রূপসায় নিজ অর্থে সড়ক সংস্কার করলেন ভ্যান চালক

এস এম মাহবুবুর রহমান, খুলনা
| আপডেট : ২২ জুন ২০২২, ১৬:২৪ | প্রকাশিত : ২২ জুন ২০২২, ১৬:০৫

খুলনার রূপসায় জনদুর্ভোগ লাঘবে এগিয়ে এলেন একজন ভ্যান চালক। ভ্যান চালিয়ে উপার্জিত অর্থ দিয়ে সংস্কার করছেন রাস্তার খানা-খন্দক। তার এই মানবিক কর্মকাণ্ডে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করতে এগিয়ে এসেছেন অন্যান্য ভ্যান চালকরা। নিজেরাই সিমেন্ট-বালুর সঙ্গে খোয়া মিশিয়ে দিচ্ছেন ঢালাই।

উপজেলার পূর্ব রূপসা থেকে রহমতনগর ও কাষ্টম ঘাট যাতায়াতের রাস্তার পরিত্যক্ত রেল স্টেশন থেকে নামার স্থানটি দেবে গিয়ে সৃষ্টি হয় বড় গর্তের। সাইকেল, ভ্যান ও মোটরসাইকেলসহ ছোটখাটো যানবাহনে যাত্রীদের চলাচলে সৃষ্টি হয় মারাত্মক দুর্ভোগের। সামান্য বৃষ্টি হলেই এখানে জমে থাকে পানি। দীর্ঘদিন যাবৎ এই অবস্থা বিরাজমান থাকলেও সমাধানে এগিয়ে আসেনি কোন জনপ্রতিনিধি।

অবশেষে জনদুর্ভোগ লাঘবে এগিয়ে আসেন নৈহাটী এলাকায় বসবাসকারী ভ্যান চালক নাসির হোসেন। ২১ জুন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নিজের উপার্জিত অর্থ দিয়ে বালু, সিমেন্ট ও খোয়া কিনে নিজ হাতে শুরু করেন সেখানে ঢালাইয়ের কাজ।

তার এই কাজ বাস্তবায়নে এগিয়ে আসেন অন্যান্য ভ্যান চালকরা। এদিকে ভ্যান চালকের মানবিক কর্মকান্ডে সাড়া পড়েছে সাধারণ মানুষের মাঝে। অনেকেই দিচ্ছেন তাকে বাহবা। ভ্যান চালক নাসির এর আগেও স্বেচ্ছায় নিজ অর্থে সড়ক সংস্কার করেছেন বলে জানান সাধারণ ভ্যান চালকরা।

ভ্যান চালক আলমগীর হোসেন বলেন, নাসির চাচা ভ্যান চালালেও একজন খুবই ভালো মনের মানুষ। রাস্তা-ঘাটে ছোট-খাটো সমস্যা হলে ভ্যান চালানো উপার্জনের টাকা দিয়ে মেরামত করেন। অথচ উনি কিন্তু কোন জনপ্রতিনিধি বা কোন রাজনৈতিক দলের নেতাও না। না আছে অঢেল টাকা-পয়সা। একজন অতি সাধারণ মানুষ তিনি। এমনকি জনপ্রতিনিধি বা রাজনৈতিক দলের নেতা হওয়ার বাসনাও নেই তার।

রূপসা বাজারের নুর প্রিন্টিং প্রেসের স্বত্বাধীকারী আনোয়ার শাহাদাৎ বলেন, একজন ভ্যান চালক যে এত উদার মানসিকতার হতে পারে তা এই নাসির চাচাকে না দেখলে জানতাম না। রাস্তার খানা-খন্দকের কারণে অন্যান্য ভ্যান চালকরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং যাত্রীরা যাতে কষ্ট না পায় তার কারণে নিজ অর্থে সংস্কার করে থাকেন। আসলে অর্থ বিত্ত থাকলেই হয় না। ভালো কাজ করার জন্য ভালো একটা মন থাকার দরকার। যা এই নাসির চাচার আছে।

ভ্যান চালক নাসির হোসেন বলেন, ভ্যানে করে যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে আমাদের ভ্যান চালকরা খুবই সমস্যায় পড়ে। যাত্রীরাও আঘাত প্রাপ্ত হয়। অনেক সময় ভ্যান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব নানা কারণে নিজ উদ্যোগে এখানে উঁচু করে ঢালাই দিচ্ছি।

তিনি বলেন, এই কাজের জন্য আমি কারো কাছে টাকা পয়সা চাইনি। তারপরও দুজন আমাকে ৫০০ টাকা দিয়ে সহযোগীতা করেছে। শুধু যে এখানে কাজ করছি তা নয়। এর আগে পূর্ব রূপসা বাসস্ট্যান্ডে দুই হাজার ৭০০ টাকা খরচ করে সেখানে সৃষ্টি হওয়া গর্ত ঢালাই দেই।

তিনি আরও বলেন, এসব মানবিক কাজ করতে আমার ভালো লাগে। টাকা থাকলে আরো করতাম। কিন্ত এর চেয়ে বেশি করার তো আমার সামর্থ নেই।

(ঢাকাটাইমস/২২জুন/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :