এক আম ২ হাজার টাকা!

প্রকাশ | ১৯ জুন ২০২২, ০৮:১৯ | আপডেট: ১৯ জুন ২০২২, ১৫:২৬

শেখ সাইফ, ঢাকাটাইমস

একটি আমের দাম দুই হাজার টাকা। ব্রুনাই কিং নামের এই আমের ফলন হয়েছে মাগুরায়। রাজধানী কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটে শুরু হয়েছে তিন দিনের ফল মেলা। এই ফল মেলায় আনা হয়েছে এটি। দেশে চাষ হচ্ছে এমন দেশি-বিদেশি ফল আনা হয়েছে এবারের ফল মেলায়।

ফল মেলায় ঢুকলেই যেন মনে হবে কোনো এক বিশাল ফলের রাজ্যে আমি এসে পড়েছি। চারিদিকে শুধু ফল আর ফল। মেলায় আগত ক্রেতা দর্শনার্থীরা ঘুরে ঘুরে ফল দেখছেন। কিনছেন। আবার ছবিও তুলছেন। অনেকে তো ফলের সঙ্গে সেলফি তুলতে ব্যস্ত। কেউ পান করছেন তরতাজা ফলের জুস-শরবত।

ফল মেলার প্রধান আকর্ষণ ব্রুনাই কিং আম। নামে আম হলেও দেখতে অনেকটা পেঁপের মতো। এক একটির ওজন পাঁচ কেজি। দাম দুই হাজার টাকা। বিশ্বের সবচেয়ে দামি জাপানি আম মিয়াজাকি বা সূর্যডিম। যার ফলন এখন হচ্ছে বাংলাদেশে। পালমার, থাই জাম্বুরা, টিক্কা ফরাস এমন সব অদ্ভুদ নামের একশ প্রজাতির আম এবার আনা হয়েছে কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটের ফল মেলায়।

'বছরব্যাপী ফল চাষে অর্থ পুষ্টি দুই-ই আসে' স্লোগানে তিন দিনের এবারের জাতীয় ফল মেলা-২০২২ শেষ হবে ১৯ জুন, রবিবার।

ফল মেলা সম্পর্কে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক, হার্টিকালচার উইং  ডা. শামীম আহমেদ বলেন, আমাদের কৃষি জমি আর বাড়ছে না। এজন্য নতুন নতুন উচ্চ ফলনশীল যে জাতগুলো আসবে সেগুলো আমরা প্রতিস্থাপন করব। এটিই আসলে মেলার উদ্দেশ্য। পুষ্টির চাহিদাও মিটবে সেই সঙ্গে কৃষক উৎপাদন করে অর্থনৈতিকভাবেও লাভবান হবে। এই দুটি বার্তা সব নাগরিক পর্যায়ে যায় সেটাই আমাদের চেষ্টা। এছাড়া আমাদের রপ্তানি আয় বৃদ্ধি করাও এই মেলার উদ্দেশ্য। এর জন্য আমাদের যে উচ্চ মূল্যের উৎপাদনশীল ফল আছে। সেগুলো ইউরোপ আমেরিকার বাজারে যাবে। এরজন্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও বিপণনের ক্ষেত্র তৈরি করার চেষ্টা করা হবে।  

আম ছাড়াও মেলায় আছে ৩৯ কেজি ওজনের কাঁঠাল, কলা, পেয়ারা, করমচা, ডুমুর,শরিফা, বিলাতী গাব, চাপলিশ, বিলিম্বি, গোলফল, প্যাশন,  সফেদা, খেজুর, ড্রাগন ফল, লিচু, কফি, কাজুবাদাম প্রভৃতি।

এছাড়া ফলজ গাছের চাষ, পরিচর্যা ও রোগ বালাই দমন বিষয়ক বইপত্র আনা হয়েছে। মেলায় পাওয়া যাচ্ছে ডিম ও শামুকের খোলস দিয়ে তৈরি অর্গানিক স্যানিটাইজার, ডাবের শাসের পুডিং, পাটের তৈরি পণ্য সামগ্রী প্রভৃতি।

মেলার দর্শনার্থী ও ক্রেতা আসমা হোসেন বলেন, আমাদের দেশীয় ফল। অনেক জাতের অনেক ধরণের এখানে দেখতে পাচ্ছি। নতুন ফলের সঙ্গে পরিচয় ঘটছে। খুব ভালো উদ্যোগ এই ফল মেলা।

বাবার সঙ্গে আসা ক্ষুদে দর্শনার্থী সিয়াম আহনাফ জানান, অনেক আম এখানে। দেখতে খুব ভালো লাগছে। আমরা আম কিনেছি।

আসমা নামে এক নারী উদ্যোক্তা বলেন, ফল দিয়ে বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী তৈরি করা হচ্ছে। এটা একেবারেই নতুন। মেলাতে ভালো সাড়া পাচ্ছি। এসব খাবারে ক্রেতাদের আগ্রহও বেশ।  দেখা যায় তিনি কাঁচা কাটালের তৈরি ১৫ টাকা দামের সিঙ্গারা ও সমুচা এবং ৪০ টাকা দামের রোল বিক্রি করছেন। পাশাপাশি কাঁচা কাঠাল সংরক্ষণের ব্যবস্থাও জানাচ্ছেন।   

জাতীয় ফল মেলার ৮৫টি স্টলে ফল ছাড়াও বিভিন্ন পদের মধু, ফলের আচার, জ্যাম, জেলি, শরবত, পিঠা ইত্যাদি বিক্রি করা হচ্ছে। ১৮ জুন মেলার দরজা বন্ধ হওয়ার কথা থাকলেও তা বাড়িয়ে ১৯ তারিখ করা হয়েছে।    

(ঢাকাটাইমস/১৯জুন/এসকেএস)