অভিনেত্রী দিলারা জামান সম্পর্কে কতটুকু জানেন?

প্রকাশ | ২২ জুন ২০২২, ১১:১৫ | আপডেট: ২২ জুন ২০২২, ১১:২২

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বাংলাদেশের একজন খ্যাতিমান অভিনেত্রী দিলারা জামান। কাজ করেন নাটক এবং চলচ্চিত্রে। তার পরিচিতি দেশব্যাপী। অর্থাৎ, আট থেকে আশি- সব প্রজন্মের কাছেই একটা সুপরিচিত মুখ দিলারা জামান। পরিচিত হলে এই অভিনেত্রী আগে কী করতেন, কীভাবে অভিনয়ে আসলেন, এছাড়া তার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন সম্পর্কে অনেক কিছুই হয়তো অনেকের অজানা। চলুন তবে জেনে আসি।

দিলারা জামান ১৯৪৩ সালের ১৯ জুন তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান পশ্চিমবঙ্গ) বর্ধমান জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম রফিকউদ্দিন আহমেদ এবং মাতার নাম সিতারা বেগম। জন্মের কিছুদিন পরে তার পরিবার আসানসোল জেলায় চলে যান। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর তারা বাংলাদেশের যশোর জেলায় চলে আসেন।

অভিনেত্রী পড়াশোনা করেন ঢাকার বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। স্কুলজীবনেই তিনি প্রথম মঞ্চ নাটকে অভিনয় করেন। পরে ইডেন মহিলা কলেজে ভর্তি হন। পড়াশোনা শেষ করে কর্মজীবন শুরু করেন শিক্ষকতা দিয়ে। তিনি বিএএফ শাহীন স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন। কিন্তু ওই যে স্কুলজীবনে অভিনয়ের যে বীজ বপন হয়েছিল মনের মধ্যে, সেটি তরতর করে বেড়ে ওঠে শিক্ষকতা পেশায় ঢোকার পরই।

টেলিভিশনে দিলারা জামানের প্রথম নাটক ‘ত্রিধরা’। ১৯৬৬ সালে প্রচার হয় এটি। এই নাটকে তার মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন নাট্যকার মুনীর চৌধুরীর স্ত্রী লিলি চৌধুরী। দিলারার প্রথম ধারাবাহিক নাটক ‘সকাল সন্ধ্যা’। ১৯৯৩ সালে তিনি মোরশেদুল ইসলাম পরিচালিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘চাকা’তে অভিনয় করেন। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘আগুনের পরশমণি’।

২০০৮ সালে মুরাদ পারভেজ পরিচালিত ‘চন্দ্রগ্রহণ’ চলচ্চিত্রে ময়রা মাসী চরিত্রে অভিনয় করেন দিলারা জামান। এই চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি একই চলচ্চিত্রে তার সহশিল্পী চম্পার সঙ্গে যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া মুরাদ পারভেজ পরিচালিত ‘বৃহন্নলা’ চলচ্চিত্রে গ্রামের এক বুড়ির চরিত্রে অভিনয় করেন।

দিলারা জামান অভিনীত অন্য সিনেমাগুলো হচ্ছে- ‘ব্যাচেলর’, ‘মেড ইন বাংলাদেশ’, ‘চন্দ্রগ্রহণ’, ‘মনপুরা’, ‘প্রিয়তমেষু’, ‘তুমি আসবে বলে’ এবং ‘হালদা’। অন্যদিকে, তার অভিনীত টিভি নাটকের সংখ্যা অগণিত। শিল্পকলায় অবদানের জন্য ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে দেয় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক।  

ব্যক্তিগত জীবন দিলারা জামান ফখরুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ফখরুজ্জামান বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক। তাদের দুই মেয়ে তানিয়া এবং যুবায়রা। এর মধ্যে তানিয়া পেশায় চিকিৎসক এবং যুবায়রা আইনজীবী। এছাড়া দিলারা জামানের একজন পালক ছেলে সন্তান রয়েছে। তার নাম আশফাক।

প্রবীণ এই অভিনেত্রী সদ্যই জীবনের ৭৯টি বসন্ত পেরিয়ে ৮০ বছরে পা দিয়েছেন। তিনি জানান, ‘৮০ বছরে এসেও সুস্থ আছি, ভালো আছি- এটাই ভালো লাগার। এই দীর্ঘ চলায় মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। যেজন্য সবার কাছে কৃতজ্ঞ।’ পাশাপাশি এও বলেন, ‘মনটা ভালো নেই। সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যায় লাখ লাখ মানুষ ভীষণ দুর্ভোগে আছেন। তাদের দুর্ভোগ কামনোর জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া চাইছি।’

(ঢাকাটাইমস/২২ জুন/এএইচ)