পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে খুন করে গুম, ননদসহ স্বামী আটক

প্রকাশ | ০৬ জুলাই ২০২২, ২১:০৯ | আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২২, ২১:১৬

কেরানীগঞ্জ(ঢাকা) প্রতিনিধি.

কেরাণীগঞ্জে পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে খুন করে লাশ গুম করার ঘটনায় স্বামী ও ননদকে আটক করেছে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ।

বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ সংবাদ নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কেরাণীগঞ্জ সার্কেল) শাহাবুদ্দিন কবীর।

তিনি বলেন, গত ১৫ মে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে কেরাণীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ সংবাদ পায়, শাক্তা ইউনিয়নের আটিকুটি গ্রামস্থ মেরিন শিশু পার্কের পশ্চিম পাশে জনৈক আব্দুর রহমানের একতলা বাড়ির পেছনের দেওয়াল সংলগ্ন ফাঁকা জায়গায় অজ্ঞাতনামা নারীর মৃতদেহ মাটিচাপা অবস্থায় আছে।
 

সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং অজ্ঞাতনামা মহিলার মৃতদেহটি মাটি খুঁড়ে উত্তোলন করে। মৃত দেহটি পচন ধরা অবস্থায় পাওয়া যায়। লাশের মাথায় বিভিন্ন আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। পুলিশ মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে এবং মৃতদেহের ময়না তদন্তের জন্য লাশ স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিডফোর্ড, ঢাকায় প্রেরণ করে। এ ঘটনায় এসআই মো. খায়রুজ্জামান শিকদার বাদী হয়ে কেরাণীগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু করেন।

তদন্তের শুরুতে পুলিশ অজ্ঞাতনামা মৃত নারীর নাম-পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করে জানতে পারে, অজ্ঞাতনামা নারীর মৃতদেহটি আব্দুর রহমানের ছেলে সাগরের ২য় স্ত্রী লাভলী বেগমের।

পরে পুলিশ আব্দুর রহমানের একতলা বাড়িতে গিয়ে বাড়িটি তালাবদ্ধ দেখতে পায়। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা যায় গত ১১ মে ভোর ৫টার দিকে সাগর ও তার পরিবারের সদস্যরা বাড়ির সকল মালামাল নিয়ে একটি পিকআপ গাড়িতে করে পালিয়ে যাচ্ছে। পরে এই হত্যাকাণ্ডে সাগর ও তার পরিবারের সদস্যরা জড়িত সন্দেহে পুলিশ তাদের খুঁজতে থাকে।

পরে গত ৫ জুলাই দিবাগত রাতে ঢাকার হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামি সাগর ও তার বোন সুমিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশ জানায়, আসামি সাগর তার স্ত্রী লাভলীকে বাড়ির ছাদে মোবাইল ফোনে কথা বলতে দেখে। তখন সাগরের তার স্ত্রী লাভলী পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত বলে সন্দেহ হলে উভয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। ঝগড়া-বিবাদের এক পর্যায়ে সাগর কাঠের বাঁতা দিয়ে লাভলীকে গুরুতর আঘাত করে এবং ধাক্কা দিয়ে ছাদ থেকে ফেলে দেয়। পরে সাগর নিচে নেমে দেখে লাভলী মারা গেছে। তখন তাড়াতাড়ি লাশ গুম করার জন্য মাটি খুঁড়ে লাভলীর মৃতদেহ চাপা দেয়। পরে এ ঘটনা পরিবারের অন্য সদস্যদের জানালে সবাই মালামাল নিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। গ্রেপ্তাকৃত আসামি সাগর ও সুমি ইতোমধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/জুলাই/এআর)