উচ্চ শিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যেতে চান আবরার ফাহাদের ছোট ভাই ফাইয়াজ

প্রকাশ | ০৯ জুলাই ২০২২, ২২:২৮ | আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২২, ২২:৩৫

আশিক আহমেদ, ঢাকা টাইমস

উচ্চ শিক্ষার জন্য ইউরোপ অথবা আমেরিকায় যেতে চান আবরার ফাইয়াজ। তিনি ৩০ জুন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তির সুযোগ পান। তাঁর বড় ভাইকে এক‌ই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। খুনিরা ওই প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের‌ই শিক্ষার্থী। সেই আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ।

৩০ জুন রাত নয়টার পর বুয়েটের ওয়েবসাইটে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয় হয়। প্রকাশিত ফলাফলে আবরার ফাইয়াজ ৪৫০ তম হয়ে যন্ত্রকৌশল বিভাগে ভর্তির সুযোগ পান।

ফাইয়াজ এবারের ঈদ করবেন কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী থানার রায়ডাঙ্গা গ্রামে। তিনি বলেন, ঈদের দিন সকালে ছোট বেলা থেকেই নামাজ পড়তে যাই। আগে ঈদের নামাজ শেষে ভাইয়াসহ আমরা ঘরে এসে আনন্দ করতাম। তবে এখন অর ঈদ তেমনভাবে পালন করা হয় না।

এবারের ঈদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঈদের দিন সকালে প্রথমে নামাজ পড়তে যাবো। তারপর বড় ভাইয়ের কবর জিয়ারত করে বাসায় এসে কোরবানির কাজে ব্যস্ত থাকবো।

ঢাকা টাইমস: কীভাবে এতো ভালো ফলাফল করলেন ?

আবরার ফাইয়াজ: দেখেন প্রায় তিন বছর হতে চলল ভাইয়া মারা গেছেন।  তখন থেকে আমি কুষ্টিয়াতেই আছি।  এখানে আমি যেসব প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখার জন্য গিয়েছি, সেইসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা আমার সঙ্গে খুবভালো ব্যবহার করেছেন। আমার প্রতি বিশেষ নজর রেখেছেন। দেশের অনেক জায়গা থেকে অনেকে ফোন করে খোঁজ খবর নেন। অনেকে আপন করে নিয়েছেন। এটা আমার জন্য বড় পাওনা।  এর জন্য আমি সবার কাছে অনেক কৃতজ্ঞ। 

 

ঢাকা টাইমস: ভবিষ্যতে কী হতে চান ?

আবরার ফাইয়াজ: আমি বুয়েটে ম্যাকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে চান্স পেয়েছি। আপাতত এখানেই পড়াশোনা করব। তবে ভবিষ্যতে উচ্চ শিক্ষার জন্য ভবিষ্যতে ইউরোপ অথবা আমেরিকা যেতে চাই।

 

ঢাকা টাইমস: ইউরোপ বা আমেরিকায় গিয়ে কোন বিষয়ে পড়তে চান?

আবরার ফাইয়াজ: কোন বিষয়ে পড়বো সেটা নিয়ে এখনও কোন চিন্তা করিনি। তবে বিদেশে যাওয়ার ইচ্ছে আছে।  সেখানে গিয়ে চিন্তা করবো দেশে ফিরবো কী না, সেখানেই থেকে যাবো।

 

ঢাকা টাইমস: ভাইকে ছাড়া কেমন কাটবে ঈদ?

আবরার ফাইয়াজ: বাবা-মা এখনও মন খারাপ করেন বড় ভাইয়ার জন্য। ওনারা তো আমাকে একা ছাড়তেই চান না । আমি প্রায় ছয় মাস ঢাকায় ছিলাম। তখন মা আমার সঙ্গে ছিলেন।

 

ঢাকা টাইমস: আপনার বাবা কী করেন , কিভাবে সংসার চলে ?

আবরার ফাইয়াজ:  আমার বাবা  ব্র্যাকের অডিটর ছিলেন। তিনি এখন  অবসরে আছেন। আগের কিছু জমানো টাকা ছিল, সেই টাকা দিয়েই সংসার চলছে।

 

ঢাকা টাইমস: ভাইয়ের মৃত্যুর পর শোক কাটিয়ে কীভাবে এতভালো ফলাফল করলেন ?

আবরার ফাইয়াজ: আমরা দুইভাই আগে থেকেই পড়াশোনা করতাম। তবে ভাইয়া মারা যাওয়ার পর থেকে পড়াশোনার ছাড়া আর কোনো বিকল্প কিছু ছিল না আমার।

বুয়েটে ভর্তি হবেন কি না জানতে চাইলে আবরার ফাইয়াজ বলেন, বুয়েটে চান্স পেয়ে অনেক ভালো লাগছে। আমার ইচ্ছা আছে ভর্তি হওয়ার। তবে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চাই।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুন বুয়েট ক্যাম্পাসে ছয় হাজার শিক্ষার্থীকে নিয়ে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ও বিকাল দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হয়। প্রকৌশল বিভাগগুলো এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের জন্য ‘মডিউল-এ’ সকাল ১০টা-১২টা ও প্রকৌশল বিভাগগুলো, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ এবং স্থাপত্য বিভাগের জন্য ‘মডিউল-বি’ দুই শিফটে বেলা ২টা থেকে ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়।

(ঢাকাটাইমস/০৯জুলাই/এএ/এমএম)