ডাকঘর ডিজিটাইজেশনের পথনকশা তৈরি হচ্ছে: মোস্তাফা জব্বার

প্রকাশ | ২১ জুন ২০২২, ১৩:৩৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ‘ডিজিটাল বাণিজ‌্যের সহায়ক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ডাকঘর ডিজিটাল করা অপরিহার্য। ডিজিটাল যুগের উপযোগী ডাক ব‌্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় ডাকঘর ডিজিটাইজেশনের পথনকশা তৈরি সম্পন্ন হচ্ছে। ডাক ব্যবস্থাকে ডিজিটাইজ করার পাশাপাশি কর্মরত ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীকেও ডিজিটাল দক্ষতা প্রদানের মাধ‌্যমে ডাকঘর ডিজিটাল করার কাজ আমরা শুরু করেছি।’

চিঠি আদান-প্রদান যুগীয় ডাক ব‌্যবস্থা অচল হয়ে গেলেও জনগণের দোরগোড়ায় ডকুমেন্টসহ বিভিন্ন পণ‌্য ডেলিভারির বিশাল চাহিদা পূরণে ডাকঘরকে উপযোগী করার চলমান কর্মসূচি সফল করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সেবার মনোভাব নিয়ে আরও নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান মন্ত্রী।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী সোমবার রাতে ঢাকা জিপিও মিলনায়তনে আয়োজিত ডাক অধিদপ্তরের বিদায়ী মহাপরিচালক মো. সিরাজ উদ্দিনের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।  

অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মো. খলিলুর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। 

ডাক অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হারুন উর রশীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত মহাপরিচালক রিয়াজুল ইসলাম, সাবেক পোস্ট মাস্টার জেনারেল বাহিজা আক্তার, খুলনা রেঞ্জের পিএমজি মো. শামসুল আলম এবং ডাক অধিদপ্তরের পরিচালক এসএম হারুনুর রশিদ প্রমুখ বক্তৃতা করেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুব-উল-আলম এতে উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বড় চ‌্যালেঞ্জ ছিল চিঠিপত্রের যুগ শেষ হওয়ায় দুর্দশাগ্রস্ত ডাক সার্ভিসকে একটা ভালো অবস্থানে নিয়ে যাওয়া। আমরা ইতোমধ‌্যে সেটা পেরেছি। ই-কমার্সের জন‌্য ডাকঘর এখন একটা নির্ভরযোগ‌্য প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।’

দেশব‌্যাপী ডাকঘরের যে  বিশাল অবকাঠামো ও জনবল আছে তা দেশের অন‌্যকোনো প্রতিষ্ঠানের নেই উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘হিমায়িত খাবার থেকে শুরু করে নিত‌্য প্রয়োজনীয় পণ‌্য প্রত‌্যন্ত ও দুর্গম এলাকায় ক্রেতার হাতে পৌঁছে দিতে ডাকঘরের বিকল্প নেই।’

করোনাকালে কৃষকের ফল, সবজি পরিবহন থেকে শুরু করে চিকিৎসা সরঞ্জাম পৌঁছে দিতে ডাক সেবার অবদান তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘জরুরি সেবার আওতায় ডাকঘর একদিনের জন‌্যও বন্ধ রাখা হয়নি।’

মন্ত্রী ডাক ব‌্যবস্থার উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৃহীত বিভিন্ন উদ‌্যোগের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘ডাকঘরকে ডিজিটাল যুগের উপযোগী করে গড়ে তুলতে প্রণীত ডিজিটাল সার্ভিস ডিজাইন ল্যাবের (ডিএসডিএল) প্রস্তাব ডিজিটাল ডাকঘর প্রতিষ্ঠায় একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক। এর ফলে উৎপাদনমুখী কর্মকাকাণ্ডের ডিজিটালাইজেশনের ভিত তৈরি হয়েছে।’

ডাক বিভাগের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের নিয়ে তৈরি করা এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সহসাই ডাকসেবা কাঙ্খিত মানে উন্নীত হবে বলে দৃঢ় আশাবাদ প্রকাশ করেন মন্ত্রী। 

ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত মোস্তাফা জব্বার ডাকঘর ডিজিটাইজ করার উদ‌্যোগ বাস্তবায়নে বিদায়ী মহাপরিচালক সিরাজ উদ্দিনের ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি আশা করেন, পরবর্তী মহাপরিচালক বিদায়ী মহাপরিচালকের কাজগুলোকে সফলতার সঙ্গে এগিয়ে নেবেন।

তিনি সিরাজ উদ্দিনের সুস্বাস্থ‌্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ডাকঘরকে ডিজটাল করার মাধ‌্যমে একটি উন্নত ডাকসেবা প্রতিষ্ঠায় গৃহীত কর্মপরিকল্পনা সফলতার সঙ্গে এগিয়ে নিতে সংশ্লিষ্টদের নিরলসভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান। তিনি বিদায়ী মহাপরিচালকের কর্মপ্রচেষ্টার প্রশংসা করেন এবং তিনি তার সুস্বাস্থ‌্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।

বিদায়ী মহাপরিচালক তার দীর্ঘ চাকরি জীবনের উল্লেখযোগ‌্য কিছু স্মৃতি ব‌্যক্ত করেন। তিনি তার মহাপরিচালকের দায়িত্বকালীন সময়ে ডাকঘরকে ডিজিটাল করতে একজন প্রকৃত অভিভাবক হিসেবে মন্ত্রীর দূরদৃষ্টি সম্পন্ন চিন্তা এবং তার আলোকে গৃহীত কর্মসূচির প্রশংসা করেন। 

(ঢাকাটাইমস/২১জুন/এফএ)