সোনাই ফকিরের দিন কাটে পেটের চিন্তায়

আকিবুর রহমান, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৬ জুন ২০২২, ১৭:৪৮ | প্রকাশিত : ২৬ জুন ২০২২, ১৭:২৩

সোনাই ফকির। ষাটোর্ধ্ব বয়সী। আপাতত ঠাঁই গোয়লন্দ ঘাট। টং দোকানে বিক্রি করেন পানি আর টুকিটাকি জিনিস। কতো আর আয়? সোনাই বলেন, ‘দিনশেষে শ দেড়েক, কখনোবা তাও হয় না’।

তাহলে সংসার সামলান কিভাবে? চোখ ছলছল সোনাই ফকিরের। তার তিন ছেলেমেয়ে। বিয়ের পর মেয়ে শ্বশুরবাড়ি। দুই ছেলে আর তাদের বউ সোনাইয়ের সঙ্গেই থাকেন।

একসময় ভালো হাল ছিল সোনাই ফকিরের। দৌলতদিয়ার কুশিয়ারা ইউনিয়নে ভরা বাড়ি ছিল তার। সেসব গিলে খেয়েছে প্রমত্তা পদ্মা। ভিটেমাটি হারিয়ে পরিবার নিয়ে এখন বাস গোয়ালন্দের সাইনবোর্ড এলাকায়।

রাস্তার ধারে টং দোকান খুলেছেন। যাত্রাপতে কেউ কেউ পানি কেনেন সোনাইয়ের দোকান থেকে। এতেই সামান্য কটা টাকা আয়। পাশাপাশি মজুর হিসেবেও কাজ করেন মাঝেমধ্যে।

শনিবার রাতে গোয়ালন্দে সোনাইয়ের সঙ্গে কথা হচ্ছিল প্রতিবেদকের। এসময় তার জন্য রাতের খাবার নিয়ে আসেন স্ত্রী। কি ছিল খাবার? দেখা গেল মোটা চালের ভাত আর এক দলা আলু ভর্তা।

লুঙ্গি আর পাঞ্জাবি পরা সোনাই দোকানে বসে কথা বলছিলেন। বলেন, তার খাবার প্রতিদিনই একই রকমের। মাছ-মাংসের স্বাদ পাননি বহুদিন। দিনে যা টাকা আয় তা দিয়ে নুন তেল আর চাল কিনলেই সারা।

সোনাই ফকির ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘পদ্মার পানি বাড়ছে। ফসলি জমি ভাঙতে শুরু করেছে। ক্ষেতের ফসল তলিয়ে গেছে। সব ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফসল নষ্ট হলে অনেক ক্ষতি। ফসল তোলার কাজেও নেবে না কেউ।’

সোনাইয়ের প্রতিটি কথাতেই যেন দুশ্চিন্তার ছাপ। নদীগর্ভে ঘরবাড়ি হারা মানুষের কথাও যেন ভাঙা ভাঙা। ফেরির সময় হয়ে এলে উঠতে যান প্রতিবেদক। বিদায় নেয়ার বেলায় সোনাইয়ের ভেজা গলা।

‘আমরা গরিব মানুষ বাবা। খেতে সমস্যা, থাকার সমস্যা। এই দিশা পাই তো এই পাই না। দিন কেটে যায় পেটের চিন্তায়’—বলেন জীবিকার ফাঁড়ায় থাকা সোনাই ফকির।

(ঢাকাটাইমস/২৬জুন/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :