দেবিদ্বারে কমিটি ঘোষণা নিয়ে এমপি-উপজেলা চেয়ারম্যান মুখোমুখি, বিক্ষোভ-অবরোধ

কুমিল্লা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৩ জুলাই ২০২২, ২২:০১ | প্রকাশিত : ০৩ জুলাই ২০২২, ২১:১৮

কুমিল্লার দেবীদ্বারের বরকামতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন শেষে কমিটি ঘোষণা না দেয়ায় স্থানীয় এমপিসহ জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দকে কয়েকঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনা ঘটেছে। উপজেলা চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় আ.লীগের নেতা-কর্মী ও সম্মেলনের কাউন্সিলররা তাদের অবরুদ্ধ করেন।

শনিবার উপজেলার নবিয়াবাদ কুমিল্লা মডেল কলেজ মাঠে আয়োজিত দেবীদ্বার উপজেলার বরকামতা ইউনিয়ন আ.লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে কাউন্সিল অধিবেশনে কমিটি ঘোষণা নিয়ে এ ঘটনা ঘটে।

রাত সাড়ে ৮টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত এমপিসহ জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন স্ট্যাটাস ও লাইভে প্রচার হতে দেখা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্মেলন শেষে কমিটি ঘোষণা না করেই চলে যাওয়ার সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী ‘দেবীদ্বার চান্দিনা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। তারা এমপিসহ অনেক নেতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে বিষয়টি জানানো হলে তাদের হস্তক্ষেপে রাত সাড়ে ১০টার দিকে কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। পরে পুলিশের নিরাপত্তা প্রহরায় স্থানীয় এমপি, জেলা এবং উপজেলার নেতৃবৃন্দ এলাকা ত্যাগ করেন।

নেতাকর্মীরা জানান, ঘটনা শোনার পর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও মাহববুল আলম হানিফের হস্তক্ষেপে আওয়ামী লীড়ের কুমিল্লা (উ.) জেলা সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাস্টার সভাপতি পদে মো. শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক পদে মো. রুকুনুজ্জামানের নাম ঘোষণা করেন।

এ ব্যাপারে দেবীদ্বার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ কুমিল্লা (উ.) জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সম্মেলনে প্রার্থীদের মধ্যে সমোঝোতা না হওয়ায় কাউন্সিলররা ভোট চেয়েছিল। তখন এমপি সাহেব, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ও দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা বলেন ঐক্যবদ্ধভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে কমিটি ঘোষণা করবেন। অতঃপর নেতৃবৃন্দরা সভাপতি পদে শাহ আলম এবং সাধারণ সম্পাদক পদে রোকনুজ্জামানকে মনোনীত করেন। তারপর কমিটি ঘোষণা না দিয়ে এমপি চলে যেতে চাইলে নেতা-কর্মীরা পথ অবরোধ করে দেন। শেষে কমিটি ঘোষণা করা হয়।’

জেলা আওয়ামী লীগ সহসভাপতি শেখ আব্দুল আউয়াল বলেন, সভাপতি পদে পাঁচজন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে তিনজন প্রতিদ্বন্দী হওয়ায় ওনাদের আলাদাভাবে একক প্রার্থী করতে বৈঠকে বসাই। সমোঝোতায় না আসায় আমরা এমপি সাহেব, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, জেলা আওয়ামী লীগের তিনজন সহ-সভাপতি উপজেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, সাধারণ সম্পাদককে উপজেলা সাধারণ সম্পাদকসহ সাতজনকে নিয়ে বসি। আমরা কাউন্সলরদের পছন্দ অনুযায়ী সভাপতি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে ঘোষণা দেয়ার চেষ্টা করি। এ সময় এমপি সাহেব কমিটি ঘোষণা দেয়ার পক্ষে না থাকায় এবং ঢাকায় যেয়ে দু’দিন পর কমিটি ঘোষণার কথা বলায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।’

কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাস্টার বলেন, ‘সর্বশেষ নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্তটি এমপি সাহেবের মাধ্যমে ঘোষণা দিতে বললে এমপি সাহেব এখানে ঘোষণা না দিয়ে দু’দিন পর ঘোষণা দিতে বলেন। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা কমিটি ঘোষণার দাবিতে এমপি সাহেবের গাড়ি অবরোধ করে রাখলে আমি মীমাংসার চেষ্টা করি। পরে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সেলিম ও যুগ্মসম্পাদক মাহবুব উল হানিফ এর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা নির্দেশ দিলে আমি কমিটি ঘোষণা দেই। যদিও কমিটি ঘোষণা দেয়ার কথা উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের। ওরা পালিয়ে যাওয়ায় আমাকে কমিটি ঘোষণা দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়। পরে পুলিশ পাহারায় এমপি সাহেবকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিই।

‘এমপি সাহেব ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের ইগোর কারণেই এ উদ্ভট পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, যা দলের জন্য প্রশ্নবিদ্ধ’-বলেন তিনি।

জানা গেছে, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়নের সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/০৩জুলাই/এমএইচ/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :