জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি: জনজীবনে প্রভাব নিয়ে যা বলছেন আ.লীগ নেতারা

প্রকাশ | ০৬ আগস্ট ২০২২, ২০:৫৩ | আপডেট: ০৬ আগস্ট ২০২২, ২০:৫৫

জাফর আহমেদ, ঢাকাটাইমস

ডিজেলসহ অন্যান্য জ্বালানি তেলের দাম এক লাফে অনেকটাই বাড়াল সরকার। এর ফলে পরিবহনের মাধ্যমে বাজারে আসা সব পণ্যেরই দাম বাড়বে। পাশাপাশি ভাড়া বাড়বে যাত্রী বহন করা প্রায় সব পরিবহনেই। ফলে সব পরিবারেরই নতুন করে সাজাতে হবে মাসিক খরচের হিসাব।

হঠাৎ করেই জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি জনগণের বিরূপ ধারণা সৃষ্টি হবে কি না বা আগামী জাতীয় নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে কি না—ঢাকা টাইমস জানতে চেয়েছে দলটির একাধিক নেতার কাছে।

তারা মনে করছেন, জ্বালানি তেলের দামবৃদ্ধির ফলে সরকারের ওপর কিছুটা বিরূপ প্রভাব পড়লেও আগামী জাতীয় নির্বাচনে এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভবনা নেই। সরকারের প্রতি জনগণের যে আস্থা ও বিশ্বাস আছে তার কেনো ঘাটতি হবে না।

ঢাকা টাইমসকে আওয়ামী লীগ নেতারা  বলেন, দেশের ভালোর জন্যই বিশ্বের সঙ্গে সমন্বয় করে তেলের দাম বৃদ্ধি করেছে সরকার। দেশের মানুষ জানে মহামারী করোনাভাইরাসে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ ভালো আছে। আর সেটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের দক্ষ নেতৃত্বের গুণে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, নিত্যপণ্যের দাম এমনিই ঊর্ধ্বমুখী। দেশজুড়ে বিদ্যুৎ রেশনিং আর গ্যাস সংকটে শিল্প-কারখানার উৎপাদনে গতি কমেছে। আর ঠিক তখনই জ্বালানি তেলের দাম বাড়াল সরকার। আবার গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কথা বলা হচ্ছে। সুতরাং জনজীবনে এর প্রভাব পড়বে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সস্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সরকার গত অর্থবছরে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ৫৩ হাজার কোটি টাকা বা প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার ভর্তুকি দিয়েছে। আশেপাশের দেশগুলো এধরণের ভর্তুকি দেয়নি। সেসব দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য অনেক আগেই বাড়ানো হয়েছে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তাদের মূল্য আমাদের চেয়ে অনেক বেশি ছিল। মূল্যবৃদ্ধির পরও দেশে জ্বালানি তেলের দাম ভারতের সমান ও আশেপাশের অনেক দেশের তুলনায় কম। আমাদের দেশে মূল্য কম হওয়ায় সীমান্ত দিয়ে প্রচুর জ্বালানি তেল পাচার হয়ে যাচ্ছিল।’

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বিশ্বের সঙ্গে সমন্বয় করে বাংলাদেশেরও দ্রব্যমূল্য এবং তেলের দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারাবিশ্বে জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারের প্রতি দেশের মানুষের বিশ্বাস ও আস্থা আছে। তাই জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে এখন কিছুটা বিরূপ প্রভাব পড়লেও আগামী নির্বাচনে এর কোনো প্রভাব পড়বে বলে আমি মনে করি না। তাছাড়া আমাদের আশেপাশের দেশগুলোতে তেলের দাম যা আছে সেই তুলনায় বেশি বাড়েনি।’

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বিশ্বের সঙ্গে সমন্বয় করে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। এতে করে আওয়ামী লীগ সরকারের জনপ্রিয়তা কমবে বলে আমি মনে করি না। ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বে জ্বালানি তেলের সংকটের মধ্যেও শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশের অবস্থা স্থিতিশীল আছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশি দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম কম। তাই পাচারের একটা আশঙ্কা থাকে। এই বাস্তবতা থেকেই জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া বিশ্বের প্রায় সব দেশেই বাংলাদেশের তুলনায় জ্বালানি তেলের দাম বেশি।’

(ঢাকাটাইমস/০৬আগস্ট/ডিএম)