বাইডেনের স্বাক্ষরে বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন পেল যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশ | ২৬ জুন ২০২২, ১৬:৩৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
ছবি- রয়টার্স

সম্প্রতি বন্দুকধারীদের হামলার ঘটনা প্রকট রূপ ধারণ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। বেশ কয়েকটি স্থানে ভয়বহ বন্দুক হামলার পর দেশজুড়ে দাবি উঠে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন পাসের দাবিতে। কয়েকদিন আগে ক্যালিফোর্নিয়াতে নতুন অস্ত্র আইন নিয়ন্ত্রণ হওয়ার পর শনিবার দেশটির ইতিহাসের গত তিন দশকের মধ্যে প্রথম বড় ফেডারেল বন্দুক সংস্কার আইনে স্বাক্ষর করেছেনমার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। খবর রয়টার্সের।

বাফেলো এবং উভালদের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হামলায় ১৯ শিশুসহ ৩০ জনের বেশি লোক নিহত হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পরে দ্বিদলীয় বিলটি একত্রিত হয়েছিল। নতুন এই আইনের ফলে আইনগতভাবে অঙ্গরাজ্যগুলি তাদের রাজ্যে যদি কোনো বন্দুকধারীকে বিপজ্জনক মনে করে তাহলে তাদের হাত থেকে অস্ত্র দূরে রাখতে পারবে।

নতুন এই আইনের অধীনে ২১ বছরের কমবয়সী বন্দুক ক্রেতাদের ব্যাকগ্রাউন্ড কঠোরভাবে যাচাই করা হবে এবং হুমকি হিসাবে বিবেচিত লোকদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র অপসারণের জন্য অঙ্গরাজ্যগুলোকে উৎসাহিত করা যাবে। মূলত যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনার পর কংগ্রেস চলতি সপ্তাহে দ্বিদলীয় সমর্থনে আইনটি অনুমোদন করে।

আইনে স্বাক্ষর করার সময় বাইডেন তার পাশে থাকা স্ত্রী জিলকে বলেন, ঈশ্বরের কৃপায় এটি অনেক জীবন বাঁচাতে চলেছে।

তবে গত সপ্তাহে বন্দুকের মালিকদের অধিকার প্রসারিত করে আইনটির সংস্কার করে সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট জানায়, মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী আত্মরক্ষার জন্য জনসমক্ষে একটি হ্যান্ডগান বহন করার ক্ষমতা থাকবে নাগরিকদের।

এই রায়ের পর বাইডেন বলেন, সুপ্রিম কোর্ট কিছু ভয়ানক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যে একটি অস্ত্র সংক্রান্ত এবং আরেকটি হলো দেশব্যাপী গর্ভপাতের অধিকারকে বেআইনি ঘোষণা করা।

বন্দুক নিয়ন্ত্রণ দীর্ঘদিন ধরে দেশটিতে বিভাজনকারী সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং বন্দুক বিক্রির ওপর নতুন নিয়ন্ত্রণ স্থাপনের জন্য বিভিন্ন প্রচেষ্টা ইতোমধ্যে ব্যর্থ হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আগামী ৪ নভেম্বরের মধ্যবর্তী নির্বাচনে জেতার জন্য ভোটারদের কাছে জনপ্রিয়তা প্রচারণার অংশ হিসেবে বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইনে স্বাক্ষর করেছেন বাইডেন।

নতুন এই আইনের অধীনে যা থাকছে

১. বন্দুক সহিংসতা রোধে প্রণীত নতুন এই আইনের অধীনে ২১ বছরের কমবয়সী ক্রেতাদের জন্য ব্যাকগ্রাউন্ড কঠোরভাবে যাচাই করা হবে।

২. মানসিক স্বাস্থ্য প্রোগ্রাম এবং স্কুলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও উন্নত করতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল তহবিলে ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করা হবে।

৩. হুমকি হিসাবে বিবেচিত লোকদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র অপসারণের জন্য ‘লাল পতাকা’ আইন প্রয়োগ করতে তহবিল বরাদ্দের মাধ্যমে অঙ্গরাজ্যগুলোকে উৎসাহিত করা হবে।

৪. অবিবাহিত অন্তরঙ্গ সঙ্গীকে নির্যাতনে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কাছে বন্দুক বিক্রি নিষিদ্ধ করতে তথাকথিত ‘বয়ফ্রেন্ড লুপহোল’ বন্ধ করা।

জি-৭ সম্মেলনের জন্য জার্মানি সফরের আগে বাইডেন বলেছিলে, এই সময়ে যখন ওয়াশিংটনে কিছু করা অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে, আমরা ফলপ্রসূ কিছু করছি। আমরা যদি বন্দুকের বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছাতে পারি তবে আমাদের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছাতে সক্ষম হবে। আমি জানি আরও অনেক কাজ করার আছে এবং আমি কখনই হাল ছাড়ব না।

এর আগে বন্দুক সুরক্ষা আইন পাস উপলক্ষে ১১ জুলাই হোয়াইট হাউস ইভেন্টে বন্দুক সহিংসতার শিকার পরিবার এবং আইন প্রণেতাদের আতিথ্য করার ঘোষণাও দিয়েছেলেন বাইডেন।

(ঢাকাটাইমস/২৬জুন/এসএটি)