এই হত্যাকাণ্ড হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় আসামিকে রাতেই আটক করা হয়েছে এবং তাকে দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৬জুন/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :