বিক্রি হচ্ছে বাবুই পাখির বাসা!

প্রকাশ | ২৪ জুন ২০২২, ১৮:৫১

শেখ সাইফ, ঢাকাটাইমস

‘বাবুই পাখিরে ডাকি, বলিছে চড়াই,/ কুঁড়ে ঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই,/ আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকা পরে/ তুমি কত কষ্ট পাও রোদ, বৃষ্টি, ঝড়ে।’ কবি রজনীকান্ত সেনের ছড়া কবিতাটির নায়ক নিপুণ বাসা তৈরির কারিগর বাবুই পাখি।

বাবুই পাখির সেই নিপুণ খাসা বাসাটি এখন বিক্রি হচ্ছে বৃক্ষ মেলায়। তবে এটি বাবুই পাখির তৈরি বাসা নয়। বাবুই পাখির বাসার আদলেই বিভিন্ন পাখিদের জন্য মানুষের হাতে তৈরি বাসা। উদ্দীপন নামের একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) বৃক্ষপ্রাণে প্রকৃতি-প্রতিবেশ, আগামী প্রজন্মে টেকসই বাংলাদেশ স্লোগানের নিরিখে গাছের পাশাপাশি মেলায় নিয়ে এসেছে বাবুই পাখির বাসা। এছাড়াও তারা মহামূল্যবান চন্দন গাছের চারাও এনেছে। 

মূলত গ্রামে গঞ্জে তালগাছে অনেকগুলো ঝুলন্ত বাসা বাঁধে বাবুই পাখি। ঘাস, খড়কুটো ছিঁড়ে ছিঁড়ে ঠোঁটের সাহাযে তারা নিপুণভাবে বোনে তাদের এই বাসা।

সব গাছ ছাড়িয়ে এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকা তালগাছে এখন বাবুই পাখির বাসা তেমন চোখে পড়ে না। দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে সুজলা-সুফলা, সবুজ-শ্যামল ছায়াঘেরা নিবিড় গ্রাম। যেখানে পাখ পাখালির কূজনে মুখরিত হতো সন্ধ্যা-সাঁঝের বেলা। সেখানে এখন গড়ে উঠছে আধুনিক সভ্যতার অট্টালিকা। এইসব কংক্রিটের জঙ্গলে চড়ুইয়ের স্থান হলেও বাবুইসহ অন্য পাখিরা হারাচ্ছে বাসস্থান

আর তাই পাখিদের বাসস্থান ফিরিয়ে দিতে উদ্দীপনের এই অভিনব উদ্যোগ। সেখানে শুধু বাবুই পাখি নয় দোয়েল, শালিক, চড়ুই,  ঘুঘু, টিয়া, ময়না, ফিঙেসহ হরেক পাখিই এই বাসায় থাকবে।

বাবুই পাখির বাসা নিয়ে বৃক্ষমেলার উদ্দীপন স্টলের দায়িত্বে থাকা প্রশান্ত কথা বলেন,  ‘ড. মিহির কান্তির উদ্যোগে আমাদের এই প্রয়াস। তার স্লোগান ‘দেখো চেয়ে মানুষের চাহিদা বিশাল, পাখির চাহিদা শুধু একটি পাখির ডাল।’ এই দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে নারিকেলের ছোবড়া, ঘাস ও সুতা দিয়ে তৈরি আমাদের বাবুই পাখির বাসা বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকায়। ক্রেতাদের এতো বেশি চাহিদা যে আমরা বিক্রি করে পারছি না। এতো সাড়া পাব ভাবিনি।’

৫জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে রাজধানীর আগারগাওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পাশে বিশাল মাঠ জুড়ে বসেছে মাসব্যাপী এই বৃক্ষমেলা। চলবে আগামী ৪ জুলাই পর্যন্ত। মেলায় সরকারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে মিলিয়ে ১১৭টি স্টল রয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের জন্য বৃক্ষমেলায় প্রবেশ একদম ফ্রি।

(ঢাকাটাইমস/২৪জুন/এসকেএস)