জুনেই সড়কে গেছে ১০৪৭ প্রাণ

প্রকাশ | ০১ জুলাই ২০২২, ১৮:৫৪

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

সারা দেশের সড়ক-মহাসড়ক প্রাণঘাতী দুর্ঘটনায় গত জুন মাসে এক হাজার ৪৭ জন মানুষ নিহত হয়েছেন। একই সময়ে আহত হয়েছেন দুই হাজার ৬২২ জন। এই একমাসে সড়কে  ছোট বড় তিন হাজার ১১০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটে।

শুক্রবার (১ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সেভ দ্য রোড’।  ২১টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত গত এক মাসের সংবাদের উপর চালানো জরিপের ভিত্তিতে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংগঠনটি। গণমাধ্যমের সামনে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন সংগঠনটির মহাসচিব শান্তা ফারজানা।

সেভ দ্য রোডের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত জুন মাসে শুধু মোটর বাইক দুর্ঘটনায় ২৭৬ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৭৫২ জন। আর এই সময়ে মোট ৮৫৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় পরে। জুন মাসে ট্রাক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৫৬ জন, আহত হয়েছেন ৪৫৬ জন। আর এই সময়ে ৬১৮টি দুর্ঘটনায় খবর প্রকাশিত হয়েছে গণমাধ্যমে।

প্রতিবেদনে চলতি বছরে মোট ৯৩৮টি বাস দুর্ঘটনার খবর প্রকশের কথা বলা হয়। এসব দুর্ঘটনায় ৪২০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৭৫১ জন। আর এই সময়ে পাড়া মহল্লায় অসাবধানতার কারণে লরি, পিকআপভ্যান ব্যাটারি ও সিএনজিচালিত ও রিকশা-সাইকেলের ৬৯৬টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছেন ১৯৫ ও আহত হয়েছেন ৬৬৩ জন।

সড়ক পথ বাদে চলতি বছরের জুনে ঘটে যাওয়া নৌ ও রেল পথের বিভিন্ন দুর্ঘটনার জরিপ উঠে আসে সংগঠনটির প্রতিবেদনে। দেখা যায় শুধু জুন মাসেই নৌ পথে ১২২টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হন ২৪ জন এবং আহত হন ৪৭৭ জন। অন্য দিকে জুনে রেল দুর্ঘটনায় ১৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। আর আহত হন ১৭২ জন। এই সময়ে মোট ১৯৭টি রেল দুর্ঘটনা ঘটে বলে উল্লেখ করা হয় সেভ দ্য রোডের প্রতিবেদনে।

সড়কে এসব দুর্ঘটনা ও বিপুল প্রাণহানী পেছনে বেশ কিছু কারণ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপন করে সংগঠনিটি। এর মধ্যে দ্রুত গতিতে চালানো, ট্রাফিক আইন না মানা, হেলমেট ব্যবহার না করা, সেই সঙ্গে অসাবধানতাবসত গাড়ি চালানোকে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সরকারে কাছে সাত দফা দাবি জানানো হয় সংগঠনটির পক্ষ থেকে। দাবিগুলো হলো- ১১ জুলাইকে ‘দুর্ঘটনামুক্ত পথ দিবস’ ঘোষণা করা। সেদিন বঙ্গবন্ধু ফুটবল লীগের খেলা শেষে বাড়ি ফেরার পথে সড়কপথ দুর্ঘটনায় নিহত অর্ধশত শিশু-কিশোর। তাদের স্মরণে একটি দিবস রাখার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন সংগঠকরা।

এছাড়া ফুটপাত দখলমুক্ত করা, সড়কপথে ধর্ষণ-হয়রানি রোধে ফিটনেসবিহীন বাহন নিষিদ্ধ এবং কমপক্ষে অষ্টমশ্রেণি উত্তীর্ণ ও জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া চালক-সহযোগী নিয়োগ বন্ধ করা, স্থল, নৌ, বিমান ও রেলপথ দুর্ঘটনায় নিহতদের সরকারিভাবে কমপক্ষে ১০ লাখ ও আহতদের ৩ লাখ টাকা ক্ষতি পূরণ দেওয়া, ট্রান্সপোর্ট ওয়াকার্স রুল' বাস্তবায়নের পাশাপাশি  ‘ট্রান্সপোর্ট পুলিশ ব্যাটালিয়ন’তৈরি করা,  সেই সঙ্গে পথ দুর্ঘটনার তদন্ত ও সাজা ত্বরান্বিত করার দাবি জানানো হয়।  

সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন সেভ দ্য রোডের চেয়ারম্যান ও সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জেড এম কামরুল আনাম, শ্রমিক নেতা ওসমান আলী, সেভ দ্য রোডের প্রতিষ্ঠাতা মোমিন মেহেদী, ভাইস চেয়ারম্যান বিকাশ রায়, শওকত হোসেন, জিয়াউর রহমান জিয়া, আইয়ুব রানা, সাংবাদিক আনজুমান আরা শিল্পী, ওয়াজেদ রানা প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/০১জুলাই/এসআর/কেএম)