মেঘনায় প্রতিদিনই বাড়ছে উজানের পানি

প্রকাশ | ২৩ জুন ২০২২, ১৩:৫৯

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ভৈরবের মেঘনায় প্রতিদিনই বাড়ছে উজানের পানি। বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। নিম্নাঞ্চলসহ উপজেলার প্রায় শতাধিক গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্য অনেকেই জীবন রক্ষায় প্লাবিত নিচু এলাকা ছেড়ে উঁচু এলাকায় এসে আশ্রয় নিয়েছেন। 

কিশোরগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ সুত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ভৈরব বাজার মেঘনা নদীতে পানি বেড়েছে ৩ সে.মি। আর বর্তমানে আজ বৃহস্পতিবার মেঘনার পানির লেভেল রয়েছে ৫.১৫ মিটার। বিপৎসীমার হল ৫.৮০ মিটার। বর্তমানে বিপৎসীমার চেয়ে ৬৫ সেন্টিমিটার নিচে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে আজমেরিগঞ্জের কালনী-কুশিয়ারা নদী, খালিয়াজুড়ি এলাকার ধনুই নদীন পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে সেইসব নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় পর্যায়ক্রমে ৪ সেন্টিমিটার ও ৭ সেন্টিমিটার পানি কমেছে।  তবে ময়মনসিংহের পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি প্রতিদিনই বাড়ছে তবে বিপৎসীমার ৩১২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। 

মেঘনা নদীর পাড় ঘেষা কিশোরগঞ্জের অন্যতম একটি উপজেলার ভৈরব। এই উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের ৮৪ টি গ্রামের প্রায় এক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে জীবনযাপন করছে।  তাদের মধ্য উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপী গ্রামের বাড়তি পানি এলাকার বিদ্যুতের কুটির উপরে প্রান্তে তারে স্পর্শ করেছে। যার ফলে ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। তবে পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগ তলিয়ে যাওয়া সেসব এলাকার বিদ্যুতের কুটি ও তারে  লাল নিশান টাঙিয়ে সতর্ক করছেন। 

শ্রীনগর ইউনিয়নের জাফরনগর, বধুনগর, মাধবপুর, ভবানীপুর এলাকার যোগাযোগের অন্যতম সড়কটি পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে হাজার মানুষ হয়ে পড়েছে পানিবন্দি। শিমুলকান্দি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে উজানের পানি পানি প্রবেশ করে কয়েকটি মাছের ঘের ডুবিয়ে দিয়েছে। সেসব ঘের বা পুকুরে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পানিতে ভেসে গেছে বলে পুকুর মালিকদের দাবি।  এছাড়া পৌর শহরের উসমান গনি পৌর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রাস্তাঘাট ও বিদ্যালয়ের মেঝে পানিতে তলিয়ে যায়। সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের অন্যত্র সরিয়ে খোলা মাঠে পাঠদান দিচ্ছেন শিক্ষকরা।

বিদ্যালয়টির শিক্ষক শাকিলা নাসরিন বলেন, বন্যার পানি বিদ্যালয়ে আসার সড়কসহ শ্রেণিকক্ষ পানিতে তলিয়ে গেছে। সেখানে আর কোনোভাবেই ক্লাস করানো সম্ভব হচ্ছে না। এতে শিক্ষার্থীরা ঝরে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে সেজন্যই বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের জন্য অত্র এলাকার মিঠু মিয়ার বাসার সামনে খোলা মাঠে পাঠদান দিচ্ছেন তারা।  

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমান জানান, সিলেট, সুনামগঞ্জ জেলার বন্যার পানি ভৈরব বাজার মেঘনা নদী দিয়ে প্রবাহিত হয়ে থাকে। সেজন্যই উজানের বন্যার পানি আসায় প্রতিদিনই বাড়ছে মেঘনার পানি।

আজ বৃহস্পতিবার সকালের হিসেব মতে উজানে পানি বিপৎসীমার ৬৫ সে.মি নিচ দিয়ে মেঘনা নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে বলে তিনি জানান। 

(ঢাকাটাইমস/২৩জুন/এআর)