রাজধানীতে বাস কম, ভোগান্তি চরমে, দ্বিগুণ ভাড়া নিয়ে বিতণ্ডা

প্রকাশ | ০৬ আগস্ট ২০২২, ১০:৫৯ | আপডেট: ০৬ আগস্ট ২০২২, ১২:৫৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পর রাজধানীর সড়কে দেখা মিলছে না গণপরিবহনের। সকাল থেকেই রাজধানীতে বাস চলাচল কম। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও বাস পাচ্ছেন না যাত্রীরা। দুয়েকটা বাস মিললেও আদায় করা হচ্ছে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়েও বেশি। এ নিয়ে চালক-সহকারীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়াচ্ছেন যাত্রীরা।

শনিবার সকাল থেকে রাজধানীর শ্যামলী, ফার্মগেট, নতুন বাজার, বাড্ডা, শাহবাগ ও বাংলামোটরসহ বিভিন্ন পয়েন্টে এ চিত্র দেখা গেছে।

এদিকে গণপরিবহন সংকটে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষ। অনেকেই হেঁটে হেঁটে দূরত্ব কমাচ্ছেন। পরে কিছুটা রিকশায় চড়ে যাচ্ছেন। আর বাসে উঠতেও পারলেও ভাড়া আদায় করা হচ্ছে দেড় গুণ থেকে দ্বিগুণ! আর অতিরিক্ত ভাড়া আদায় নিয়ে গাড়িতে গাড়িতে বাকবিতণ্ডার কোনো শেষ নেই।

যাত্রীদের অভিযোগ, তেলের দাম বেড়েছ, কিন্তু এখনও ভাড়া বাড়ে নাই। তাহলে আগে থেকেই ভাড়া বেশি নিচ্ছে কেনো। শুধু তাই নয়, দাম বাড়ানোর আগে থেকেই রাজধানীর পরিবহণগুলো বেশি ভাড়া নিয়ে আসছে। সর্বশেষ যখন ভাড়া সমন্বয় করা হয় সেই ভাড়ার চেয়ে বেশি নিয়ে আসছে গণপরিবহনগুলো। বেশিরভাগ বাসে ওয়েবিলের নামে সর্বনিম্ন ভাড়া রাখা হয় ১৫ টাকা। অথচ বাস ভেদে এটা হওয়ার কথা ৮ থেকে ১০ টাকা।  

তানজিল পরিবহনের একটি বাসে মিরপুর চিড়িয়াখানা থেকে ফার্মগেটের ভাড়া চাওয়া হচ্ছিল ২৫ টাকা ও  গুলিস্তানের ৪০ টাকা। গতকাল পর্যন্ত এই দূরত্বে ভাড়া নেওয়া হয়েছে ১৫ টাকা ও ২৫ টাকা৷

বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তার দুই পাশে রাজধানীতে চলাচল করা বাসগুলো সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। চালক-হেলপাররা বলছেন, ডিজেলের দাম হুট করে যে পরিমাণ বেড়েছে, তাতে আগের ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করা বাসগুলোর পক্ষে সম্ভব হবে না। তাই আপাতত যাত্রী পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে।

এদিকে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পর আজ সকাল থেকে চট্টগ্রাম নগরীতে গাড়ি না চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপ। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি বেলায়েত হোসেন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নতুন ভাড়া সমন্বয় না করা পর্যন্ত বাস বন্ধ থাকবে বলে জানান তিনি।

বাস বন্ধ রাখার বিষয়ে বেলায়েত হোসেন বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে দেওয়ার কারণে রাতে পেট্রোল পাম্পগুলো তেল দেয়নি। সরকার জ্বালানি তেলের দাম ৪২ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে। এত দাম দিয়ে জ্বালানি কিনে একই ভাড়ায় আমাদের পক্ষে গাড়ি চালানো সম্ভব না।

শুক্রবার রাতে হঠাৎ করে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় সরকার। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন ও পেট্রোলের মূল্য ভোক্তা পর্যায়ে পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। রাত ১২টার পর থেকে ডিপোর ৪০ কিলোমিটারের ভেতর ভোক্তা পর্যায়ে খুচরা মূল্য লিটারপ্রতি ডিজেল ও কেরোসিন ১১৪ টাকা, লিটারপ্রতি অকটেন ১৩৫ টাকা ও লিটারপ্রতি পেট্রোল ১৩০ টাকা হবে। শুক্রবার রাত ১২টা থেকে এই দাম কার্যকর হয়েছে।

সর্বশেষ ২০২১ সালের ৪ নভেম্বর ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানো হয়। সেই সময় এই দুই জ্বালানির দাম লিটারপ্রতি ৬৫ টাকা থেকে ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৮০ টাকা করা হয়। ৮ মাসের ব্যবধানে আবার বাড়ানো হলো তেলের দাম। তবে ওই সময় পেট্রোল আর অকটেনের দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছিল। এবার সব ধরনের জ্বালানি তেলেরই দাম বাড়ানো হলো।

(ঢাকাটাইমস/০৬আগস্ট/কেআর/ইএস)