নর্থ সাউথের আয়-ব্যয়ে ‘নয়ছয়’, তদন্তেই ক্ষান্ত ইউজিসি

সৈয়দ ঋয়াদ, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৬ জুন ২০২২, ১৪:৩৭ | প্রকাশিত : ২৬ জুন ২০২২, ১৩:৪৮

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টিদের অর্থ কেলেঙ্কারির খবর বেশ পুরোনো। দুদকের মামলায় কারাগারে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি বোর্ডের চার সদস্য। এমন অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির আয়-ব্যয়ে ‘নয়ছয়’ কীভাবে তদারকি করছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন—ইউজিসি।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবছর তাদের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি বাবদ বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করে থাকে। বেসরকারি এই বিশ্ববিদ্যালয়টির বিপুল এই অর্থ সরকারের নজরদারিতে আছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

দুদকের করা মামলা সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস উন্নয়নের নামে ৯ হাজার ৯৬ দশমিক ৮৮ ডেসিমাল জমি কিনতে অতিরিক্ত ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা হস্তান্তর করে তা আত্মসাৎ করেন মামলায় অভিযুক্ত বোর্ড সদস্যরা।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় তহবিলের টাকায় ট্রাস্টিদের জন্য কেনা ১০টি মার্সেডিজ ও রেঞ্জরোভার ব্র্যান্ডের বিলাসবহুল গাড়ি কিনেও আলোচনার জন্ম দিয়েছিল নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়। বিতর্কের মধ্যেই সেই গাড়িগুলো বিক্রি করে টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে জমা দিতে গত ১৭ মে নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

নর্থ সাউথের এমন আর্থিক কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পর দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তদারকি সংস্থা ইউজিসির ক্ষমতার লাগাম দৃশ্যমান হয়েছে। আর্থিক বিষয়ে ইউজিসির নাটাইয়ের শেষ প্রান্ত ‘তদন্ত’ পর্যন্ত বলেই মনে করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউজিসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. দিল আফরোজ বেগম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘নর্থ সাউথের ট্রাস্টিদের গাড়ি ও জমি কেনাসহ বিভিন্ন বিষয়ের তদন্ত করেছি। এরপর অনিয়মেরর বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।’

নর্থ সাউথের আর্থিক কেলেঙ্কারি নিয়ে ইউজিসি কি ধরনের তদারকি করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শুধু নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ই নয়, দেশের সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম নিয়েই আমরা কাজ করি। তবে আর্থিক কেলেঙ্কারির মতো ঘটনায় মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেয়। ইউজিসি এসব বিষয় তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠায়।’

ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ক উপ-পরিচালক মো. ওমর ফারুখ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘নর্থ সাউথের বিষয়ে ইউজিসি তদন্ত করছে। দুদক ইতোমধ্যে মামলাও করেছে।’

নর্থ সাউথের আর্থিক কেলেঙ্কারির বিষয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের মুঠোফোনে বেশ কয়েক বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি। খুদে বার্তা পাঠিয়েও সাড়া মেলেনি উপমন্ত্রীর।

প্রসঙ্গত, আইন অনুযাযী শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি থেকে পাওয়া অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নেই ব্যয় করার কথা থাকলেও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেই আইন লঙ্ঘন করেছেন।

অর্থ আত্মসাতের দায়ে দুদকের মামলায় কারাগারে থাকা চারজন হলেন— বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এম এ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান ও মোহাম্মদ শাহজাহান।

এছাড়া এই মামলার অন্য দুই আসামি হলেন—বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদ ও আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আমিন মো. হিলালী।

(ঢাকাটাইমস/২৬জুন/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :