গাইবান্ধার যমুনায় তলিয়ে গেল স্কুল ভবন

প্রকাশ | ০২ জুলাই ২০২২, ২২:০১ | আপডেট: ০২ জুলাই ২০২২, ২২:০৩

গাইবান্ধা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

যমুনার ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার কাউয়াবাধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই তলা ভবনটি। শনিবার বিকালে ভবনটি বিকট শব্দে নদীতে তলিয়ে যাওয়ার একটি ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। পরে এই তথ্য নিশ্চিত করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মাসুম মিয়া।

শুক্রবার সন্ধ্যায় বিদ্যালয়ের একমাত্র ভবনটি ধসে যমুনায় তলিয়ে যায়। ১৫ দিন আগেও যমুনার নদীর ভাঙন এলাকা থেকে ১৫০ মিটার দূরত্বে ভবনটির অবস্থান ছিল। ২৬ জুন ভবনটি নিলামের সিদ্ধান্ত নেয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরপর কিছু অংশ ভাঙার কাজ চললেও হঠাৎভাঙনের তীব্রতায় পুরো ভবনটি চলে যায় নদীতে।

প্রধান শিক্ষক মাসুম মিয়া জানান, পানি কমায় যমুনার অব্যাহত ভাঙনের মুখে পড়ে ভবনটি। শুক্রবার সন্ধ্যায় ভবনটির পুরো অংশই নদীতে দেবে যায়। ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় কাউয়াবাধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। ২০০৯ সালে দ্বিতল ভবনটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়। এই ভবনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চলে আসছিল। কিন্তু এখন ভবনটি নদীতে তলিয়ে যাওয়ায় পাঠদান অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য আমিনুর রহমান বলেন, শুক্রবার বিকালে বিদ্যালয়ের ভবনটি দেখতে গিয়ে ছবি ও ভিডিও করি। সেখান থেকে ফেরার পরপরই ভবনটি নদীগর্ভে বিলীনের খবর পাই। বিদ্যালয়ের ৩৩ শতাংশ জমির মধ্যে ৩০ শতাংশ জমিই চলে গেছে নদীর বুকে। বর্তমানে বিদ্যালয়ে পাঠদানের কোন ভবন নেই। তবে পাশেই নিজের আরেকটি জমিতে বিকল্প ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ব্যবস্থা করা হবে। টিনসেট কিংবা অবকাঠামো নির্মাণে হাতে কোন অর্থ নেই। সরকারি সহযোগিতা না পেলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধের আশঙ্কা করছি।

বিদ্যালয়ের ভবনটি নিলামে ক্রয়ের ঠিকাদার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আড়াই লাখ টাকায় ক্রয়ের পর ভবনটি ভেঙে সরিয়ে নেয়ার কাজ চলছিল। কয়েকদিন ধরে শ্রমিকরা ভবনের কিছু ইট ও রড সরিয়ে নিলেও শুক্রবার সন্ধ্যার আগে তীব্র স্রোতে ভবনটি ভেঙে পড়ে নদীতে। নিলাম বিজ্ঞপ্তির অল্প সময় অর্থাৎ ৪-৫ দিনে ভবনটি সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি। ভবনটি রক্ষায় অন্তত ১৫ দিন আগে কর্তৃপক্ষের নিলাম বিজ্ঞপ্তি দেয়া দরকার ছিল।

ভবনটি ভেঙে সামান্য মালামাল সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে নিলামে নির্ধারিত অর্থ পরিশোধে তাকে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। এজন্য বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে তিনি আলোচনার কথা জানান। 

যমুনার ভাঙন আতঙ্কে হাজারো মানুষের নির্ঘুম রাত কাটছে বলে জানান ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিএম সেলিম পারভেজ।

তিনি বলেন, প্রতি বছরই নদী ভাঙনের তীব্রতার সঙ্গে ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে শতশত পরিবার। কিন্তু নেয়া হয়নি ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী কোন পদক্ষেপ। এবারও ভাঙন রোধে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের উপরেই বিশ্বাস নিয়ে আছি। তবে জনগণের জানমালের রক্ষার দ্রুতই পরিকল্পিত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/০২জুলাই/এলএ)