ন্যান্সি পেলোসির ওপর চীনের নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশ | ০৫ আগস্ট ২০২২, ১৪:৫২ | আপডেট: ০৫ আগস্ট ২০২২, ১৫:২৮

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

তাইওয়ান সফরের মধ্য দিয়ে চীনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে অবমূল্যায়েনের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি এবং তার পরিবারের সদস্যদের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে চীন।

চীনের গ্লোবাল টাইমস জানায়, শুক্রবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক ঘোষণায় এ সিদ্ধান্তের কথা জানায়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেন, তাইওয়ানে ন্যান্সির সফরের মধ্য দিয়ে চীনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে।

গত ২ আগস্ট মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ১০টা ৪৪ মিনিটে মার্কিন সামরিক বাহিনীর একটি বিমানে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর থেকে তাইপে পৌঁছান ন্যান্সি। সফরে তাইওয়ানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।

ন্যান্সি বলেন, ‘আমাদের প্রতিনিধিদল তাইওয়ানে এসেছে দ্ব্যর্থহীনভাবে এটা স্পষ্ট করে দিতে যে আমরা তাইওয়ানের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি ত্যাগ করব না। আমিও এই প্রতিনিধিদলের একজন গর্বিত সদস্য। আমরা আমাদের স্থায়ী বন্ধুত্বের জন্য গর্বিত।’

‘‘এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে তাইওয়ানের প্রতি আমেরিকার সংহতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর আমরা সেই বার্তাটিই এখানে নিয়ে এসেছি।’’

তাইওয়ানের প্রতি ‘অবিচল সমর্থন’ জানানোয় পেলোসির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইংওয়েন।

তার এ সফরকে কেন্দ্র করে কঠোর পরিণতি ভোগের হুঁশিয়ারি দিয়েছিল চীন। কারণ তাইওয়ানকে নিজেদের অঞ্চল হিসেবে গণ্য করে চীন। আর ন্যান্সি সাংবিধানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তি। ফলে তার সফরের মধ্য দিয়ে তাইওয়ানের স্বাধীনতার ইস্যুটি গুরুত্ব পাবে। একারণে ন্যান্সির সফর ঠেকাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে চীন। এমনকি ন্যান্সিকে বহনকারী বিমানে হামলারও ইঙ্গিত দেওয়া হয়। কিন্তু সব হুঁশিয়ার উপেক্ষা করে তাইওয়ান সফর করেন ন্যান্সি।

বুধবার (৩ আগস্ট) ন্যান্সি তাইওয়ান ত্যাগ করলে বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) থেকে তাইওয়ানে সামরিক মহড়ার ঘোষণা দেয় চীন। পাশাপাশি তাইওয়ান থেকে বিভিন্ন পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করেছে চীন।

বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) চীনের নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী এবং অন্যান্য সামরিক বাহিনী যৌথভাবে তাইওয়ানের ছয়টি অঞ্চলের জলসীমা এবং আকাশসীমায় সামরিক মহড়া শুরু করে। আগামী রবিবার পর্যন্ত এ সামরিক মহড়া চলবে। মহড়া চলাকালীন ওই অঞ্চলগুলো এড়িয়ে চলার জন্য সব জাহাজ এবং বিমানকে সতর্ক করা হয়েছে।

সামরিক মহড়া চলাকালে তাইওয়ানের জলসীমানায় নয়টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে চীন।  

এছাড়া, তাইওয়ানের জলসীমার চারিদিকে চীনের সামরিক মহড়ার কারণে পূর্ব এশিয়ায় বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত বাণিজ্যিক জলসীমায় পণ্য পরিবহন বাধাগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে বাধ্য হয়ে তাইওয়ানের জলসীমার পরিবর্তে অন্য রুটে পণ্য পরিবহন করতে হচ্ছে। ফলে বিশ্বে স্বাভাবিক খাদ্য সরবরাহ বাধাগ্রস্তের পাশাপাশি মুদ্রাস্ফীতি কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেতে পারে।

(ঢাকাটাইমস/০৫আগস্ট/আরআর)