মাগুরা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ে অনিয়মের অভিযোগে দুজন সাময়িক বরখাস্ত

আব্দুল আজিজ,মাগুরা
 | প্রকাশিত : ০৬ জুলাই ২০২২, ১৩:০২

মাগুরা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের প্রধান সহকারী সৈয়দা সানিয়া আক্তার ও অফিস সহায়ক মো. আলমগীর হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর বিধি ৩ এর (খ) ও (ঘ) ধারার আওতায় অসদাচারণ ও দুর্নীতির অভিযোগে একই বিধিমালার ১২(১) ধারা মোতাবেক অসদাচারণ ও দুর্নীতির অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

জানা যায়, মাগুরা সদর এলএসডিতে আমন ২১/২২ সংগ্রহ মৌসুমে সংগৃহিত ধান ছাঁটাইয়ের বরাদ্দ প্রক্রিয়ায় চারটি মিলের অনুকূলে বরাদ্দ প্রদানের ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মেসার্স ওসমান রাইস মিল, প্রোপাইটর মো. সাব্বির আহমেদ নাজমুল, বড় বেরইল, মাগুরা ও

মেসার্স রবীন্দ্র অনিমা রাইস মিল, প্রোপাইটর, রথীন্দ্রনাথ দত্ত, গাংনালিয়া, মাগুরা এর অনুকূলে যথাক্রমে ৫৫ হাজার মেট্রিকটন করে মোট এক লাখ ১০ হাজার মেট্রিকটন আমন/২০২১-২০২২ ধানের জমানতের বত্রিশ লাখ ৬৭ হাজার টাকার পে-অর্ডার গ্রহণ না করে ও চুক্তিপত্রে কাল্পনিক/ভুয়া পে-অর্ডার নম্বর, তারিখ, ব্যাংকের নাম ও টাকার পরিমাণ উল্লেখ করে ধান ছাটাইয়ের বরাদ্দ আদেশ প্রদান করা হয়েছে।

এছাড়াও মেসার্স ভাই ভাই রাইসমিল, প্রোপাইটর, তৈয়েবুর রহমান, কুশাবাড়িয়া, মাগুরা ও মেসার্স শহীদ রাইসমিল, প্রোপাইটর. মো. শহিদুল ইসলাম, কাটাখালি, মাগুরা এর অনুকূলে যথাক্রমে ৪৫০০০ ও ১৫০০ মেট্রিক টন মোট ৬০ হাজার মেট্রিক টন আমন/২০২১-২০২২ ধানের জমানত হিসাবে কয়েকটি পে-অর্ডার জমা দিয়ে চুক্তিপত্র সম্পাদন করে এলএসডিতে ফলিত চাল জমা দানের পূর্বেই জমানত অবমুক্ত করে নেওয়া হয়েছে।

অফিস সহায়ক মো. আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে ও প্রধান সরকারী সৈয়দা সানিয়া আক্তার এর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় মিল মালিকের সঙ্গে যোগসাজস করে দুটি মিলের জমানতের পে-অর্ডার গ্রহণ না করেন। এবং দুটি মিলের ফলিত চাল গুদামের সরবরাহ দেয়ার পূর্বেই জমানতের পে-অর্ডার মিল মালিককে ফেরত প্রদান করেছেন।

সৈয়দা সানিয়া আক্তার ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ডিসিফুড স্যার পিয়ন মো. আলমঘীর হোসেনকে দিয়ে বিডি, পে-অর্ডার, চুক্তিপত্র, বরাদ্দপত্রের কাজ করায়। কম্পিউটার সংক্রান্ত কাজ বাদে অফিসের সকল কাজ প্রায় পিয়ন আলমগীর হোসেন করে। আমি শুধু কম্পিউটারে কাজ করি। আমাকে যা দেয় তা আমি সরল বিশ্বাসে কম্পিউটারে লেখে দিই। ডিসিফুড ও পিয়ন দুজন মিলে আমাকে ফাঁসায় দিছে।’

পিয়ন মো. আলমগীর হোসেন ডেস্কে কাজ করার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘ভুয়া বিডি দিয়ে ধান নিয়ে গেছে। বিডি যাচাই না করার কারণে আমরা দায়ী হয়ে গেছি। বিডি আমাদের লেখে দেওয়ার কথা। কিন্তু আমরা বিডি লিখে দেয়নি। পার্টি লিখে নিয়ে এসেছে। দায়িত্ব অবহেলার কারণে আমাকে সাময়িক বরখাস্ত ও মোংলায় বদলি করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে মাগুরা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জানান, এখানে আমি গত ১৯ জুন ২০২২ ইং যোগদান করছি। আমার আগে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো.হাফিজুর রহমানের দায়িত্ব কালিন ঘটনা। খুলনা অফিস প্রধান সহকারী সৈয়দা সানিয়া আক্তার ও পিয়ন মো. আলমগীর হোসেন বরখাস্ত করেছে।

উল্লেখ্য, মাগুরা সদর এলএসডিতে আমন ২০২১/২২ মৌসুমে সংগৃহিত ধান ছাঁটাইয়ের নিমিত্তে চুক্তিবদ্ধ মিলার কর্তৃক উত্তোলনের পর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও উক্ত ধানের রেশিও মোতাবেক ফলিত চাল সংশ্লিষ্ট গুদামে সরবরাহ প্রদান করা হয়নি। ফলে কারণ ও সংগৃহীত ধান মিলের অনুকূলে বরাদ্দ প্রদান কার্যক্রমে কোনো অনিয়ম সংগঠিত হয়েছে কিনা তা সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য এ কার্যালয়ের ২৬/৬/২০২২ তারিখের ১৩,০১,০০০০,২৩০,২৭,০০৮,২২,১৪৪০ নং স্মারকে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটির গঠন করা হয়। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, কুষ্টিয়া তার কার্যালয়ের ৩০/০৬/২০২২ ইং তারিখের ১৩,০৫,৫০০০,০০২,১১.০০২,২১,১৫০৯ নং স্মারকে উক্ত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।

(ঢাকাটাইমস/৬জুলাই/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :