অবৈধ সম্পদ অর্জন

দুদকের অগ্রাধিকার তালিকায় তারেক-জোবাইদার মামলা

প্রকাশ | ২৮ জুন ২০২২, ০৯:০৯ | আপডেট: ২৮ জুন ২০২২, ০৯:২১

মোয়াজ্জেম হোসেন, ঢাকাটাইমস

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অগ্রধিকার ভিত্তিতে বেশ কয়েকটি হাইপ্রোফাইল মামলা নিষ্পতি উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি মামলা তদন্তাধীন, বেশ কিছু মামলা রয়েছে বিচারাধীন।

বিচারাধীন মামলার মধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলাটি রয়েছে। খবর সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রের।

জানা যায়, এক-এগারোর সময় তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ঘোষিত আয়ের বাইরে চার কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করা হয়। এতে তারেক রহমান, তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান ও শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

নানা আইনী জটিলতায় আটকে ছিলো মামলাটি। সম্প্রতি হাইকোর্ট তাদের সম্পদের মামলার বৈধতা প্রশ্নে তিনটি রিট ও রুল খারিজ করে দেন। পাশাপাশি নিষ্পত্তির আদেশও দেন আদালত। ১৪ বছর ধরে ঝুলে থাকা এ মামলায় তারেক ও জোবাইদাকে পলাতক আসামী হিসেবে মামলার নথিতে উল্লেখ রয়েছে।

পাশাপাশি তারেক-জোবাইদাকে ‘পলাতক’ বিবেচনা করে, তাদের পক্ষে কোনো আইনজীবী এ মামলা পরিচালনা করতে পারবে না বলে রবিবার রায় দিয়েছে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

আদালতে তারেক-জোবাইদার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন ও কায়সার কামাল। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

অপরদিকে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, মানি লন্ডারিং মামলা এবং জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজা পরোয়ানা ঝুলে আছে। দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ইন্টারপোলের মাধ্যমে ওই মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের আনার চেষ্টা চলছে। ওই তিন মামলা তার অনুপস্থিতিতে শেষ করে প্রসিকিউশন।  এছাড়া ওই তিন মামলার মধ্যে ২ টিতে খালেদা জিয়াও সাজাপ্রাপ্ত।

খুরশীদ আলম খান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘তারেক রহমানের দুটি রিট এবং জোবাইদা রহমানের একটি রিটের রুল খারিজ করে দিয়েছে আদালত। স্থগিতাদেশও প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। তারেক রহমান যেহেতু একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ তিনটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত, এ বিষয়টি আদালতে আমরা উপস্থাপন করেছি, এই তিনটি মামলার ওপর ভিত্তি করে এবং তার বর্তমান অবস্থা বিবেচনা করে আইনের দৃষ্টিতে তারেক রহমান পলাতক বলে রায় দিয়েছে।’

তিনি বলেন, আত্মসমর্পন না করা পর্যন্ত তারা কোনো আইনী সহায়তা পাবেন না। বিচার কাজ নিজস্ব গতিতে চলবে।

২০০৭ সালে তারেক রহমান ও তার স্ত্রী পৃথক রিট আবেদন করেন। রিটে জরুরি আইন ও এই মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেন। হাইকোর্ট রুল জারি করে স্থগিতাদেশ দেন। এরপর রিট মামলাগুলো ১৯ এপ্রিল কার্যতালিকায় আসে। পরে রুল শুনানির জন্য দিন ঠিক করেন হাইকোর্ট।

অন্যদিকে একই মামলার বৈধতা নিয়ে আরেকটি ফৌজদারি আবেদন করেছিলেন তারেকের স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান। ওই সময় করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট।

ওই রুলের শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে মামলা বাতিলে জারি করা রুল খারিজ করে দেন। একই সঙ্গে জোবায়দা রহমানকে আট সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণেরও নির্দেশ দিয়েছিলেন।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন জোবায়দা রহমান। গত ১৩ এপ্রিল আপিল বিভাগ জোবায়দার এ আবেদন খারিজ করে আদেশ দেন। এর পরে ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়।

(ঢাকাটাইমস/২৮জুন//ডিএম)