ইডি দপ্তরে হাজিরা দিলেন পি কে হালদারকাণ্ডে অভিযুক্ত পূর্ণিমা

প্রকাশ | ২৯ জুন ২০২২, ১২:৩০ | আপডেট: ২৯ জুন ২০২২, ১২:৫৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা পাচারের পর ভারতে গ্রেপ্তার পি কে হালদারের অন্যতম সহযোগী স্বপন মৈত্রের স্ত্রী পূর্ণিমা হালদার ওরফে পূর্ণিমা মিস্ত্রি দেশটির অর্থ সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনী এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) দপ্তরে হাজিরা দিয়েছেন।

পশ্চিমবঙ্গের সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে আইনজীবী আলী হায়দারকে সঙ্গে করে ইডি দপ্তরে আসেন পূর্ণিমা।

এ সময় সংবাদমাধ্যমের কাছে পূর্ণিমা দাবি করেন, তাদের ফাঁসানো হয়েছে। অবশ্য তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলা নিয়ে মুখ খোলেননি।

পূর্ণিমা মিস্ত্রি বাংলাদেশেও দুদকের এজাহারভুক্ত আসামি।

গত ২৫ জুন বিকালে পূর্ণিমার খোঁজে পশ্চিমবঙ্গের অশোকনগর পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাড়িতে যান ইডি কর্মকর্তারা। তবে বাড়িতে তাকে না পেয়ে দেয়ালে নোটিশ লাগিয়ে চলে যান কর্মকর্তারা।

মূলত তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কলকাতার সল্টলেকে ইডির পূর্বাঞ্চলীয় সদর দপ্তরে আসতে বলার জন্য নোটিশ নিয়ে যান কর্মকর্তারা।

এছাড়া হাজিরার সময় নিজের ভোটার আইডি কার্ড, আধার কার্ড, ব্যাংকের পাস বই এবং বারাসাতে তাদের নামে থাকা একটি ফ্ল্যাটের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে আসতে বলা হয়।

ভারতে পি কে হালদারের অন্যতম সহযোগী স্বপন মৈত্র ওরফে স্বপন মিস্ত্রি এবং দেবর উত্তম মৈত্র ওরফে উত্তম মিস্ত্রি। গত মাসে পি কে হালদার ও তার সহযোগীরা আটকের পরই আত্মগোপনে চলে যান পূর্ণিমা ও তার জা রচনা।

গত মাসে পশ্চিমবঙ্গে টানা দুই দিনের অভিযান চালিয়ে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার ওরফে পি কে হালদারসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে ইডি।

গ্রেপ্তারের পর এক বিবৃতিতে ইডি জানিয়েছিল, হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারকারী পি কে হালদার নাম পাল্টে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশে বসবাস করতেন। প্রদেশের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার অশোক নগরের একটি বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি।

ইডি জানিয়েছিল, ব্যক্তিগত আইনজীবী সুকুমার মৃধার সহায়তায় পি কে হালদার পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের একাধিক রাজ্যে বিপুল সম্পদ করেছেন। বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে অর্থপাচারের মাধ্যমে ভারতে একাধিক অভিজাত বাড়িসহ বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন বলে খোঁজ পেয়েছে ইডি।

দেশটির কেন্দ্রীয় এই তদন্ত সংস্থা জানিয়েছিল, তারা ইতোমধ্যে পি কে হালদারের কাছ থেকে বেশ কিছু নথি উদ্ধার করেছেন। এসব নথিতে প্রাথমিকভাবে ভারতে তার ২০ থেকে ২৫টির মতো বাড়ির মালিকানার তথ্য মিলেছে। এছাড়া অভিযানের সময় পি কে হালদারের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থও জব্দ করা হয়েছে।

বিবৃতিতে ইডি বলেছে, বাংলাদেশি নাগরিক প্রশান্ত কুমার হালদার নিজেকে শিব শঙ্কর হালদার নামে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতেন।

বাংলাদেশি এই অর্থপাচারকারী পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য থেকে ভারতীয় রেশন কার্ড, ভারতীয় ভোটার আইডি কার্ড, প্যান এবং আধার কার্ডও সংগ্রহ করেছিলেন। প্রশান্ত কুমার হালদারের অন্য সহযোগীরাও ভারতীয় এসব কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে সংগ্রহ করেন।

পিকে হালদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মোট ৩৬টি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান খুলে ব্যাংক ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কমপক্ষে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ, অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে এই মামলাগুলো করা হয়েছে।

পি কে হালদারের সহযোগী হিসেবে পরিচিত ২৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় বাংলাদেশের উচ্চ আদালত। এ তালিকায় সুকুমার ও তার মেয়ে অনিন্দিতাও ছিলেন। পরে এ দু’জনসহ ৬২ জনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টও জব্দ করে দুদক।

(ঢাকাটাইমস/২৯জুন/আরআর)