জিডির তদন্তে নেমে বেরিয়ে এলো অটোরিকশা চোর চক্রের নেটওয়ার্ক

প্রকাশ | ৩০ জুন ২০২২, ২২:৪৪

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ময়মনসিংহ এলাকা থেকে অটোরিকশা চুরির ঘটনায় জড়িত ছিনতাইকারী প্রতারক চক্রের সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেসটিগেশন (পিবিআই) ময়মনসিংহ জেলা। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- মো. মতিউর রহমান ওরফে মতি মিয়া, রায়হান মিয়া ও রিপন মিয়া।  বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পিবিআইর সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

পিবিআই জানায়, ২৪ জুন সকাল ৭টার দিকে রায়হান মিয়া নামের এক যুবক অটোরিকশা নিয়ে বাসা থেকে বের হয়। দিন শেষে রাত গড়িয়ে গেলেও তিনি বাড়িতে ফেরেননি। পরে তার পরিবারের লোকজন মোবাইলে ফোন করে তার ফোন বন্ধ পায়। পরিবারের লোকজন তাকে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িসহ সম্ভাব্য সব জায়গায় খুঁজে না পেয়ে গত ২৫ জুন ঈশ্বরগঞ্জ থানায় নিখোঁজ জিডি করেন। রায়হানের পরিবারের ধারণা চক্রের সদস্যরা তার অটোরিকশা চুরি অথবা ছিনতাই করতে তাকে হত্যা করেছে।

বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে ময়মনসিংহ জেলার  পিবিআই এই জিডির বিষয়ে তদন্ত শুরু করে। তদন্তের একপর্যায়ে পিবিআইয়ের চৌকস দল তথ্যের ভিত্তিতে ও পিবিআই সদর দপ্তরের হেডকোয়ার্টার্সের এলআইসি দলের সহযোগিতা নেয়। গত ২৮ জুন দিবাগত রাতে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানা এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকা রায়হান মিয়াকে উদ্ধার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে রায়হান স্বীকার করেন, তিনি নিজেই অটোরিকশাটি কৌশলে চুরি করে মো. মতিউর রহমান ওরফে মতির মাধ্যমে ১৭ হাজার টাকায় তারাইলে বিক্রি করেছেন। মতি মিয়া সেখান থেকে তিন হাজার টাকা নিজের জন্য রেখে বাকি টাকা রায়হানকে দিয়ে দেন। রায়হান ওই ১৪ হাজার টাকার মধ্যে ১২ হাজার টাকা দিয়ে একটি স্মার্টফোন কেনেন। এছাড়াও বাকি টাকা নিয়ে নারায়ণগঞ্জে চলে যান। সেখানে গিয়ে তিনি একটি গোডাউনে লেবারের কাজ নেন।

গ্রেপ্তার রায়হান মিয়ার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পিবিআই অভিযান চালিয়ে মো. মতিউর রহমান ওরফে মতি মিয়াকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার মো. মতিউর রহমান ওরফে মতি মিয়া ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার বিষ্ণপুর গ্রামের মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে।

পিবিআইর তদন্তকালে অটোরিকশা ছিনতাই চক্রের পুরো সিন্ডিকেটকে শনাক্তের জন্য গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত রাখে। গ্রেপ্তার মতি মিয়াকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন যে, এই  চোরাই অটোরিকশাটি তিনি কিশোরগঞ্জের তারাইল থানার কাজলা গ্রামের মো. রিপন মিয়ার বাবা আবুল হাশেমের কাছে বিক্রি করেছেন।

তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পিবিআই অভিযান চালিয়ে কিশোরগঞ্জের তারাইল থেকে চোরাই অটোরিকশা কেনা-বেচা চক্রের অপর সদস্য মো. রিপন মিয়াকে গ্রেপ্তার  করে।

গ্রেপ্তার রিপন মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এই চোরাই অটোরিকশা  কয়েকটি হাত ঘুরে নরসিংদীর চোরাইমাল কেনা-বেচার চক্রের কাছে হস্তান্তরের পরিকল্পনা ছিল। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পিবিআইয়ের দল ওই  চোরাই অটোরিকশাটি কিশোরগঞ্জ শহরের যশোদল এলাকা থেকে উদ্ধার করে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পিবিআই জানায়, তারা সংঘবদ্ধ অটোরিকশা চোর চক্রের সদস্য। তারা অভ্যাসগতভাবে কৌশলে অটোরিকশা চুরি করে বিক্রি করে।

চুরি যাওয়া অটোরিকশার মালিক মোছা. রুনা আক্তারের কাছে অটোরিকশাটি হস্তান্তর করে পিবিআই।

(ঢাকাটাইমস/৩০জুন/এএ/কেএম)