লালমনিরহাটে হচ্ছে দেশের প্রথম পুলিশ জাদুঘর

মাজহারুল ইসলাম বিপু, লালমনিরহাট
 | প্রকাশিত : ২১ জুন ২০২২, ১০:৪৮

উত্তরের সীমান্তবর্তী ছোট্ট একটি জেলার নাম লালমনিরহাট। চারিদিকে ছোট বড় বেশ কয়েকটি নদী দিয়ে ঘেরা জেলাটি। জেলাটির ঠিক উত্তরে ভারতের সীমান্ত। সেখানেও রয়েছে ধরলা নামে আরও একটি নদী। এক কথায় জেলাটির চারদিকেই নদী আর নদী। সেই ছোট লালমনিরহাট জেলাতেই আর একদিন পর উদ্বোধন হতে যাচ্ছে দেশের প্রথম বাংলাদেশ পুলিশ জাদুঘর।

বুধবার লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা থানা চত্বরেই জাদুঘরটির উদ্বোধন যাচ্ছেন বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি বেনজির আহমেদ।

১৯১৬ সালে নির্মিত একটি পাকা পরিত্যাক্ত প্রাচীন এই ভবনের ঐতিহ্য রক্ষার্থে এই ভবনে জাদুঘরটি হচ্ছে। ১০০ বছরের পুরনো এই ঐতিহাসিক এ ভবনকে জাদুঘরে রূপান্তর করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন লালমনিরহাট জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) আবিদা সুলতানা।

২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারি লালমনিরহাট জেলায় পুলিশ সুপার হিসেবে যোগ দেন আবিদা সুলতানা। জাদুঘর নির্মাণে পূর্বের কিছু অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানার হাতীবান্ধা থানার পরিত্যক্ত পাকা ভবনে বাংলাদেশ পুলিশ জাদুঘর স্থাপনের কাজ হাতে নেন।

ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পুলিশ জাদুঘর লালমনিরহাটের কাজ সম্পন্ন। ২২ জুন জাদুঘরটির উদ্বোধন হবে বলে লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।

তার কাছ থেকে জানা গেল জাদুঘরের বৃত্তান্ত। বাংলাদেশ পুলিশ জাদুঘর লালমনিরহাটে মোট সাতটি গ্যালারি থাকছে। প্রতিটি গ্যালারিতে রাখা নিদর্শনগুলো দর্শক ও গবেষকদের সামনে তুলে ধরতে কাচের আবরণ ও আলোর ব্যবস্থা থাকবে।

গ্যালারিগুলোতে সুলতানি আমল ও মোগল আমল, ব্রিটিশ আমল, ভারতীয় উপমহাদেশে পুলিশের উদ্ভব ও বিকাশ নিখুঁতভাবে তুলে ধরা হচ্ছে। গ্যালারি দুইয়ে এ থাকছে ব্রিটিশ আমল, আধুনিক পুলিশের যাত্রা। তিন নম্বর গ্যালারিতে রয়েছে স্বাধীনতাযুদ্ধ, ভারতীয় উপমহাদেশ ও বাংলাদেশ স্বাধীনতাযুদ্ধে পুলিশ।

গ্যালারি চারে রয়েছে ডার্করুম, গ্যালারি। পাঁচে রয়েছে মুক্তাঞ্চলে মুক্তি পুলিশ। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকালে ৬ নম্বর সেক্টরের হেডকোয়ার্টার ছিল লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে। সে সময় গঠন করা হয়েছিল মুক্তাঞ্চলের মুক্তি পুলিশ। তাদের সে সময়ের কর্মকাণ্ড তুলে ধরাসহ কিছু নিদর্শন থাকছে এই গ্যালারিতে।

গ্যালারি ছয়ে আছে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী। গ্যালারি সাতে বাংলাদেশ পুলিশ গ্যালারি, আধুনিক সময়কাল।

হাতীবান্ধা উপজেলার সুশীল সমাজ ও জনগণ জানান, হাতীবান্ধা থানার পুরাতন, পরিত্যাক্ত এ ভবনটিকে জাদুঘরে রুপান্তরিত করা কখনই সহজ ছিল না। পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা ও হাতীবান্ধা থানার ওসি এরশাদুল আলমের পরিশ্রমের ফসল বাংলাদেশ পুলিশ জাদুঘর। আমরা হাতীবান্ধাবাসী দেশের প্রথম বাংলাদেশ পুলিশ জাদুঘরটি পেয়ে আনন্দিত ও গর্বিত।

পুলিশ সুপার আবিদা সুলাতানা জানান, দুই বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম, আমার পুলিশ সদস্য ও জেলাবাসীর সহযোগিতায় ইতোমধ্যে দেশের প্রথম পুলিশ জাদুঘর তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে।এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা। অনেক ব্যস্ততার মাঝেও আমাদের আইজিপি স্যার বেনজির আহমেদ ২২ জুন লালমনিরহাটে আসছেন এবং সেই দিনেই জেলার হাতীবান্ধা উপজেলায় জেলাবাসী তথা সমগ্র জেলাবাসীর জন্য আমাদের এই পুলিশ জাদুঘরটি উদ্বোধন করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/২১জুন/এলএ/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :