শিল্পীদের পরিচয়পত্রে নিপুণের স্বাক্ষর, আপত্তি জায়েদ খানের

প্রকাশ | ০৪ আগস্ট ২০২২, ১৭:১২ | আপডেট: ০৪ আগস্ট ২০২২, ১৭:৩৪

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

নতুন পরিচয়পত্র পাচ্ছেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সদস্যরা। গত ১ আগস্ট থেকে শুরু হয়েছে এই কার্যক্রম। সেদিন সমিতির নতুন সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চনের হাত থেকে পরিচয়পত্র নেন চিত্রনায়ক রিয়াজ, ফেরদৌস, ইমন, সায়মন, চিত্রনায়িকা শাহনূরসহ অনেকে।

সাধারণ শিল্পীদের অনেকেও এই পরিচয়পত্র পেয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই পরিচয়পত্রের ছবিসহ পোস্ট দিয়ে তারা উচ্ছ্বাসও প্রকাশ করেছেন। তবে ক্ষুব্ধ হয়েছেন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। কারণ পরিচয়পত্রগুলোতে সাধারণ সম্পাদক পদের জায়গায় চিত্রনায়ক নিপুণ আক্তারের স্বাক্ষর।

আপত্তি জানিয়ে জায়েদ খান ঢাকা টাইমসকে বলেছেন, নিপুণ অবৈধভাবে স্বাক্ষর করে পরিচয়পত্র দিচ্ছেন। বিষয়টি সে অন্যায় করছে। কারণ, আদালত সাধারণ সম্পাদক পদের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়ে রেখেছেন। আদালতের রায়কে শ্রদ্ধা জানিয়ে আমি কোনো ধরনের কাজে অংশ নিচ্ছি না।’

এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নেবেন কিনা জানতে চাইলে জায়েদ খান জানান, ‘অবশ্যই আমি আইনি পদক্ষেপ নেব। কারণ, নিপুণ আইনের তোয়াক্কা না করে সমিতির সব ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। আমি আমার আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে শিগগিরই পদক্ষেপ নেব।’

আদালতের চূড়ান্ত রায় হওয়ার আগেই শিল্পীদের পরিচয়পত্রে কেন তার স্বাক্ষর, এ সম্পর্কে জানতে চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তারের মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এরপর কথা হয় শিল্পী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক চিত্রনায়িকা শাহনূরের সঙ্গে। তিনি ঢাকা টাইমসকে জানান, যারা চাঁদা পরিশোধ করেছেন, তাদেরকে পরিচয়পত্র দেওয়া হচ্ছে।’ সেখানে নিপুণের স্বাক্ষর কেন প্রশ্ন করলে শাহনূর বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের সভাপতি কাঞ্চন ভাই-ই ভালো বলতে পারবেন।’   

পরে যোগাযোগ করা হয় সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে। শিল্পীদের পরিচয়পত্রে কেন নিপুণের স্বাক্ষর? এই প্রশ্নের জবাবে অভিনেতা ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘হ্যাঁ, নিপুণ স্বাক্ষর করেছে।’ কিন্তু উচ্চ আদালতে তো পদটির ব্যাপারে কোনো সুরাহা হয়নি? কাঞ্চন বলেন, ‘আদালত থেকে তো তাকে নিষেধও করেনি।’

গত ২৮ জানুয়ারি এফডিসিতে অনুষ্ঠিত হয় চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচন। সেখানে সাধারণ সম্পাদক পদে টানা তৃতীয়বারের মতো জয় পান চিত্রনায়ক জায়েদ খান। অল্প ভোটের ব্যবধানে হেরে যান তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নিপুণ আক্তার।

পরবর্তীতে জায়েদ খানের বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ তোলেন নিপুণ। তারই প্রেক্ষিতে তুলে ৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়। তার পরিবর্তে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় চিত্রনায়িকা নিপুণকে সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী দেখানো হয়।

এর দুদিন পরে গত ৭ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনি আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন জায়েদ খান। পরদিন সেই রিটের শুনানি শেষে নির্বাচনি আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে জায়েদ খানকে তার পদে বহাল থাকার আদেশ দেয় হাইকোর্ট। একই সঙ্গে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেন।

পরে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে গত ৮ ফেব্রুয়ারি আপিল আবেদন জানান নিপুণ আক্তার। আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে শুনানির পর গত ৯ ফেব্রুয়ারি সাধারণ সম্পাদক পদের ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। এই বিষয়টি এখনো আদালতে বিচারাধীন।

(ঢাকাটাইমস/০৪আগস্ট/এলএম/এএইচ)