ট্রেনে ঈদযাত্রা: দীর্ঘ অপেক্ষায়ও কেন টিকিট মিলছে না?

প্রকাশ | ০৩ জুলাই ২০২২, ১২:৩৮ | আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২২, ১২:৪১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কিনতে রবিবার তৃতীয় দিনেও রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে টিকিটপ্রত্যাশীদের চাপ বেড়েছে। একইসঙ্গে বেড়েছে দুর্ভোগ। অনেকেই শনিবার থেকে অবস্থান নিয়েছেন স্টেশনে। অনেক দাড়িয়েছেন রবিাবর ভোরে। তারপরও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত  টিকিট। যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন টিকিট কালোবাজারির। স্টেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, চাহিদার তুলনা টিকিট অনেক। কম।
 
যাত্রীদের কাছ থেকে অভিযোগ উঠেছে, কমলাপুর রেলস্টেশনে ট্রেনের টিকিটে ছোঁয়া লেগেছে কালোবাজারির। দিন-রাত টিকিট কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়েও টিকিট না পাওয়ায় কালোবাজারির অভিযোগ তুলেছেন যাত্রীরা।
 
অভিযোগ অস্বীকার করে স্টেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, চাহিদার চেয়ে টিকিটের পরিমাণ কম হওয়ায় যাত্রীরা টিকিট পাচ্ছেন না।
 
বিষয়টি ‘স্বাভাবিক’ ঘটনা বলে অভিহিত করেছেন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার।
 
কমলাপুরে ভোর সাড়ে ৫টায় টিকিট কিনতে লাইনে দাঁড়িয়েও টিকিট পাননি রংপুরের যাত্রী জসিম উদ্দিন । তিনি বলেন, ‘এতো ভোরে দাঁড়িয়েও টিকিট না পাওয়ার অর্থ হল টিকিট কালোবাজারি হচ্ছে।’
  
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ঈদ উপলক্ষে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া ৩৮ আন্তঃনগর ট্রেনের মোট ২৭ হাজার ৮৮১টি অগ্রিম টিকিট বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে ১৩ হাজার ৯০টি টিকিট ছয়টি স্টেশন থেকে বিক্রি করা হচ্ছে। বাকিগুলো বিক্রি হচ্ছে অনলাইনে ওয়েবসাইট ও অ্যাপস থেকে। স্টেশনের টিকিটগুলোর মধ্যে কমলাপুর ও এর সংলগ্ন ৮ নম্বর প্লাটফরম (শহরতলী স্টেশন) থেকে ৬৮০০ টিকিট, বাকি পাঁচটি (বিমানবন্দর, ক্যান্টনমেন্ট, তেজগাঁও ও ফুলবাড়িয়া) স্টেশনের কাউন্টার থেকে বিক্রি করা হচ্ছে সাত হাজার ১০০ টিকিট। 
 
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভোর থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মের বাইরে চলে গেছে মানুষের সারি। অনেকেই স্টেশনের বিভিন্ন জায়গায় ক্লান্ত হয়ে বসে আছেন। টিকিটের জন্য যারা সারির সামনে ছিলেন তারা বলছেন, শনিবার থেকে রেলস্টেশনে সারিতে দাঁড়িয়ে আছেন তারা। সারির পেছনে যারা রয়েছেন, তারা ভোরে এসে দাঁড়িয়েছেন।
 
শফিুকুল ইসলাম নামে একজন টিকিটপ্রত্যাশী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমার বাড়ি নীলফামারী। এই ঈদে পরিবারের সঙ্গে আনন্দ করতে যাব। এত লম্বা লাইন দেখে তো ভয় লাগছে। আজ টিকিট পেয়ে গেলে খুব ভালো হতো। কপাল যদি ভালো থাকে আজকে পেয়ে যাব। কিন্তু সম্ভাবনা খুবই কম।’
 
সাকিব আহমেদ নামে অন্য একজন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমি সৈয়দপুরের টিকিটের জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। ভোর থেকে দাঁড়িয়ে আছি। যত সময় যাচ্ছে লাইন তত দীর্ঘ হচ্ছে। দাঁড়িয়ে থাকতে যে কত কষ্ট আমার মতো যারা দাঁড়িয়ে আছেন তারাই বুঝতে পারছেন।’
 
সারিতে দাঁড়ানো মনির হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘প্রতি বছর ঈদে এরকম দুর্ভোগ লেগেই থাকে। রংপুর যেতে যে কষ্ট লাগে, এর চেয়ে তো কলকাতা থেকে চলে আসতে পারব দুর্ভোগ ছাড়া। আমাদের দেশে ট্রেনের খুব খারাপ অবস্থা। কবে এসব দুর্ভোগ শেষ হবে আল্লাহ্ জানেন।
 
(ঢাকাটাইমস/০৩জুলাই/পিআর/এফএ)