একটা ছোট গল্পই পাল্টে দিতে পারে জীবনবোধ: আসিফ

প্রকাশ | ১৭ জুলাই ২০২২, ২০:৪১

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

‘দুষ্টুমির ছলে আমরা শৈশব থেকেই অনেক অপরাধে জড়িয়ে যাই। কুকুরকে অহেতুক ঢিল মারা, বিড়াল, গরু, ছাগলকে অহেতুক লাঠিপেটা করা। তখনই ছোটদের গল্পের বই পড়তাম মহল্লার লাইব্রেরিতে। ঈশপের বইয়ে পড়েছি ব্যাঙের গল্প। একদল কিশোর খেলাচ্ছলে পুকুরের ব্যাঙদের ঢিল মারছিল। একটা সিনিয়র ব্যাঙ সেই কিশোরদের উদ্দেশ্যে বলল- ওহে বালকেরা, তোমাদের কাছে যেটা খেলা, সেটা আমাদের কাছে মৃত্যু।’

‘এই গল্প পড়ে আমার ছোট্ট মনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়েছিল, মনে মায়া জেগেছে। একটা ছোট গল্পই পাল্টে দিতে পারে জীবনবোধ। ইংরেজিতে একটা কথা বলা হয়- Curiosity Kills Cat. আমরা জানি বিড়াল অতিরিক্ত কৌতুহলের কারণেই দুর্ঘটনায় মারা যায়। যাদের গৃহপালিত প্রাণী আছে, তাদের মনে নিরীহ পশুদের প্রতি এমনিই একটা ভালো লাগা থাকে। এই ভালো লাগাটা মানুষের প্রতি মানুষের কেন থাকে না!!’

‘জগতের নানান হিসেব নিকেশে মন নষ্ট হয়ে যায়। তবুও যার যার ধর্মের প্রতি অনুরাগ থেকেই মানবপ্রেম টিমটিম করে জ্বলতে থাকে। বিজ্ঞানের যুগে এসে সেই প্রেমও শেষের পথে। পারস্পারিক হিংসাবিদ্বেষ লালন করতেই কেটে যায় এক জীবন। শঠতা চতুরতায় ভরপুর মানুষ হয়ে উঠেছে ক্ষমাহীন স্বার্থপর। ফরমায়েশী পাঠপুস্তকে অভ্যস্ত শিক্ষার্থীরা হচ্ছে গিনিপিগ।’

‘প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় হাতের মুঠোয় সব তথ্য। যার যে অংশ প্রয়োজন সেটা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। নিজের যোগ্যতা যেমনই হোক খিস্তিখেউড়ে অংশ নিতেই হবে। এখানে সবাই রাজা, আদমশুমারির বাইরে গিয়ে বেওয়ারিশ ব্যাঙ্গাচির মত কিলবিল করে এরা। বিড়ালের মত কৌতুহলী এই জাতি এমবি কিনে কারণে-অকারণে মন্তব্য প্রসব করবেই, তবু পড়াশোনা করবে না।’

‘ততক্ষণে বেলা শেষ, নিজেকে যুগোপযোগী তৈরি করার বদলে মূল্যবান সময়ে পরচর্চা নিয়েই ব্যস্ত থাকে। আমার এক বড় ভাই বলেন- বাংলাদেশের চার কোনায় চারটা অত্যাধুনিক জঙ্গী বিমান ডিসপ্লে করে রাখলেই কৌতুহলী জাতি ওইগুলোর সাথে সেলফি তোলায় মত্ত হয়ে যাবে, এই ফাঁকে দেশ দখল করে নেবে শত্রুরা। আমিও মনে করি, মূল পঁচে গেলে ছিন্নমূলের সাথে চলাই উত্তম।’

গায়ক আসিফ আকবরের ফেসবুক পেজ থেকে

(ঢাকা টাইমস/১৭ জুলাই/এএইচ)