ঢাকা টাইমসের সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসী হামলার নিন্দায় সাংবাদিক নেতারা

প্রকাশ | ০২ আগস্ট ২০২২, ১৯:২৯ | আপডেট: ০২ আগস্ট ২০২২, ১৯:৪৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় দৈনিক ঢাকা টাইমসের নিজস্ব প্রতিবেদক ও আলফাডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম নাঈমের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা।

তারা বলছেন, সাংবাদিকতা পেশার বিরোধিতাকারীরা দেশ এবং জাতির শত্রু। সাংবাদিকদের ওপর হামলার মতো ঘটনার সুরাহা হওয়া দরকার। দুঃখজনকভাবে শেষ পর্যন্ত এসব ঘটনা নিয়ে কিছুই করা হয় না। সাংবাদিক মুজাহিদের ওপর হামলার ঘটনায় প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে কঠোর কর্মসূচি নেওয়া হবে।

আলফাডাঙ্গায় গত সোমবার দুপুরে সাংবাদিক মুজাহিদুল ইসলাম নাঈমের ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয়। পৌর মেয়র সাইফুর রহমান সাইফারের ভাই জাপান মোল্যার নেতৃত্বে হামলায় গুরুতর আহত হন মুজাহিদ। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

এদিকে ভুক্তভোগী সাংবাদিক মুজাহিদ বাদী হয়ে মঙ্গলবার সকালে আলফাডাঙ্গা থানায় একটি মামলা করেছেন। জাপান মোল্যা ও পারুল বেগম নামে এক নারীর নামোল্লেখ করে করা মামলায় অজ্ঞাত আরও পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার পর পুলিশ আসামি পারুল বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে। প্রধান আসামি পলাতক জাপান মোল্যাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওয়াহিদুজ্জামান।

সাংবাদিকদের ওপর হামলা কখনোই কাম্য নয় মন্তব্য করে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘সাংবাদিকরা সমাজ ও রাষ্ট্র বির্নিমানের জন্য কাজ করেন। রাষ্ট্রের ভূলত্রুটি ধরিয়ে দেওয়ার জন্য কাজ করেন। সাংবাদিকদের কোণঠাসা করার জন্য সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে।’

সাংবাদিক মুজাহিদের ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে এই সাংবাদিক নেতা বলেন, ‘আলফাডাঙ্গার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি করছি। এখানে মেয়র বা মেয়রের ভাই যতই প্রভাবশালী হোক না কেন আইন সবার জন্য সমান। তবে এসব ক্ষেত্রে আমরা দেখি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও শেষ পর্যন্ত কিছুই করা হয় না।’

সাংবাদিকদের ওপর ঘটনার সুরাহা হওয়া উচিত মন্তব্য করে সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘যারা ক্ষমতা দেখিয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করে তাদেরও আহবান জানাবো এসব ঘটনা থেকে বেরিয়ে আসতে।’

সাংবাদিক মুজাহিদের ওপর হামলার ঘটনায় ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন উদ্বিগ্ন ও আতকিংত জানিয়ে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।

সাংবাদিক নেতা আকতার হোসেন বলেন, ‘সাংবাদিকরা যদি স্বাধীনভাবে তাদের মত প্রকাশ করতে না পারে তাহলে আইনের শাসন থাকে না। সাংবাদিকতা পেশার যারা বিরোধিতা করে তারা দেশ এবং জাতির শত্রু। আমি মুজাহিদের ওপর হামলার ঘটনায় অবিলম্বে জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার এবং বিচারের দাবি জানাচ্ছি।’

মুজাহিদের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু। তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা খুবই অনাকাঙ্খিত। আমি এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা চাই না এ ধরণের ঘটনার আর কোনো পুনরাবৃত্তি ঘটুক।’

‘সাংবাদিকরা এমনিতেই একটা কঠিন অবস্থার মধ্যে দিন পার করেন। আমি আমার আহত সহকর্মীর চিকিৎসা ব্যয় হামলাকারীদের থেকে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। একইসঙ্গে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করারও দাবি জানাই।’

মুজাহিদের ওপর হামলার ঘটনায় প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব দীপ আজাদ।

সাংবাদিক নেতা বলেন, ‘একের পর এক সাংবাদিকেদর নির্যাতন হচ্ছে এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। প্রশাসনকে বার বার বলার পরেও তেমন কোনো প্রতিকার না পাওয়া খুবই দুঃখজনক।’

‘প্রশাসন যথাযথ বব্যস্থা না নিলে আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের পক্ষে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে’—যোগ করেন বিএফইউজে নেতা দীপ আজাদ।

সাংবাদিক মুজাহিদের ওপর হামলার ঘটনাকে ন্যাক্কারজনক মন্তব্য বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, ‘এই ঘটনা খুবই ন্যাক্কারজনক। এ ঘটনার যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আমরা আহবান জানাই।’

এই সাংবাদিক নেতা বলেন, ‘শুধু আলফাডাঙ্গা নয় সারাদেশ সাংবাদিক নির্যাতনের মাত্রা বেড়েই চলছে। সারাদেশেই সাংবাদিকদের ওপর হামলা করার মতো একটি জঘন্য পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের কাছে এর বিচার দাবি করার পাশাপাশি সাংবাদিকদেরও এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্য গড়ে তোলার আহবান জানাচ্ছি।’

সন্ত্রাসী ও দুর্নীতিবাজরা সুযোগ নিতে সাংবাদিকদের ওপর হামলার করে থাকে মন্তব্য করে বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, ‘সাংবাদিকদের ঐক্য গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। পাশাপাশি দেশের প্রশাসনকেও বলবো সাংবাদিকদের ওপর যারা হামলা করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে। অন্যথা বিএফইউজের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা করবো।’

(ঢাকাটাইমস/০২আগস্ট/জেএ/এমএইচ/ডিএম)