খুবির শিক্ষক নিপীড়নের ঘটনায় তদন্ত চায় মিডিয়া এডুকেটরস নেটওয়ার্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ৩০ জুন ২০২২, ২০:০২

সম্প্রতি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির ঘটনায় উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন নিরোধ কমিটি যে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে, তাতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দেশের পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম বিষয়ক শিক্ষকদের প্ল্যাটফর্ম মিডিয়া এডুকেটরস নেটওয়ার্ক। এ ঘটনায় তদন্ত দাবি করেছে সংগঠনটি।

বৃহস্পতিবার ৫১ জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে মিডিয়া এডুকেটরস নেটওয়ার্ক জানায়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায় যে, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের একজন নারী শিক্ষক একই বিভাগের একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি, শারীরিক ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগ করেন। সেই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন নিরোধ কমিটি অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

কিন্তু ঘটনার ১০ মাস পর নিরোধ কমিটি বলছে, তারা সেই অভিযোগ আমলেই নেয়নি। তাদের বক্তব্য, ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে ঘটেছে; ফলে তাদের তা এখতিয়ারভুক্ত নয়। একই সঙ্গে প্রতিবেদনটিতে তারা বলেন যে, এ ঘটনায় শারীরিক ও মানসিক নিপীড়নের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে গত ৮ জুন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট অভিযুক্ত শিক্ষকের বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করে।

মিডিয়া এডুকেটরস নেটওয়ার্ক বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন নিরোধ কমিটির প্রতিবেদন ও বক্তব্যে স্ববিরোধিতা রয়েছে। একদিকে তারা বললেন, ঘটনাস্থল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের বলে তাদের আওতাভুক্ত নয়। অন্যদিকে অভিযোগের পক্ষে প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে অভিযুক্তকে রেহাই দেওয়ার সুপারিশ করলেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে ঘটেছে বলে তদন্ত এড়ানোর সুযোগ নেই। যেহেতু দুজন শিক্ষকই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিজীবী, সেহেতু ঘটনাস্থল যেখানেই হোক না কেন; বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ঘটনাটির তদন্ত করতে হবে। আর যৌন হয়রানির ঘটনায় অভিযোগকারী যখনই অভিযোগ করুক না কেন, অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত করতে হয়। ফলে সময়ের দোহাই দিয়েও ঘটনাটি এড়ানোর সুযোগ নেই।‘

‘দ্বিতীয়ত, অভিযোগটি আওতাভুক্ত কি না, সেটি বুঝতে কমিটির ১০ মাস সময়ের প্রয়োজন হয় না। কারণ অভিযোগপত্রে ঘটনাস্থলের কথা উল্লেখ ছিল। তদন্ত কমিটির প্রধান সে সময়ে গণমাধ্যমে তদন্ত নিয়ে বক্তব্যও দিয়েছেন। কমিটি তিনবার ভিকটিমকে ডেকে নিয়ে স্বাক্ষ্য নিয়েছে। তার কাছ থেকে প্রমাণাদি নিয়েছে। ফলে ১০ মাস পরে এসে তদন্ত হয়নি বলার সুযোগ নেই।’

বিবৃতিতে শিক্ষকরা বলেন, ‘ভিকটিমের অভিযোগপত্র অনুযায়ী জানা যায়, ঘটনার পরও অভিযুক্ত বারবার ভিকটিমকে ফোন করে এবং ক্ষুদে বার্তা দিয়ে উত্ত্যক্ত করেন। এ সংক্রান্ত প্রমাণাদিও নিরোধ কমিটিকে দেওয়া হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানির নীতিমালার ৩ (গ) ধারা অনুযায়ী, কাউকে মোবাইল ফোন, ইমেইল বা ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে উত্যক্ত করলে সেটি বিচারের আওতায় পড়ে। এ ধারা অনুযায়ীও উক্ত ঘটনাটি তদন্ত ও বিচারের আওতায় পড়ে।’

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের এই সংগঠনের দাবি, অভিযোগকারী শিক্ষকের অভিযোগটি অবিলম্বে আমলে নিয়ে তদন্ত করতে হবে। তদন্তের মাধ্যমে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তকে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। অভিযোগটি মিথ্যা হলে সেটিও তদন্ত করে খোলাসা করা হোক। তাতে অভিযুক্তেরও অধিকার নিশ্চিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে যৌন হয়রানির ঘটনার তদন্ত না হলে এই ধরনের অপকর্ম উৎসাহিত হবে বলে মনে করে শিক্ষকদের এই সংগঠন।

(ঢাকাটাইমস/৩০জুন/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিক্ষা এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :