‘৬ দফাকে কবর দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন হয় না’

প্রকাশ | ০১ জুলাই ২০২২, ২২:৩০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

‘উন্নয়নের যে কল্পকাহিনী শোনাচ্ছেন এগুলো জনগণের উন্নয়ন নয় আপনাদের সুবিধাভোগী দুর্নীতিবাজদের উন্নয়ন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে দুঃশাসনের রাজত্ব কায়েম করে মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার থেকে বহুদূর চলে গেছেন। ছয়দফাকে কবর দিয়েতো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন হয় না।’ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশ করে এসব কথা বলেছেন গণফোরাম একাংশের সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টু।

শুক্রবার সকালে রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশে (আইডিইবি) গণফোরাম ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্টু এসব কথা বলেন।

মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, ‘উৎপাদনহীন খাতে বরাদ্দের নামে মহা লুটপাট করছে। কিন্তু বেকার-যুবকদের জন্য কোনো কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগই নেই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে দুঃশাসনের রাজত্ব কায়েম করে মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার থেকে বহুদূর চলে গেছেন। ছয় দফাকে কবর দিয়েতো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন হয় না ‘

মন্টু বলেন, ‘পাকিস্তান আমলে ভোট-ভাতের অধিকার নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। আজ ৫০ বছর পরেও একইভাবে ভোটের অধিকার আদায়ে লড়াই করছি, বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করছি। তাহলে আপনারা কীভাবে কোন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের কথা বলছেন? মুক্তিযুদ্ধ কোটার নামে তরুণ মেধাবীদের দেশের সেবা করা ও নেওয়া থেকে বঞ্চিত করছেন। এটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হলো সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের মাধ্যমে কার্যকরী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘পাকিস্তানীরা দেশকে মেধা শূন্য করতে ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল। সেভাবেই বর্তমানে দেশ যাতে মেধাবীদের কর্তৃক পরিচালিত না হয় সেজন্য হাসিনা সরকার শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করছে। মানবিক মূল্যবোধ নষ্ট করতে আপনি সফল হয়েছেন, তার প্রমাণ শিক্ষকদের দেশের বিভিন্ন জায়গায় লাঞ্ছিত হতে হচ্ছে নিজ ছাত্র ও অন্যান্য সন্ত্রাসী বাহিনীর কাছে। আর এর অন্যতম কারণ রাষ্ট্রের বিচারহীনতা। আপনারা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি দাবি করে নিজেদের খেয়াল খুশি মতো যা ইচ্ছে তাই বলে ইতিহাস বিকৃত করছেন। ইতিহাস বিকৃতকারী সরকার হিসেবে বর্তমান অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকার ইতিহাসে কলঙ্কিত হয়ে থাকবে।’

সম্মেলনের উদ্বোধনকালে গণফোরাম নির্বাহী সভাপতি এডভোকেট মহসীন রশিদ বলেন, ‘রাষ্ট্রের অরাজকতা ভয়াবহ সংকটের দিকে ধাবিত করছে। আমরা যখন কেউ মুমূর্ষু হই তখন আমাদেরকে হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়া হয় ঠিক তেমনিভাবে একটা রাষ্ট্র যখন অর্থনৈতিকভাবে মুমূর্ষু হয়ে পড়ে তখন সে আইএমএফ এর কাছে অর্থের সহায়তা দাবি করে। আমাদের দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে পঙ্গু করে আইসিইউতে ভর্তি করেছে এই অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকার।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন গণফোরামের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব খান ফারুক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লতিফুল বারী হামিম, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ রওশন ইয়াজদানী, তথ্য ও গণমাধ্যম সম্পাদক মুহাম্মদ উল্লাহ মধু, মহিলা সম্পাদক নিলুফার ইয়াসমিন শাপলা, ছাত্র সম্পাদক মো. সানজিদ রহমান শুভ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য খলিলুর রহমান ঝান্টু, মতিউর রহমান খোকন, মো. ফারুক হোসেন, কামাল উদ্দিন সুমন, শেখ শহিদুল ইসলাম, অখিল কর্মকার, রিয়াদ হোসেন, নকিব আহমেদ, এশেক আলী আশিক, আনোয়ার ইবরাহীম প্রমুখ।

গণফোরাম ঢাকা মহানগর দক্ষিণের এই সম্মেলনে হাবিবুর রহমান বুলুকে সভাপতি ও মো. তাজুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়।

(ঢাকাটাইমস/০১জুলাই/কেআর/কেএম)