অন্দর সাজাতে ভোলা মৃত্তিকার জুড়ি নেই

প্রকাশ | ২৮ জুন ২০২২, ২১:৪৫ | আপডেট: ২৮ জুন ২০২২, ২২:০১

শেখ সাইফ, ঢাকাটাইমস

আবহমান কাল থেকেই আমাদের সংস্কৃতিতে পরিবেশ বান্ধব মাটির তৈরি নানান তৈজসপত্র ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে আধুনিকতার ছোঁয়ায় স্বাস্থের জন্য উপকারি মাটির তৈরি তৈজসপত্রের ব্যবহার অনেক কমে এসেছে। কালের বিবর্তনে তার জায়গা নিয়েছে চিনামাটি, তামা, পিতল, কাঁসা এবং স্টিলের নানান আসবাবপত্র।

তবে পুরনো ফ্যাশন যেমন একসময় আবার নতুন করে ফিরে আসে, তেমনি বর্তমানে মৃৎশিল্পও শুধু তার ব্যবহার উপযোগিতাকে ছাপিয়ে ব্যবহৃত হচ্ছে ঘরদোর সাজানোর কাজেও।

শুধু ঘরদোর নয়। এখন অফিস, ডেস্ক, বেলকনি, বাসার ছাদ সব জায়গাতেই মাটির তৈরি জিনিসপত্র ব্যবহার হচ্ছে। ফুলদানি, ফুলের টব, ছাইদানি থেকে শুরু করে চায়ের পাত্র, থালা-বাসন, জগ-গ্লাস, শোপিচ সবকিছুতেই মাটির ছোঁয়া দেখা যায়।

এবারের মাসব্যাপী চলা বৃক্ষমেলায় মাটির টবে গাছ লাগাতে ৭৩ নং স্টল সাজিয়েছে ভোলা মৃৎশিল্প। অফিসের টেবিলে, ঘরের বারান্দায় কিংবা ছাদে দৃষ্টিনন্দন গাছ দিয়ে সাজাতে তারা এনেছে মাটির বিভিন্ন উপকরণ।

মাটির তৈরি ছোট টবের পাশাপাশি তারা এনেছে বিভিন্ন নান্দনিক ডিজাইনের বড় বড় টব। আছে ডিনার আইটেম, শোপিচ, টেরাকোটা, দেয়ালের সজ্জা, আয়না, ফুলদানি, কলমদানি, টেবিল শেড, ল্যাম্প শেড প্রভৃতি। এছাড়াও আছে পাটের তৈরি সিকা, থলে, ব্যাগ প্রভৃতি।    

স্বল্প খরচ, নান্দনিক এবং বাহারি ডিজাইনের ফলে বর্তমানে অন্দরমহল সাজাতে মৃত্তিকার তৈরি বিভিন্ন তৈজসপত্রের জুড়ি মেলা কঠিন। শুধু আসবাবপত্রই নয়, ঘরের দেয়ালটিকেও মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্রের মাধ্যমে দিতে পারে নতুন এক লুক। এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন বিভিন্ন পোড়ামাটির ফলক।

এসব মাটির তৈরি জিনিসপত্রের দরদাম বিষয়ে স্টলের দায়িত্বে থাকা সোহেল হোসেন বলেন, বড় ফুলের টবের দাম ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা।, ছোটগুলো ৫০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা, ল্যাম্প ১৫০০টাকা থেকে ২০০০টাকা।

এছাড়া আকার ও আকৃতি ভেদে মাটির থালার দাম পড়বে ৫০ থেকে ১৫০ টাকা, সরা ৮০ থেকে ২০০ টাকা, চামচ ২০ থেকে ১০০ টাকা, জগ ৫০ থেকে ২৫০ টাকা, গ্লাস ২০ থেকে ৬০ টাকা, প্লেট ৫০ থেকে ১৫০ টাকা, হাঁড়ি ১২০ থেকে ৪৫০ টাকা এবং লবণদানি পাওয়া যাবে ৩০ টাকা থেকে ৮০ টাকার মধ্যে।

মাটির সানকি আকারভেদে দাম পড়বে ২০০ থেকে ৫০০ টাকার মতো। এ ছাড়াও বিভিন্ন মনীষীর মুখায়ব, মাটির তৈরি চিত্রকর্ম ইত্যাদির দাম পড়বে ২০০ থেকে ৫০০ টাকার মতো।

পরিচর্যা মাটির তৈরি জিনিসপত্রগুলোর সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো এগুলো খুবই ভঙ্গুর, তাই খুব সাবধানে এগুলোকে নাড়াচাড়া করতে হবে। একথা জানিয়ে  সোহেল বলেন, গাছ কিনতে এসে আমাদের মাটির পণ্যও কেনার আগ্রহ দেখাচ্ছেন। কিন্তু ভারি হওয়ায় অনেকে কিনছেন না। শুধু দেখেই চলে যাচ্ছেন।

তবে রাজধানীর দোয়েল চত্বরে যেয়ে কেনার কথাও জানিয়েও এই স্টল ইনচার্জ বলেন, যারা মেলা থেকে কিনতে পারছেন না তারা দোয়েল চত্বরে যেয়ে কিনতে পারবেন। ওখানের স্টলগুলো আমাদের। দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশেও বিক্রি হচ্ছে ভোলা মৃৎশিল্পের এসব নানন্দিক সামগ্রী।’

৫জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে রাজধানীর আগারগাওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পাশে বিশাল মাঠ জুড়ে বসেছে মাসব্যাপী এই বৃক্ষমেলা। চলবে আগামী ৪ জুলাই পর্যন্ত। মেলায় সরকারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে মিলিয়ে ১১৭টি স্টল রয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের জন্য বৃক্ষমেলায় প্রবেশ একদম ফ্রি।

(ঢাকাটাইমস/২৮জুন/এসকেএস)