শাকিব-অপুকে নিয়ে গোপন তথ্য দিলেন মালেক আফসারী

প্রকাশ | ২২ জুন ২০২২, ১৫:৩২

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ঢাকাই সিনেমার সাবেক দম্পতি শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। একসঙ্গে করেছেন ৭০টির বেশি সিনেমা। বেশির ভাগই সুপারহিট। দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাজ করতে গিয়েই প্রেম, তারপর বিয়ে। তবে সবই হয়েছিল গোপনে। এ জুটির প্রেম আর বিয়ের কথা জানতো না ইন্ডাস্ট্রির তেমন কেউই। তাই দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর সংসার করলেও কেউ তা ঘুণাক্ষরেও জানতে পারেনি।

তবে বিয়ের তিন বছরের মাথায় শাকিব-অপুর সম্পর্কের সবকিছুই জানতে পারেন বলে দাবি করেছেন ঢালিউডের ‘মাস্টার মেকার’ মালেক আফসারী। নিজের ইউটিউবে পোস্ট করা এক ভিডিওতে নির্মাতা জানিয়েছেন, একটি সিনেমার কাজ চলাকালীন তিনি শাকিব খান আর অপু বিশ্বাসকে শুটিংস্পট থেকে দূরে নিরিবিলি বাংলোতে একান্তে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।

২০১১ সালে মালেক আফসারীর পরিচালনায় ‘মনের জ্বালা’ সিনেমাটিতে অভিনয় করেন শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। হার্টবিট প্রোডাকশনের ব্যানারে নির্মিত ওই সিনেমার প্রযোজক ছিলেন তাপসী ঠাকুর। তার কাছ থেকেই মালেক আফসারী জানতে পারেন, শাকিব-অপু জুটি বিবাহিত। এর পরই তিনি তাদের বিশেষ নজরে দেখা শুরু করেন।

সে কথা জানিয়ে অপু বিশ্বাসকে উদ্দেশ্য করে মালেক আফসারী ভিডিওতে বলেন, ‘আপনাকে কবে থেকে ম্যাডাম বলে ডাকি জানেন? এক শীতের সময়, আউটডোর। ‘মনের জ্বালা’ সিনেমার শুটিং, আপনাকে আর শাকিব খানকে শুটিংস্পট থেকে দূরে বাংলোতে থাকার ব্যবস্থা করে দিলাম। তখন আমার প্রযোজক তাপসী ঠাকুর ফোন করে জানালেন, আপনাদের যেন এভাবেই রাখি। আপনারা দুজন বিবাহিত বিষয়টি যেন গোপন রাখি।’

নির্মাতা বলেন, ‘যখন জানলাম আপনারা বিবাহিত। এর পরদিন থেকে আপনি সুপারস্টার শাকিব খানের স্ত্রী, আপনাকে তো ম্যাডাম না ডেকে পারি না। তখন থেকেই আপনাকে ম্যাডাম ডাকি। সুন্দর শুটিং হইছে। সুপারডুপার হিট হইছে। আপনি খুব প্রশংসা করছিলেন।’ 

কিন্তু এত বছর পর হঠাৎ এই পুরনো কাসন্দি কেন ঘাটলেন মালেক আফসারী? শাকিব-অপু সম্পর্কে কিছুই তো আর গোপন নেই। ঘটনা হচ্ছে, সম্প্রতি একটি টিভি শোতে মালেক আফসারীকে ইঙ্গিত করে ট্রল করেন অপু বিশ্বাস। সেই ঘটনার পাল্টা দিতেই একটি ভিডিও তৈরি করেন মালেক আফসারী এবং সেটি নিজের ইউটিউব চ্যানেল পোস্ট করেন।

ওই ভিডিওতে অপুর উদ্দেশ্যে নির্মাতা বলেন, ‘আমি আপনাকে ট্রল করছি, আপনাকে হজম করতে হবে। আমাকে নিয়ে আপনি ট্রল করেছেন, এটাও আমার হজম করতে হবে। মিডিয়ায় এসব ট্রল চলবে। সবাই বিনোদন নেবে। রিকশা-ভ্যানচালক অবসর সময়ে এসব থেকেই বিনোদন নেবে।’

এর পাশাপাশি এখন শাকিব খানের সঙ্গে কোনো সিনেমা করার সুযোগ পেলে, ব্যক্তিগত মান-অভিমান ভুলে সেখানে কাজ করার জন্য অপুকে পরামর্শও দেন মালেক আফসারী।

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে বিয়ে করেছিলেন শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। দীর্ঘ নয় বছর সে খবর গোপন রাখেন। ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর কলকাতার একটি হাসপাতালে জন্ম হয় তাদের একমাত্র সন্তান আব্রাম খান জয়ের। গোপন রাখা হয় এ খবরও। অবশেষে ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল ছেলে জয়কে নিয়ে একটি টিভি চ্যানেলের লাইভ অনুষ্ঠানে হাজির হন অপু বিশ্বাস। প্রকাশ করেন সবকিছু।

এ ঘটনায় শাকিব খান প্রথমে ক্ষুব্ধ হলেও পরে সবকিছু স্বীকার করেন এবং অপুর সঙ্গে সংসার করবেন বলে জানান। কিন্তু সেই সুখের সংসার আর করা হয়নি। উপরে উপরে সব মেনে নিলেও ভেতরে যে একটা ক্ষোভ ছিল সেটা কিছুদিন পরই প্রকাশ করেন নায়ক। ‘ছেলে জয়কে তালাবদ্ধ করে অপু বয়ফ্রেন্ড নিয়ে কলকাতায় ঘুরতে গেছেন’- এমন অভিযোগে ২০১৭ সালের ২২ নভেম্বর তাকে তালাকের নোটিশ পাঠান শাকিব।

যদিও পরে অপু ফিরে এসে শাকিবের সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি কলকাতায় ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলেন এবং ছেলে জয়কে শাকিবের কোনো আত্মীয়ের কাছে রেখে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল না। তাই কাজের মেয়ে শেলীর কাছে রেখে গিয়েছিলেন। কিন্তু অপুর সেই ব্যাখ্যা কানে তোলেননি শাকিব খান। নড়েননি নিজের সিদ্ধান্ত থেকেও।

এরপর তারকা দম্পতির সংসার টেকাতে উদ্যোগী হয়েছিল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। তিন দফায় তারা সালিশি বৈঠকও ডাকে। কিন্তু প্রতিবার সেই বৈঠকে অপু বিশ্বাস উপস্থিত থাকলেও দেখা মেলেনি শাকিব খান বা তার পরিবারের কারও।

অবশেষে ২০১৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি তালাকের নোটিশ পাঠানোর ৯০ দিন পার হলে আইনগতভাবে কার্যকর হয়ে যায় শাকিব-অপুর বিবাহ বিচ্ছেদ। এরপর থেকে আর একসঙ্গে কোনো সিনেমাও করেননি এই তারকা জুটি। একাধিক বার তাদের একসঙ্গে দেখা গেলেও, সেটা শুধুমাত্র ছেলে জয়ের সৌজন্যে।

(ঢাকাটাইমস/২২ জুন/এএইচ)