সাবেক র‌্যাব কর্মকর্তার অ্যাকাউন্ট নিয়ে প্রাইম ব্যাংকের বাড়াবাড়ি!

প্রকাশ | ০৬ জুলাই ২০২২, ১৭:২১ | আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২২, ১৮:৫৮

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ব্যাংকের হিসাবধারী ব্যক্তি জানেনই না তার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ। অথচ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ স্থগিত রেখেছে তার হিসাব ও ক্রেডিট কার্ডের লেনদেন। ব্যাংকের সঙ্গে দুই দফা যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন গ্রাহক। একপর্যায়ে আইনজীবীর সহায়তা নিয়ে অভিযোগ দিয়েছেন তথ্য কমিশনে।

ব্যাংকটি হলো বেসরকারি প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড। আর সেই গ্রাহক র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম। বর্তমানে তিনি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হিসেবে প্রেসিডেন্টস গার্ড রেজিমেন্টে কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করছেন।

তার করা অভিযোগটি আমলে নিয়ে শুনানির জন্য সমন জারি করেছিল তথ্য কমিশন। ৩ জুলাই তথ্য কমিশনে দুই পক্ষের আইনজীবী উপস্থিত হন। এ বিষয়ে আগামী ১৮ জুলাই রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেছে কমিশন।

এই ঘটনার পর তড়িঘড়ি করে একটি চিঠি ইস্যু করে ব্যাংকটি। এতে বলা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের নিষেধাজ্ঞা থাকলে ওই ব্যক্তির সঙ্গে প্রাইম ব্যাংক কোনো লেনদেন করে না।

চিঠিতে জাহাঙ্গীর আলমকে হিসাব গুটিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করেছে প্রাইম ব্যাংক। যুক্তরাষ্ট্রসহ আর্থিক খাতের আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে করা প্রতিশ্রুতি রক্ষায় এই অনুরোধ করা হয়েছে বলে জাহাঙ্গীর আলমকে পাঠানো চিঠিতে বলেছে প্রাইম ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

জাহাঙ্গীর আলমের আইনজীবীর দাবি, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই লেনদেন বন্ধ করেছে ব্যাংক, যা তারা করতে পারে না।

এর আগে অভিযোগ কি না জানিয়ে ব্যাংক হিসাব বন্ধের কারণ জানতে চেয়ে গেল ৭ মার্চ ব্যাংকটির গুলশান শাখার ব্যবস্থাপক বরাবর তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করেন জাহাঙ্গীর আলম।

ওই আবেদনে তিনি তার ক্রেডিট কার্ড এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট কোন অবস্থায় আছে, তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানতে চেয়ে অনুরোধ করেন। ব্যাংক হিসাবটি ব্লকড হয়ে থাকলে তা কোন সংস্থার নির্দেশে এবং কেন করা হয়েছে বিস্তারিত জানতে চান। তবে প্রাইম ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কালক্ষেপণ করতে থাকে।

১৮ এপ্রিল ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর তথ্য চেয়ে আপিল আবেদন করেন জাহাঙ্গীর আলম। কিন্তু এবারও কোনো তথ্য সরবরাহ করা থেকে বিরত থাকে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

সবশেষ ১৬ মে প্রাইম ব্যাংকের গুলশান শাখার ব্যবস্থাপক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে তথ্য অধিকার আইন ২০০৯-এর বিধান অনুযায়ী প্রধান তথ্য কমিশনার বরাবর অভিযোগ করা হয়। এরপরই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি করে জাহাঙ্গীর আলমকে একটি চিঠি ইস্যু করে।

সেখানে উল্লেখ করা হয়, তথ্য অধিকার আইনের যে ধারায় তথ্য চাওয়া হয়েছে তা দিতে ব্যাংক বাধ্য নয়। চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের নিষেধাজ্ঞা থাকলে ওই ব্যক্তির সঙ্গে প্রাইম ব্যাংক কোনো লেনদেন করে না।

এদিকে ব্যাংকটি অতি উৎসাহী হয়ে এই ধরণের কাজ করেছে বলে মন্তব্য আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈনের। এবিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘কোন ঘটনার কারণে র‌্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা সেটিই এখনো বলা হয়নি। আর সেখানে আমাদের দেশে অবস্থান করে একটি ব্যাংক কীভাবে সম্মানিত নাগরিকের একাউন্ট স্থগিত করে দিলো। তাও আবার তথ্য দেওয়া ছাড়া?

(ঢাকাটাইমস/০৬জুলাই/এসএস/ডিএম)