ফুল আমাগোরে বাঁচাই রাখছে

প্রকাশ | ২৯ জুন ২০২২, ২১:২২

পুলক রাজ, ঢাকাটাইমস

তের বছরের কিশোরী সুলতানা। এই বয়সের শিশুদের যখন লেখাপড়া আর আনন্দ হই উল্লোড় করে বেড়ানোর কথা। সেখানে সুলতানা কাঁধে তুলে নিয়েছে সংসারের ভার। রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, টিএসসিসহ ঢাকা শহরের বিভিন্ন পার্ক ঘুরে ঘুরে ফুল বিক্রি করে সুলতানা।

টিএসসিতে ফুল বিক্রি করার সময় সুলতানার সঙ্গে কথা হয় ঢাকাটাইমসের প্রতিবেদকের। সুলতানা জানায়, মালিবাগের বস্তিতে সে থাকে। কিছুদিন হলো বাবা মারা গেছে। মা বাসাবাড়িতে কাজ কাজ করেন। কিন্তু মায়ের কাজ এখন বন্ধ। কারণ সুলতানার মায়ের কোলে এখন ছয় মাসের বোন। তাকে দেখভাল করার জন্য কাজে যাওয়া উপায় নেই। সুলতানার মা ও বোনসহ তিন জনের সংসার ।সুলতানার ফুল বিক্রির আয়েই চলে সংসার।

সুলতানা বলেন, ‘ফুল খুব পবিত্র জিনিস। ফুলকে আমি খুবই ভালোবাসি।এই ফুলই আমাগোরে বাঁচাই রাখিচে। আমি মাইনষের কাছে হাত পাইত্তা ভিক্ষে করি না। আমার থ্যাইকা মানুষ তাদের পছন্দের ফুল কেনে। ফুল বেচে ডেলি দেড়শো থেকে তিনশো টাকা আয় হয়। এই টাকা মায়ের হাতে তুইল্যা দিই।এইডাই আমার সবচেয়ে বড় সুখ।

ফুল বিক্রি করতে কোনো সমস্যায় পড়তে হয় কিনা জানতে চাইলে সুলতানা ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘ফুল বিক্রি করতে গিয়ে ম্যালা সময় মাইনষের নানা অকথা কুকথা শুনতে হয়। বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার কথা বলে, লোভ দেখায়।ওদের হাত থাইকা নিজেকে বাঁচাইয়া চলি। ওইসব পশুদের হাত থাইকা বাঁচার জন্যি অনেক কায়দা করে চলতি হয়। একদিকে আমার সংসার  আর একদিক খারাপ মানুষের কুনজর থ্যাইকা নিজেরে সামলাইয়া চলন অনেক কষ্টের।এইভাবেই  আমাগোরে দিনরাত ফুল বিক্রি করণ লাগে।আমার সাথের অনেকেই এদের জন্যি খারাপ পথে গেছেগা।

 

সুলতানা ঢাকা টাইমসের এই প্রতিবেদককে আরও বলেন,  বাবা মারা যাওনের আগে মা যখন মানুষের বাড়ি কাজ করতো, তখন থ্যাইকাই আমি ফুল বিক্রি করি। অহন এই সংসার একার আমার টেকায় চলে। অনেক স্বপ্ন ছিল  পড়ালেখা করুম। সবার কি আর সব স্বপন পূরণ হয়! তয় আমার বোনডারে লেখাপড়া শিখামুই। এইডা আমার আর একটা স্বপ্ন।  

(ঢাকাটাইম/২৯জুন/পিআর/এসকেএস)