প্রেমিকা নিয়ে ছেলে উধাও, তাই মা’কে পুড়িয়ে হত্যা: পিবিআই

প্রকাশ | ০৬ জুলাই ২০২২, ২১:৫৯

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

পুলিশ ব্যুরো ইনভেটিগেশনের (পিবিআই) পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. সায়েদুর রহমান বলেছেন, প্রেমিকাকে নিয়ে ছেলে উধাও হয়ে যাওয়ার অপরাধে মা লাইলি বেগমকে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সামাজিক অবক্ষয়ের ফলে সন্তানের প্রেমের বলি হতে হয়েছে মাকে। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দাহ্য পদার্থ দ্বারা পুড়িয়ে হত্যা করা হয় লাইলি বেগমকে।

বুধবার দুপুরে পিবিআইয়ের সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি সায়েদুর রহমান।

ফেনীর নুসরত হত্যার প্রসঙ্গ টেনে সায়েদুর রহমান বলেন, নুসরাতকেও দাহ্য পদার্থ দ্বারা নৃশংশভাবে হত্যা করা হয়। একইভাবে এই মামলার ভুক্তভোগী লাইলি বেগমকেও দাহ্য পদার্থ দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়- যা সমাজের জন্য ভীতিকর।

সংবাদ সম্মেলনে পিবিআইয়ের অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, প্রেমিকাকে নিয়ে ছেলে উধাও হয়ে যাওয়ার অপরাধে মা লাইলি বেগমকে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে প্রধান দুজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই।

প্রেমের টানে চলতি বছরের ১৯ জুন ঘর ছাড়েন ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানার চর ঈশ্বরদিয়া পূর্বপাড়ার মো. আব্দুর রশিদের ছেলে সিরাজুল ইসলাম আর তার প্রেমিকা একই গ্রামের খোকন মিয়া ওরফে  কাজলের মেয়ে খুকি আক্তার।

সংবাদ সম্মেলনে পিবিআইয়ের অতিরিক্ত ডিআইজি সায়েদুর রহমান বলেন,  খুকি আক্তারকে ফিরে পাওয়ার জন্য তার বাবা খোকন মিয়া ওরফে কাজল ও মা নাসিমা আক্তার কনা সিরাজুল ইসলামের বাবা আব্দুর রশিদ ও মা লাইলি বেগমকে চাপ দিতে থাকে। অন্যথায় তাদের দেখে নেবে বলে হুমকি দেয়। ১০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরেও মেয়ে খুকি আক্তারকে ফিরে না পেয়ে তার বাবা খোকন মিয়া ওরফে কাজল ও মা নাসিমা আক্তার কনা অন্যদের নিয়ে গত ২৮ জুন সকাল  নয়টার দিকে ছেলের বাবা আব্দুর রশিদের বাড়িতে যায় এবং গালিগালাজ করতে থাকে। আব্দুর রশিদের অনুপস্থিতিতে সকল অভিযুক্তরা তার স্ত্রী লাইলি আক্তারের মুখ চেপে ধরে হাত, পা বিদ্যুতের কালো তার দিয়ে বেঁধে ফেলে। এরপর তার শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার শরীরের প্রায় ৬০ শতাংশ আগুনে পুড়ে যায়। ভুক্তভোগী লাইলি আক্তারকে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক ভুক্তভোগী লাইলি আক্তারকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকায় পাঠান।  ভুক্তভোগী লাইলি আক্তারকে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন  লাইলি আক্তার অবস্থায় মারা যায়। এ ঘটনায় ওই দিন ভুক্তভোগী লাইলি আক্তারের স্বামী আব্দুর রশীদ একটি মামলা করেন।

গ্রেপ্তারদের বরাত দিয়ে পিবিআই জানায়, খোকন মিয়া ওরফে  কাজল ও  তার স্ত্রী নাসিমা আক্তার কনা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।

ঢাকাটাইমস/০৬ জুলাই/এলএ)