‘দ্য ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড-২০২২’ পেলেন বাংলাদেশি ৮ তরুণ

প্রকাশ | ০৬ জুলাই ২০২২, ১৯:৫৮ | আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২২, ২০:০২

আব্দুল্লাহ আল নোমান

সামাজিক সমস্যা নিয়ে কাজ করে এমন সামাজিক সংগঠনের তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য ‘দ্য ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড’ অন্যতম বড় একটি স্বীকৃতি। যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রিন্সেস ডায়ানা’র নামে তার দুই ছেলে প্রিন্স হ্যারি ও প্রিন্স উইলিয়াম ব্রিটিশ রাজপরিবারের পক্ষে এই পুরস্কারটি প্রবর্তন করেন। পুরষ্কারটিকে ৯ থেকে ২৫ বছর বয়সী সামাজিক উদ্যোক্তাদের জন্য সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন পুরষ্কার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১ জুলাই রাত ৮টায় এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে পুরষ্কার ঘোষণা হয়।

আনুশা চৌধুরী                                

আনুশা চৌধুরী মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে গণসচেতনতা এবং মানসিক সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতের লক্ষ্য নিয়ে ২০১৮ সালের নভেম্বরে ‘লেটস টক মেন্টাল হেলথ’ নামের সংগঠন নিয়ে যাত্রা শুরু করেন। বর্তমানে এটি একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা। আনুশা চৌধুরী বর্তমানে ক্যানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে পরিচালক পদে কাজ করছেন।

মানসিকভাবে বির্পযস্ত বা হীনমন্যতায় ভোগা মানুষদের পাশে দাঁড়ানো এবং ইতিবাচক জীবনযাপনে সাহায্য করছে তার সংগঠনটি। শুরুতে সংগঠনের কার্যক্রম বাংলাদেশে থাকলেও বর্তমানে আফ্রিকা, কানাডা প্রভৃতি দেশে সম্প্রসারণের চেষ্টা করছেন। এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৭ হাজার মানুষকে কার্যক্রমের আওতায় আনতে পেরেছেন, যাদের বেশিরভাগই তরুণ। 

মূলত মানুষকে অনলাইনে পেশাদার মনোরোগ বিশেষজ্ঞ দ্বারা এবং ওয়েবিনারের মাধ্যমে সেবা প্রদান করে থাকেন তিনি। এছাড়াও ‘ব্রিংগিং স্মাইলস’ প্রজেক্টের আওতায় সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা প্রদান করছেন তিনি। এলটিএমএইচ টিমের মাধ্যমে সংগঠিত প্রচারাভিযান এবং ইভেন্টগুলি ১০ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষের নিকট পৌঁছেছে। 

এখন পর্যন্ত ৬টি মেগা প্রজেক্ট এবং ৯টি ক্যাম্পেইন বাস্তবায়ন করেছেন তিনি। ভবিষ্যতে দুস্থ নারী, ট্রান্সজেন্ডার, মাদকাসক্ত ব্যক্তি এবং সমাজের ঝরে পড়া শিশুদের নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী ও কার্যকরী প্রজেক্ট করার বিষয়েও চিন্তা করছে সংগঠনটি। তারা মূলত নিজেদের অথবা ফান্ড রেইজিং ক্যাম্পেইন করে কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।

আগামীতে অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট করে মানুষকে সহজেই মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে পরামর্শ  প্রদান এবং তা বাস্তবায়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীলদের কাউন্সিলিং এর ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। কিছুদিন আগে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলেও স্থান পেয়েছে আনুশা চৌধুরীর সফলতার গল্পগুলো। 

শামীম আহমেদ মৃধা

মানুষের মধ্যে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করার লক্ষ্য নিয়ে ২০১৮ সালে যাত্রা শুরু করে শামীম আহমেদ মৃধার সংগঠন ‘ইকো-নেটওয়ার্ক’। তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনাল ( বিইউপি ) থেকে পরিবেশ বিজ্ঞানে স্নতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। 

তার সংগঠনের অন্যতম প্রধান একটি লক্ষ্য হচ্ছে শিশুদের মাঝে পরিবেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত জ্ঞান সরবরাহ করে তাদের মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন আনতে সহায়তা করা।

পরিবেশ বিজ্ঞান বিষয়ে পড়াশোনা করছে অথবা পরিবেশ নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে সংগঠনটি। শুরুটা বিইউপির শিক্ষার্থীদের নিয়ে যাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে প্রায় ৩৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং ২৩টি দেশে প্রচারণা ও জলবায়ু সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করছে সংগঠনটি। 

এখন পর্যন্ত অনলাইন এবং অফলাইন কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রায় ৪ থেকে ৫ লাখ তরুণদেরকে তারা কাজের সরেঙ্গ যুক্ত করেছে। ‘ক্লাইমেট স্কুল’ তাদের একটা উল্লেখযোগ্য প্রজেক্ট, যার উদ্দেশ্য- পরিবেশ নিয়ে মানুষের মধ্যে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা। পাশাপাশি ‘মিশন গ্রিন বাংলাদেশ’ নামে তাদের আরেকটি প্রজেক্ট রয়েছে যার লক্ষ্য হচ্ছে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার বৃক্ষ রোপণ করা।

মো. আমিমুল এহসান খান

 

‘অ্যাওয়ারনেস ৩৬০’ একটি আন্তর্জাতিক যুব-নেতৃত্বাধীন অলাভজনক প্রতিষ্ঠান যা বিশ্বের ৪০টির বেশি দেশের ১০ লাখের অধিক মানুষকে কার্যক্রমের আওতায় এনেছে। পাশাপাশি তরুণদেরকে জাতিসংঘের ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)-এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সমাজ সেবায় উদ্বুদ্ধ করছে।

মো. আমিমুল এহসান খান বর্তমানে ‘অ্যাওয়ারনেস ৩৬০’-তে জ্যেষ্ঠ আঞ্চলিক কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন। ২০১৮ সালে ‘অ্যাওয়ারনেস ৩৬০’-তে যোগদান করেন তিনি। তখন বাংলাদেশের বিভিন্ন সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় (ওয়াশ) প্রজেক্টের মাধ্যমে মানুষকে হাত ধোয়া, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার প্রয়োজনীয়তা, পানিবাহিত রোগ থেকে নিজেদের কীভাবে সুরক্ষিত রাখা যায় তা নিয়ে সচেতন করতেন। 

এছাড়াও প্রত্যন্ত অঞ্চলে মায়েদের এবং স্কুল পড়ুয়া মেয়েদেরকে ঘরে বসেই কীভাবে স্বাস্থ্যসম্মত পুনরায় ব্যবহারযোগ্য স্যানিটারি ন্যাপকিন বানানো য়ায়, মাসিক নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কুসংস্কার ইত্যাদির প্রচারণা করতেন। তিনি ৩০টির বেশি নারী ক্ষমতায়ন কর্মশালা ও ওয়াশ প্রকল্প আয়োজন করেছেন যার মাধ্যমে ২৫০০-এর বেশি মানুষ সরাসরি উপকৃত হয়েছে।

কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৮ সালের ‘অ্যাওয়ারনেস ৩৬০’-এর বর্ষসেরা সদস্য ঘোষিত হন যার মাধ্যমে তিনি মালয়েশিয়া গিয়ে বাংলাদেশ ও ‘অ্যাওয়ারনেস ৩৬০’ -কে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পান। ২০২০ সালে পড়াশোনার জন্য জাপান গেলে তার প্রমোশন হয় এবং তখন থেকে তার মতো বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তরুণদের নিজ নিজ দেশে কিভাবে ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে এবং জাতিসংঘের ১৭ টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারে তা নিয়ে প্রশিক্ষণ দেন। বর্তমানে তিনি ‘অ্যাওয়ারনেস ৩৬০’ -এর মাধ্যমে ৪০টির বেশি দেশের ৫০০ এর অধিক তরুণ-তরুণীদের ক্ষমতায়ন করছেন।

দীপ্র প্রত্যয় 

দীপ্র প্রত্যয় ২০২০ এর আগস্টে চট্টগ্রামে দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক শিক্ষা সহায়তা ও পরামর্শপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ‘ডিপি টিউটোরিয়ালস’-এর যাত্রা শুরু করেন। বর্তমানে তিনি আমেরিকার মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল শেষ বর্ষের ছাত্র ।  

১ হাজারের বেশি ছাত্র-ছাত্রীকে কার্যক্রমের আওতায় এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ১০ লাখের বেশি মানুষের কাছে পৌঁছেছেন তিনি। স্যাট, আইইএলটিএস কোর্সসহ যারা বিদেশে পড়াশোনা করতে ইচ্ছুক তাদেরকে সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি ৩০টির বেশি প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করেছেন। বর্তমানে ১৫ জন টিম মেম্বার নিয়ে কাজ করছেন তিনি।

আগামীতে তার প্রতিষ্ঠানটি এডুটেক স্টার্টআপ হিসেবে আবির্ভাব হতে চায় যেটা আর্থিক সহায়তাও প্রদান করবে। দীপ্র প্রত্যয়ের প্রতিষ্ঠানে কোনো ডোনার নেই, তবে বাবা-মা মাঝেমাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছেন।

নাফিরা নাঈম আহমাদ

নাফিরা নাঈম আহমাদ কাজ করছেন অলাভজনক ও দাতব্য সংস্থা ‘অ্যাম্প্লিটিউড’ নিয়ে। বর্তমানে তিনি এসএফএক্স ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে এ- লেভেল (২০২২) এ পড়াশোনা করছেন। অ্যাম্প্লিটিউড ২০১৯-এর অক্টোবরে বৈষম্য এবং সামাজিক সমস্যা মোকাবেলার পাশাপাশি সুবিধাবঞ্চিত মানুষদেরকে তাদের কার্যক্রমের আওতায় আনার লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করে।  

সংগঠনটি বিভিন্ন সচেতনতা ও দাতব্য সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এখন পর্যন্ত ৯টি প্রজেক্ট সম্পন্ন করেছে যেগুলোতে সাধারণ মানুষ তাদেরকে ডোনেশন দিয়ে থাকে। আগামী দিনগুলোতে সোশ্যাল ট্যাবুগুলো আরো স্বাভাবিককরণ করা ও দরিদ্রতার হার কমাতে কাজ করতে চায়। তাদের সঙ্গে প্রায় ৩০ জন তরুণ সদস্য কাজ করছে।  এর আগেও সংস্থাটি নমিনেশন ফর ইন্টারন্যাশনাল চিল্ড্রেনস পিস প্রাইজ-২০২১ এ ভূষিত হয়। 

ফায়েজ বেলাল

সামাজিক কাজে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ব্রিটিশ রাজ পরিবার থেকে সম্মানজনক ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন বাংলাদেশের তরুণ সামাজিক উদ্যোক্তা ফায়েজ বেলাল। 

তার প্রতিষ্ঠিত উদ্যোগ বাংলাদেশ ইয়ুথ সোসাইটি (বিওয়াইএস)-এর মাধ্যমে মানসম্পন্ন শিক্ষা, ক্লাইমেট অ্যাকশন, নারী-পুরুষ সমানাধিকারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকার জন্য এই স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। অভয়, গার্লস সামিটসহ নানান উদ্ভাবনী প্রকল্পের মাধ্যমে সামাজিক সমস্যা সমূহ সমাধান করে আসছে বিওয়াইএস । 

গত ৮ বছরে বিওয়াইএস প্রায় ১০ লাখ মানুষকে তাদের কার্যক্রমের আওতায় এনেছে। বর্তমানে বরিশাল, ঢাকা এবং রংপুর বিভাগের প্রায় ১২ টি জেলায় কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বরিশালের এ সংগঠনটি আজ দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ তরুণ সংগঠন হিসেবে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ এবং কিশোরীদের নেতৃত্ব বিকাশকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। 

তার এই অর্জন তিনি উৎসর্গ করছেন জলবায়ু পরিবর্তন এলাকার হাজার হাজার নারী ও কিশোরীদের, যাদের উদ্যম ও প্রচেষ্টার কারণে বিওয়াইএস আজ এই সম্মাননা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। 

২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সামনে রেখে ২০ লাখ নারী এবং কিশোরীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং তাদের অধিকার রক্ষায় ভূমিকা রাখতে কাজ করে যাচ্ছে । 

মনিষা মীম নিপুণ হিজড়া 

মনিষা মীম নিপুণ হিজড়া বৈচিত্র্যময় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর কর্মদক্ষতা উন্নয়নে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘পথচলা ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ’ নিয়ে কাজ করছেন। তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম বিভাগে পড়ার সুযোগ পেলেও ২য় বর্ষ হতে ড্রপ আউপ হয়ে যেতে হয় জেন্ডার আইডেন্টিটি ক্রাইসিসের জন্য।

পরবর্তীতে নিজের পথচলা ফাউন্ডেশন অ্যাডভোকেসির সুবাদে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজ নিজ লৈঙ্গিক পরিচয়ে ভর্তি হওয়ার প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন হয়। যা তাদের সংগঠনের একটি বিশেষ সফলতা ।

২০১৯ সালের মার্চ মাসে যাত্রা শুরু করে এবং পরবর্তীতে করোনাকালীন সময়ে সংগঠনটিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া হয়। বাংলাদেশের বৈচিত্র্যময় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে তাদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা এবং কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষতা বৃদ্ধি প্রশিক্ষণ দেয়ার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রামে কার্যক্রম শুরু করে সংগঠনটি। 

এখন পর্যন্ত ৩ হাজার মানুষকে তারা কার্যক্রমের আওতায় এনেছে। দক্ষতা উন্নয়ন, স্থায়ী উদ্যোক্তা তৈরিতে সহায়তা প্রদান কার্যক্রমসহ ৩৮টি প্রজেক্ট সম্পন্ন করা হয়েছে ইতোমধ্যে। সংগঠনটিতে সবমিলিয়ে ৮০ জন কাজ করছেন। বর্তমানে ৬টি বিভাগের নয়টি জেলায় তারা কাজ করছে। 

একজন বাঙ্গালী ট্রান্সজেন্ডার হিসেবে তার অর্জনটি দেশের জন্য একটি ইতিহাস ও ইতিহাসের অংশ হিসেবে ট্রান্সজেন্ডার কমিউনিটির জন্য নতুন দুয়ার খোলার পাশাপাশি সামাজিক গ্রহনযোগ্যতা সৃষ্টি করবে। এর আগে শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড-২০২০, জাতিসংঘ স্বেচ্ছাসেবক সম্মাননা ২০২১, মিলেনিয়াম ফেলোশিপ-২০২১ এর মতো স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি।

সিভিল সোসাইটির সদস্য ছাড়াও বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা তাদের বিভিন্ন কারিগরি সহায়তা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম পরিচালনা করতে সহায়তা করে।

মুরাদ আনসারী

রাজধানী ঢাকাতে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য হলেও ঢাকার বাইরের মানুষের জন্য এখনো অপ্রতুল। এসব নিয়ে ভাবতে ভাবতে ২০১৯ সালে চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে নিয়ে মুরাদ শুরু করেন ‘সাইকিউর অর্গানাইজেশন’ নামের মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক সংগঠন। নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগ-ভিত্তিক ক্লাব হিসেবে যাত্রা শুরু করে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ে নানা সেবা দেওয়ার পর বেশ ভালো সাড়া পেতে শুরু করেন।

বেশি মানুষের কাছে সাইকিউরের সেবাগুলো পৌঁছে দিতে অনলাইনে সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করেন তারা। প্রায় ১১ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক নানা প্রশিক্ষণের পাশাপাশি প্রায় তিন হাজার মানুষকে কাউন্সেলিং সেবা দিয়েছেন। 

শিক্ষার্থীসহ যে কেউ বিনামূল্যে কিংবা স্বল্প মূল্যে সাইকিউরের সেবা নিতে পারছেন। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হলো কেউ সেবা নিতে গেলেই চারপাশের লোকজন তাকে পাগল বলে। তবে সংকোচে না থেকে অনলাইনে সবাই খুব সহজেই তাদের সেবা নিতে পারছে।

মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড- ২০২০, ইয়ং গ্লোবাল চেঞ্জ মেকারস অ্যাওয়ার্ড–২০২১ পদক ও সম্মাননা পেয়েছেন তিনি। কার্যক্রম আরও এগিয়ে নিতে সিমকিউবেটর ২০২১ (রিসার্চ গ্রান্ট), বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্রান্ট এবং ইয়ুথ কো-ল্যাব ২০২১ সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে তহবিলও পেয়েছে সাইকিউর অর্গানাইজেশন। 

সাইকিউর অর্গানাইজেশনের কার্যক্রমকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে নিজেদের কার্যক্রম চালুর ব্যাপারে কাজ করছেন। নিজস্ব অ্যাপ চালুর মাধ্যমে বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে সাইকিউরের সেবা গ্রহীতার নিজেদের সুবিধাজনক সময়ে দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।

(ঢাকাটাইমস/৬জুলাই/এসএটি)