যেসব খাবার খেলে যৌবন থাকবে চির তরুণ

প্রকাশ | ২৬ জুলাই ২০২২, ০৯:৫২ | আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২২, ১১:৪৮

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

পৃথিবীর সব মানুষই চান যৌবন ধরে রাখতে। কিন্তু বাস্তবে কোনো কিছুই চিরস্থায়ী নয়। বার্ধক্য আসেই। সেই সঙ্গে মুখে পড়ে বলিরেখা। ত্বক হয় শিথিল। কিন্তু বয়সকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সেজন্য অবশ্যই সুস্থ জীবনযাপন দরকার। সেই সঙ্গে আরও কিছু টোটকা আছে। হালফিলের বোটক্স বা কোনো সার্জারি নয়, বরং কয়েকটি খাবারেই রয়েছে বয়স কমানোর টোটকা। যা অ্যান্টি-এজিং পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। মুখে বয়সের ছাপ পড়ে না। বয়স বাড়ার প্রক্রিয়াটিকে ধীর করে দেয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সঠিক খাদ্যের অভাবের কারণে বেশিরভাগ বয়স্ক মানুষ রোগে জর্জরিত। ফলে খাবারের দিকে নজর দেওয়াটা জরুরি। সুস্থ থাকতে এবং তারুণ্য ও যৌবন ধরে রাখতে পুষ্টিকর খাবারের কোনো বিকল্প নেই। এমন কিছু খাবার আছে যা নিয়ম করে খেলে আপনার যৌবন থাকবে অটুট। আসুন জেনে নেয়া যাক যেসব খাবার যা আপনাকে রাখবে চির তরুণ।

 

হলুদ

হলুদে কারকিউমিন নামক একটি যৌগ রয়েছে যা অ্যান্টি-এজিং গুণসম্পন্ন। এটি কোষগুলোকে রক্ষা করে যা বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়। তাই হলুদকে খাদ্যতালিকায় যোগ করুন।

 

রসুন

রসুনে রয়েছে এলিসিন নামের উপাদান, যা দৈহিক ইন্দ্রিয়গুলোতে রক্তের প্রবাহ বাড়িয়ে দেয়। দৈহিক সমস্যা থাকলে এখনই নিয়মিত রসুন খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

 

আদা

সুস্থ যৌনজীবন বজায় রাখতেও অপরিহার্য হতে পারে আদা। আদার মধ্যে থাকা ভোলাটাইল অয়েল স্নায়ুর উত্তেজনা বাড়ায় ও রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা ঠিক রাখে। প্রতিদিন একটি সিদ্ধ ডিমের সঙ্গে আদার রস ও মধু খেতে পারেন।

 

দই

দই মেদ ও কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে। যারা যৌবন ধরে রাখতে চান তাদের জন্য আশার কথা হচ্ছে নিয়মিত দই খান। দইয়ে প্রচুর প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম আছে যা শরীরের গঠন ভালো রাখে এবং হাড়ের ক্ষয় রোধ করে। দই বয়সজনিত কারণে হওয়া রোগগুলো প্রতিরোধ করে। এছাড়াও দই ত্বককে রাখে বলিরেখামুক্ত। তাই যৌবন ধরে রাখতে চাইলে প্রতিদিন দই খান।

 

সামুদ্রিক মাছ

সামুদ্রিক মাছ যৌবন ধরে রাখতে সহায়ক। তাই নিয়মিত খাবার তালিকায় সামুদ্রিক মাছ রাখুন। তাতে শরীরে প্রয়োজনীয় প্রোটিনের চাহিদা পূরণ হবে, পাশাপাশি ধরে রাখা যাবে যৌবনও।

 

ডালিম

ত্বকের যৌবন ধরে রাখতে ডালিম অত্যন্ত উপকারী একটি উপাদান। ডালিমে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে যা ত্বকের নমনীয়তা বজায় রেখে তাকে টানটান রাখতে সাহায্য করে। তাই দিন শুরু করুন ১ গ্লাস ডালিমের রস খেয়ে।

 

কলা

যৌবন ধরে রাখতে কলার জুড়ি নেই। এতে আছে ব্রোমেলিয়ান, যা শরীরের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়িয়ে যৌবনকে সজীব করে। এছাড়া কলায় আছে ভিটামিন এ, বি, সি ও পটাশিয়াম। পটাশিয়ামের অভাবে ত্বক রুক্ষ হয়। কলা সেই অভাব পূরণ করে। ভিটামিন বি ও পটাশিয়াম মানবদেহের যৌনরস উৎপাদন বাড়ায়।

 

গ্রিন টি

গ্রিন টিকে অ্যান্টি-এজিং ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কারণ এতে পলিফেনল রয়েছে। পলিফেনল বার্ধক্যের গতি কমিয়ে দেয়। তাই সকালে এবং সন্ধ্যায় গ্রিন টি খান। এছাড়াও গ্রিন টি একটি ফেস মাস্কও কার্যকর। গ্রিন টি-র সঙ্গে মধু মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারেন।

 

টমেটো

লাইকোপিন হল রক্ত ​​এবং টিস্যুতে পাওয়া একটি পদার্থ যা ত্বককে সূর্যের রশ্মির ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। টমেটো এবং তরমুজে প্রচুর পরিমাণে লাইকোপিন পাওয়া যায়।

 

আঙুর

রেসভেরাট্রল, যা একটি পলিফেনল, এটা পাওয়া যায় আঙুরে। এই ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ত্বকের জন্য ভাল। এটি ব্লুবেরি, ডার্ক চকোলেট এবং কোকোতেও পাওয়া যায়।

 

পেঁপে

বলিরেখা পড়বে না এমন ত্বক চাইলে পেঁপে খেতেই হবে। পেঁপে-তে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং খনিজ। ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায়। মৃত ত্বকের কোষগুলোকে ঝরিয়ে উজ্জ্বল করে তোলে।

 

পালং শাক

পালং শাকে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাশিয়েম, ফাইবার, ভিটামিন আর মিনারেল (খনিজ)। এই শাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেণ্ট রয়েছে যা শরীরের ‘ফ্রি র‌্যাডিকেল’ ধ্বংস করে দিয়ে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না।

 

ব্রকলি

ব্রকলিতে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ ব্রকলি। যা শরীরকে সুস্থ রাখে। এছাড়া এতে থাকা ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদনে সহায়তা করে। যা ত্বকের প্রধান প্রোটিন। এতে ত্বক টানটান থাকে।

 

বাদাম

বাদামে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ফাইবার এবং প্রোটিন ছাড়াও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা হার্টে ও ত্বকের জন্য ভাল। খাদ্যতালিকায় বাদাম, কাজু, আখরোট এবং আমন্ড অন্তর্ভুক্ত করুন।

 

পানি

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পানি খাওয়ার পরিমাণও কমে যায়। কিন্তু পানিহীন শরীর অর্থাৎ তেলহীন একটি যন্ত্র। তেলহীন যন্ত্র যেমন কাজ করতে পারে না তেমনই পানি ছাড়া শরীর। সহজ কথায়, প্রতিদিন পর্যাপ্ত জল খেতেই হবে। তৃষ্ণার্ত না থাকলেও নিজেকে হাইড্রেটেড রাখুন পানি খেয়ে।

 

মিষ্টিকুমড়ার বিচি

সবজি হিসেবে মিষ্টি কুমড়া যেমন ভিটামিন সমৃদ্ধ, তেমনি এর বিচি পুরুষের ওষুধ হিসেবে কাজ করে। এতে আছে প্রচুর সাইটোস্টেরোল। যা পুরুষের দেহে টেসটোস্টেরন হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করে। এছাড়া এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ফ্যাটি এসিড পুরুষের শক্তি বাড়ায় ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

 

সজনে ডাঁটা

আমেরিকান জার্নাল অফ নিউরোসায়েন্স জানাচ্ছে পুরুষদের লিঙ্গ উত্থানের সমস্যা বা উদ্দীপনার ঘাটতিতে খুব ভাল কাজ করে সজনে ডাঁটা। প্রতিদিনের ডায়েট রাখতে পারেন সজনে ডাঁটা। অথবা এক গ্লাস দুধে সজনে ফুল, লবণ ও গোলমরিচ মিশিয়ে প্রতিদিন খেলেও উপকার পাবেন।

 

জিরা

জিরার মধ্যে থাকা পটাশিয়াম ও জিঙ্ক যৌনাঙ্গে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। ফলে বাড়ে যৌন উদ্দীপনা। জানাচ্ছে জার্নাল অফ দ্য সায়েন্স অফ ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার। প্রতিদিন এক কাপ গরম চায়ে জিরা ফেলে খান।

 

অলিভ অয়েল

অলিভ তেল যৌবন ধরে রাখতে সাহায্য করে। রান্নায় অলিভ অয়েল ব্যবহার করলে শরীরে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমে যায় এবং সহজে মেদ জমে না। এছাড়া প্রতিদিন ত্বকে অলিভ অয়েল ম্যাসাজ করে ঘুমালে ত্বকে সহজে বলিরেখা পড়ে না। যার ফলে যৌবন হয় দীর্ঘস্থায়ী।

 

ডার্ক চকলেট

ডার্ক চকলেট বয়স ধরে রাখতে সহায়তা করে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যারা নিয়মিত ছোট এক টুকরা ডার্ক চকলেট খান, তাদের যৌবন হতে পারে দীর্ঘস্থায়ী।

(ঢাকাটাইমস/২৬ জুলাই/আরজেড)