চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ-রায়পুর সড়ক বেহাল, ৫০ হাজার মানুষের দুর্ভোগ

শওকত আলী, চাঁদপুর
 | প্রকাশিত : ১৯ জুন ২০২২, ১২:৫৩

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ-রায়পুর সড়কের বেহাল দশা। এলাকার ৫০ হাজার মানুষ প্রতিদিন এ সড়কে যাতায়ত করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। প্রায় ১৫ বছর কোনো সংস্কার কাজ না হওয়ায় চলাচলের একমাত্র সড়কটি অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কের বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বেশিরভাগ অংশে পিচঢালাই উঠে কাঁচা সড়কে পরিণত হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলে গর্তে জমছে পানি। ফলে প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সীমান্তবর্তী এলাকার রাস্তা হওয়ায় গুরুত্ব দিচ্ছেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ বলছে, দ্রুতই সংস্কার কাজ শুরু হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বিরামপুর বাজার থেকে শুরু হয়ে পাশের রায়পুর উপজেলার সোলাখালী ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার রাস্তাটি ২০০৩-৪ সালে নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের পর ছয়-সাত বছর রাস্তাটির অবস্থা ভালো থাকলেও পরবর্তীতে তা ধীরে ধীরে নষ্ট হতে শুরু করে। নির্মাণের প্রায় ২০ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো রাস্তাটির কোনো সংস্কার কাজ হয়নি। যদিও তিন বছর আগে সংস্কারের জন্য কাজ চালু হলেও অজানা কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়।

এতে চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন উপজেলার পাশাপাশি অবস্থিত গবিন্ধ্যপুর ইউনিয়ন, চরদুঃখিয়া ইউনিয়ন ও পশ্চিম চরদুঃখিয়া ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। সড়কটি ছাড়া আর কোনো যাতায়াতের রাস্তা নেই এ এলাকাবাসীর। এ সড়কে যাতায়াত করলে প্রতিদিনই যান মেরামতের প্রয়োজন পড়ছে বলে দাবি চালকদের।

স্থানীয়রা জানান, বাস-ট্রাক-সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ প্রতিদিন প্রায় এক হাজার যানবাহন চলাচল করে এ সড়কটি দিয়ে। বৃষ্টি এবং রোদ দুই সময়েই এ রাস্তায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। অতিরিক্ত রোদে ধুলাবালুর জন্য চলাচল করা যায় না। আর বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই। কাদামাটিতে একাকার হয়ে যায় সড়কটির অবস্থা। এতে দুর্ঘটনারও আশঙ্কা বেড়ে যায় প্রতিনিয়ত।

স্থানীয় বাসিন্দা রাকিবুল, শরীফ, হাসেম গাজীসহ বেশ কয়েকজন বলেন, ‘আমাদের যে কোনো কাজে রায়পুর বাজারে যেতে হয়। এছাড়া আশেপাশের তিন ইউনিয়নের রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য এ রাস্তা ব্যবহার করে রায়পুর যেতে হয়। গত কয়েক বছরে রাস্তার পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার কারণে গর্ভবতী নারীদের নিয়ে যাওয়া অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর আগে রাস্তার কারণে তিনজন প্রসূতির ডেলিভারি গাড়িতেই হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে।’

ওই রাস্তায় চলাচলকারী অটোরিকশাচালক জহির মিজি, সামছুল আলমসহ বেশ কয়েকজন বলেন, ‘এ রাস্তায় গাড়ি চালাতে হয় বাধ্য হয়ে। নিজেদের পরিচিতজনরা যেতে চাইলে না নিয়ে পারি না। কিন্তু আমরা এ সড়কে গাড়ি চালাতে আগ্রহী নই। কারণ ২০০ টাকার ভাড়ার গাড়ি চালিয়ে আমাদের অনেক সময় দেড়-দুই হাজার টাকা দিয়ে গাড়ির মেরামত কাজ করাতে হয়। এছাড়া অসুস্থ রোগীদের নিয়ে এ সড়কে যাতায়াত করা কষ্টকর।’

রাস্তার বিষয়ে চরদুঃখিয়া (পশ্চিম) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহাজাহান মাস্টার বলেন, ‘সড়কটি আজকে প্রায় ৮-১০ বছর ব্যবহার অনুপযোগী। রাস্তাটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বিভিন্নভাবে আমি যোগাযোগ করছি। পাশাপাশি আমাদের মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়টি জানিয়েছি। আমাকে আশ্বস্ত করা হয়েছে রাস্তার টেন্ডার হয়েছে। তবে টেন্ডার প্রক্রিয়ার কোনো অগ্রগতি এখনো দেখিনি। আমি যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যাতে দ্রুত রাস্তাটি সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’

এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আবরার আহাম্মদ বলেন, রাস্তাটি সংস্কারের জন্য এরই মধ্যে ৩ কোটি ৮৩ লাখ ৫৬ হাজার ৯১৬ টাকার প্রকল্প পাস হয়েছে। এরই মধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে এবং দ্রুতই রাস্তাটি সংস্কারের কাজ শুরু হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৯জুন/এলএ/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :