এই সেতু বাংলাদেশের জনগণের: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ | ২৫ জুন ২০২২, ১১:৩৪ | আপডেট: ২৫ জুন ২০২২, ১১:৪৮

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

পদ্মা সেতু শুধু ইট, সিমেন্ট বা কংক্রিটের অবকাঠামোই নয় এই সেতু বাংলাদেশের অহংকার বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেন, ‘এই সেতু আমাদের অহংকার, এই সেতু আমাদের গর্ব। এই সেতু আমাদের সক্ষমতা আমাদের মর্যাদার প্রতীক। এই সেতু বাংলাদেশের জনগণের।’

শনিবার সকালে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর মূল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সরকারপ্রধান একথা বলেন। সকাল ১০টায় শুরু এই অনুষ্ঠান শুরু হয়। ঢাকার তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে সকাল সাড়ে নয়টায় হেলিকপ্টারে করে মাওয়ায় পৌঁছে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।

আনন্দ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের মানুষ গর্বিত, সেইসঙ্গে আমিও আনন্দিত, গর্বিত এবং উদ্বেলিত। অনেক বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে আমরা আজেক এই পদ্মা সেতু নির্মান করতে সক্ষম হয়েছি।’

‘এই সেতু শুধু একটি সেতু নয়, এই সেতু দুপারে যে বন্ধন সৃষ্টি করেছে তাই নয় শুধু, এই সেতু আমাদের আবেগের আমাদের সৃজনশীলতার, সাহসিককতার, সহনশীলতার এবং আমাদের প্রত্যয়। আমরা এই সেতু তৈরি করবো সেই প্রত্যয়।’

পদ্মা সেতু নির্মানের শুরু থেকে নানা ষড়যন্ত্রের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যদিও ষড়যন্ত্রের কারণে এটা করতে দুই বছর বিলম্বিত হয়েছে। কিন্তু আমরা কখনো হতোদ্যশ হইনি। হতাশায় ভুগিনি আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে চলেছি।’

‘শেষ পর্যন্ত সকল অন্ধকার ভেদ করে আলোর পথে আমরা যাত্রা করতে সক্ষম হয়েছি। আজকে পদ্মার বুকে জ্বলে উঠেছে লাল, নীল, সোনালী আলোর ঝলকানি।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আমরা যখন পদ্মা সেতু নির্মান করতে যায় তখন অনেক ষড়যন্ত্র শুরু হয়, অনেক অপবাদ দেওয়া হয়। যারা জড়িত ছিল তাদের ওপর মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হয়। আমি তাদের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানাচ্ছি।’

‘আজকে বাংলাদেশের মানুষ গর্বিত। আমিও। অনেক বাধা উপেক্ষা করে আজ আমরা সফল হয়েছি। ষড়যন্ত্রের কারনে এ সেতু করতে দুই বছর পিছেয়ে গিয়েছি তবুও আমরা হতাশ হয়নি। আমরা মাথা নোয়াইনি, আমরা মাথা নোয়াবো না।’

পদ্মা সেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। মুন্সীগঞ্জের মাওয়া পয়েন্টে মূল অনুষ্ঠানে উপস্থিত আছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করছেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

পদ্মা সেতুর থিম সং ‘মাথা নোয়াবার নয়, বাঙালি যেহেতু; বঙ্গবন্ধু দিয়েছেন দেশ, তুমি দিলে পদ্মা সেতু’বাজিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন মন্ত্রী পরিষদ সচিব। বক্তব্যে তিনি পদ্মা সেতু প্রকল্পে যুক্ত পাঁচ হাজার কর্মীর প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানান।

মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর এক পাশে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম অন্যপাশে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আর তার পাশে ছিলেন পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম।

সুধী সমাবেশে স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ মন্ত্রিসভার সদস্য, কুটনীতিক, উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

আমন্ত্রিত প্রায় সাড়ে তিন হাজার অতিথির বসার জন্য সেতুর টোল প্লাজার কিছুটা আগে এক পাশে অস্থায়ী প্যান্ডেল করে ব্যবস্থা রাখা হয়। এখানে উপস্থিত ছিলেন সরকারের মন্ত্রী, আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা।

মঞ্চের দুই পাশে দুটো ডায়াস আর তার দুটো জায়ান্ট স্ক্রিন রাখা হয়েছে। এর এক পাশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি, অন্য পাশে তার মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি।

(ঢাকাটাইমস/২৫জুন/এসআর/ডিএম)