আরেক মামলার ফাঁদে পরীমনি, জানুন বিস্তারিত
আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে র্যাবের করা মাদক মামলা চলমান। এদিকে আবার তিনি মা হতে চলেছেন। সন্তান পৃথিবীতে আসার সময় খুবই নিকটে। এই অবস্থায় আরও এক মামলার ফাঁদে পরীমনি। তার বিরুদ্ধে এবার মামলা করেছেন ব্যবসায়ী ও ঢাকা বোট ক্লাবের সভাপতি নাসির উদ্দিন মাহমুদ।
বুধবার ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব হাসানের আদালতে বাদী হয়ে মামলাটি করেন নাসির। সেখানে পরীমনির বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা, মারধর, ভাঙচুর এবং ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ এনেছেন তিনি।
এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটির আনোয়ারুল কবীর বাবুল। তিনি জানান, মামলায় পরীমনির দুই সহযোগী ফাতেমা তুজ জান্নাত বনি ও জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিমকেও আাসমি করা হয়েছে।
আনোয়ারুল কবীর বাবুল আরও জানান, বুধবার এ মামলায় ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের জবানবন্দি গ্রহণ করেছে আদালত। শুনানি শেষে আদালত মামলার বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ১৮ জুলাই তারিখ নির্ধারণ করেছেন।
মামলায় বাদী নাসির উল্লেখ করেছেন- পরীমনি ও তার সহযোগীরা অ্যালকোহল সেবনে অভ্যস্ত। তারা সুযোগ বুঝে বিভিন্ন নামিদামি ক্লাবে ঢুকে অ্যালকোহল পান করেন এবং পার্সেল নিয়ে মূল্য পরিশোধ করে না। পরীমনি তার পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে মিথ্যা মামলা করিয়ে হয়রানির ভয় দেখান।
২০২১ সালের ৯ জুন রাত ১২টার পর আসামিরা সাভারের বোট ক্লাবে ঢুকে এবং দ্বিতীয়তলার ওয়াশরুম ব্যবহার করেন। পরে তারা ক্লাবের ভেতরে বসে অ্যালকোহল পান করেন। বাদী ও তার সহযোগী শাহ শহিদুল আলম রাত ১টা ১৫ মিনিটে যখন ক্লাব ত্যাগ করছিলেন, তখন পরীমনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে নাসিরকে ডাক দেন। তাদের সঙ্গে কিছু সময় বসারও অনুরোধ করেন।
একপর্যায়ে পরীমনি অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে নাসিরকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন এবং একটি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনামূল্যে পার্সেল দেওয়ার জন্য চাপ দেন। নাসির উদ্দিন এতে রাজি না হওয়ায় পরীমনি তাকে গালমন্দ করেন। নাসির এবং আসামিদের মধ্যে বাদানুবাদের একপর্যায়ে পরীমনি বাদীর দিকে একটি সারভিং গ্লাস ছুড়ে মারেন এবং হাতে থাকা মোবাইল ফোনও ছুড়ে মারেন। এতে নাসির মাথায় এবং বুকে আঘাতপ্রাপ্ত হন।
বাদী মামলায় আরও উল্লেখ করেন, ‘পরীমনি ও তার সহযোগীরা তাকে (নাসির উদ্দিনকে) মারধর ও হত্যার হুমকি দিয়েছেন এবং বোট ক্লাবে ভাঙচুর করেছেন। এ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য পরীমনি সাভার থানায় বাদী নাসির উদ্দিনসহ দুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ তুলে মামলা করেন।’
এর আগে গত বছরের ১৪ জুন ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তার বন্ধু অমির নাম উল্লেখ করে এবং আরও চারজনকে অজ্ঞাত আসামি করে সাভার থানায় মামলা করেন পরীমনি। পরে ৬ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নাসিরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন।
চলতি বছরের ১৮ মে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯-এর বিচারক হেমায়েত উদ্দিন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। একই সঙ্গে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১ আগস্ট দিন ধার্য করেন। অভিযোগ গঠনের সময় নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন নাসিরসহ তিন আসামি। এবার তারা পাল্টা মামলা করলেন পরীমনির বিরুদ্ধে।
(ঢাকাটাইমস/০৬ জুলাই/এএইচ)