রবীন্দ্রনাথের ব্যবহার্য আসবাবপত্র ও শিল্পকর্মে সাজানো কুঠিবাড়ি

কৌশিক রায়, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ৩০ জুলাই ২০২২, ১৭:৪৭

বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা মনে পড়তেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে কুষ্টিয়ার শিলাইদহ গ্রামে অবস্থিত স্মৃতিবিজড়িত কুঠিবাড়িটির কথা। এখানে থরে থরে সাজানো রয়েছে রবী ঠাকুরের ব্যবহৃত নানান আসবাবপত্র এবং বিভিন্ন ধরনের শিল্পকর্ম। এর মধ্যে রয়েছে, পালকি, কাঠের চেয়ার, টি-টেবিল, সোফাসেট, আরাম চেয়ার, পালংক, স্পিডবোটসহ আরো অন্যান্য আসবাবপত্র। এছাড়াও রয়েছে তার লেখা চিঠিসহ বিভিন্ন বয়সের তোলা ছবি।

সম্পূর্ণ কুঠিবাড়িজুড়েই রয়েছে দর্শনার্থীদের নজরকাড়া আকর্ষণীয় নানা জিনিষ। প্রায় ৩০ বিঘা আয়তনের রবীন্দ্র কুঠিবাড়ির মূল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে আড়াই বিঘা জমিতে। তবে আয়তনের সম্পূর্ণ জায়গাজুড়েই রয়েছে বিভিন্ন মনোমুগ্ধকর শিল্পকর্ম।

আড়াই বিঘা জমির উপর নির্মিত ভবনটির নির্মাণশৈলী যে কারো নজরকাড়ে। ভবনটিতে রয়েছে বিভিন্ন আকারের ১৬টি কক্ষ। দোতলার ওপরের পিরামিড আকৃতির ছাদ ভবনটির সৌন্দর্য বহুগুণে বাড়িয়েছে। ভবনের তৃতীয় তলায় ছিল কবির লেখালেখির ঘর। আর এই কুঠিবাড়ির ছাদ থেকে কবি সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত এবং জ্যোৎস্না উপভোগ করতেন।

কুষ্টিয়া শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার উত্তর পূর্বে কুমারখালি উপজেলার অন্তর্গত একটি গ্রাম শিলাইদহ। এই শিলাইদহ গ্রামে অবস্থিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত কুঠিবাড়িটি।

১৮০৭ সালে রামলোচন ঠাকুরের উইল সূত্রে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতামহ দ্বারকানাথ ঠাকুর এই অঞ্চলের জমিদারি পান। পরবর্তীতে ১৮৮৯ সালে জমিদারি দেখাশোনার জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এখানে জমিদার হয়ে আসেন। ১৯০১ সাল পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলাইদহের এই কুঠিবাড়ি থেকেই জমিদারি পরিচালনা করেন। সে সময় এই কুটিবাড়ি থেকেই তিনি সোনার তরী, চিত্রা, চৈতালী গ্রন্থ লিখেন এবং গীতাঞ্জলী কাব্যের ইংরেজি অনুবাদ শুরু করেন।

১৯৫৮ সাল থেকেই শিলাইদহ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়িটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। বর্তমানে এটি শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আর এই জাদুঘরে স্থান পেয়েছে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিভিন্ন বয়সের ছবি, ব্যবহার্য জিনিস যেমন চঞ্চলা ও চপলা নামের দুটো স্পিডবোট, ৮ বেহারার পালকি, পল্টুন, টি টেবিল, কাঠের চেয়ার, সোফাসেট, পালংক এবং কবির আঁকা বিভিন্ন চিত্রকর্ম।

বিভিন্ন সময় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি দেখতে আসেন ভ্রমণপিপাসু মানুষ। দেখতে আসেন নানা শিল্পকর্মে সাজানো এই ঐতিহাসিক বাড়িটি। এছাড়াও শিলাইদহ কুঠিবাড়িটিতে প্রতি বছর ২৫ বৈশাখ জাতীয় পর্যায়ে কবিগুরুর জন্মবার্ষিকী পালিত হয়। এ সময় দর্শনার্থীসহ আয়োজনে অংশ নেন দেশ-বিদেশের রবীন্দ্র গবেষক ও নানা গুণীজন। কুঠিবাড়ি পরিণত হয় রবীন্দ্র ভক্তদের এক মিলনমেলায়।

ঢাকা থেকে যেভাবে যাবেন কুঠিবাড়িতে:

ঢাকা থেকে যেতে চাইলে বাস বা ট্রেনে দুভাবেই যেতে পারবেন। বাসে গেলে কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসে কুষ্টিয়ার মজমপুর গেটে নামতে হবে। এরপর অটোরিকশা, সিএনজিতে অথবা বাসে চড়ে সহজেই শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতে যেতে পারবেন।

ট্রেনে যেতে চাইলে কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠতে হবে। এরপর পোড়াদহ বা ভেড়ামারা স্টেশনে নামতে হবে। ভেড়ামারা বা পোড়াদহ থেকে বাস বা সিএনজিতে করে কুষ্টিয়া শহরে এসে অটোরিকশা, সিএনজি বা বাসে সহজেই শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতে যেতে পারবেন।

(ঢাকাটাইমস/৩০জুলাই/কেআর/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :