শারীরিক ভাষায় বাজিমাত করার কৌশল

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১০ আগস্ট ২০২২, ১০:৩৩

শারীরিক ভাষা অথবা আদব-কায়দা দেখে সহজেই বুঝে নেওয়া যায় মানুষটির ব্যক্তিত্ব ৷ মানুষের ব্যক্তিত্ব খুব সহজেই সবাইকেই আকর্ষিত করে। তাদের চলাফেরা, কথাবার্তা, সবকিছুই মুগ্ধ করে। অনেক সময় শরীরের ভাষা বিরক্তির কারণ হয়। বিরক্তিকর শরীরের ভাষা থাকতে পারে আপনারও। এ সুযোগে বদলে ফেলুন সেটাও। ভাবছেন কীভাবে বদলাবেন? মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা শারীরিক ভাষা বিষয়ে বিশ্লেষণ করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, প্রতিটি মানুষেরই এমন কিছু বৈশিষ্ট্য থাকে যা তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তোলে।

গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের মনের ভাব প্রকাশ করার ক্ষেত্রে উচ্চারিত শব্দ আর বাক্যের ভূমিকা মাত্র ৭ শতাংশ। বাকি ৯৩ শতাংশই হচ্ছে নন-ভার্বাল কমিউনিকেশন; যার মধ্যে ৫৫ শতাংশ হচ্ছে তার দেহের ভাষা বা বডি ল্যাংগুয়েজ আর ৩৮ শতাংশ হচ্ছে স্বরভঙ্গি।

শব্দের ওঠানামা, স্বর প্রক্ষেপণ আর কখন থামতে হবে আর কখন দ্রুত বলতে হবে, কখন আস্তে বলবে কখন জোরে বলবে সেগুলো! এর মানে দাঁড়ায় আমাদের মনের ভাবের বেশির ভাগ অংশই দেহের ভাষায় প্রকাশিত হয়। আমাদের আবেগ আর চিন্তা প্রকাশ পায় দেহের ভাষার মধ্য দিয়ে। প্রকাশ পায় আমাদের ব্যক্তিত্বও। চলুন জেনে নেওয়া যাক শারীরিক ভাষায় বাজিমাত করার কৌশল।

কমিউনিকেশন ও এক্সপ্রেশন

অন্যের সামনে নিজেকে স্মার্টলি রিপ্রেজেন্ট করার জন্য নির্দ্বিধায় সুন্দর করে কথা বলার ভূমিকার শেষ নেই। নিজের পছন্দের ব্যক্তি, মনের মানুষ কিংবা অফিসের বসকে নিজের মুখের কথা দিয়েই তাদেরকে নিজের প্রতি আকর্ষিত করতে হয়। যারা ভাল করে কথা বলতে পারেন, তাদের প্রতি খুব সহজেই আকৃষ্ট হন। এই ধরনের ক্ষমতা, খুব সহজেই মানুষকে অন্যদের থেকে আলাদ ও প্রিয় করে তোলে।

আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে দাঁড়ানো

অনেক সময় কিছু মানুষের দেখা পাওয়া যায়, যারা কারও প্রশংসা করছেন অথচ তাদের মাথা নিচু৷ তখন বুঝতে হবে সেই মানুষটি হয় তো লাজুক হতে পারেন, অথবা সে রকম আত্মবিশ্বাসী নন৷ মানুষের দাঁড়ানোর স্টাইল একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য। কারণ কোনও মানুষ যখন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে দাঁড়ান তখন তাকে খুবই আকর্ষণীয় লাগে। তাদের আত্মবিশ্বাস ও দাঁড়ানোর ভঙ্গি বিপরীতে থাকে মানুষটিকে আকৃষ্ট করে।

সম্মতি জানাতে

কর্মক্ষেত্রে অনেক সময় দলগতভাবে কোনও কাজ করতে গিয়ে সম্মতি জানানোর সময় হাসি , মাথা নাড়া , একই অনুকরণ বা নানা রকমের অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে নিজেকে বাজিমাত করতে পারেন৷ নিজের ইচ্ছা বা সম্মতি বুঝিয়ে দিতে পারেন৷

রাতে ভাল করে ঘুমানো

বিষয়টি কিছুটা অদ্ভুত শোনালেও মনে রাখবেন যারা রাতে ভাল করে ঘুমোন তারা দিনভর ফ্রেশ থাকেন। আর সেই ফ্রেশনেস তাদের পরিপূর্ণ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। কিন্তু ঘুম ভাল না হলে স্বভাবতই চোখে মুখে ফুটে ওঠে ক্লান্তির ছাপ। তাই রাতের ভাল ঘুম যে কোনও মানুষকে অনেক বেশি আকর্ষণীয় করে তোলে।

শান্ত স্বভাবের মানুষ

মনোরোগ বিশেষজ্ঞের মতে, শান্ত স্বভাবের মানুষেরা যে কোনও পরিস্থিতিতে অপরের সঙ্গে ভালভাবে কমিউনিকেট করতে পারেন। কিন্তু যারা তুলনামূলক চঞ্চলমনস্ক বা অল্পেতেই উত্তেজিত হয়ে পড়েন তাদের অনেক সময়ই মানুষ এড়িয়ে চলেন।

নিজের উপস্থিতিকে মনে রাখতে

কারও সঙ্গে কথা বলার বা প্রথম সাক্ষাতের সময় যদি দু’হাত ভাঁজ করে নীচের দিকে তাকিয়ে দাঁড়ান তবে আপনার উপস্থিতি ওই ব্যক্তির কাছে যা গুরুত্বপাবে তার থেকে অনেক বেশি গুরুত্ব পাবে যদি আপনি চোখে চোখ রেখে কথা বলেন৷ এছাড়াও সম্ভব হলে এক কাপ কফি খাওয়ান এবং যাওয়ার আগে নিজের একটা বিজনেস কার্ড দিন৷

আকর্ষণীয় গন্ধ

আকর্ষণীয় গন্ধ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সুন্দর গন্ধে আকৃষ্ট হন মানুষ। এক্ষেত্রে অনেক ভাল পারফিউম বা সুগন্ধির গন্ধে মানুষের আসক্তি দেখা যায়। তাই আকর্ষণীয় পারফিউম সহজেই কোনও একজনকে অপরের থেকে আলাদা করে তুলতে পারে।

উত্তেজনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে

কখনও কখনও কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত উত্তেজনা চলা ফেরা বা চেহারায় ফুটে ওঠে৷ এতে করে অন্যকে নিজের দিকে আকর্ষণীয় করা যায় না। এতে করে হিতে বিপরীত হয়ে যায়। তখন বেশি ছটফট না করে শান্তভাব বজায় রাখুন৷ অতিরিক্ত টেনশন হলে গভীর শ্বাস নিন ধীরে ধীরে ছাড়ুন৷

চোখে চোখ

কেউ মিথ্যা বলছে কি-না, নার্ভাস কি-না বোঝা যায় চোখের দিকে তাকালে। আমাদের অনেক আবেগ আছে, যা চোখ দিয়েই বোঝা যায়। বলা যায়, মনের কথাগুলোই চোখ বলে দেয়। বিখ্যাত সেই গানটির কথাই তখন মনে হয়, চোখ যে মনের কথা বলে। চোখের না বলা ভাষা দিয়েই বুঝিয়ে দেওয়া যায়, আমি তোমায় কতটা ভালোবাসি কিংবা তোমায় কতটা ঘৃণা করি। তবে চোখের ভাষা বুঝতে হলে চোখের দিকে তাকাতে হবে গভীর মনোযোগ দিয়ে।

পাশে আছেন বুঝিয়ে দিন

এক সঙ্গে কাজ করার সময় নানা সমস্যার পরিস্থিতি তৈরি হয়৷ অনেক সময় অতিরিক্ত টেনশন ধরে রাখতে না পারায় পারস্পরিক মতবিরোধ হয়৷ চেষ্টা করুন তর্ক না করার৷ মেজাজ যতটা সম্ভব শান্ত রাখুন৷ যতটা সম্ভব এক জায়গায় থেকে বুঝিয়ে দিন পাশে আছেন৷ এক্ষেত্রে কথাবার্তার সময় হাসি ব্যবহার করতে পারেন৷

কথা বলার সময়

অনেক সময় কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে হাত নাড়লে শ্রোতার কাছে তা অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য হয়৷ তবে খেয়াল রাখতে হবে হাত নাড়া যেন অতিরিক্ত না হয় এবং কথা বলার সঙ্গে যেন সামঞ্জস্য থাকে৷

কঠিন কাজকে সহজ করতে

কাজের মধ্যে কখনও কখনও কঠিন কাজের সম্মুখীন হতেই হয়৷ যদি অত্যন্ত ভয় পেয়ে , চিন্তিত হয়ে , ভ্রু কুচকে কাজ শুরু করি তবে মুখের পাশাপাশি মনেও এর ছাপ পড়বে৷ খুব স্বাভাবিক ভাবেই স্ট্রেস দেখা দেবে৷ অতিরিক্ত স্ট্রেস এর ফলে হাই ব্লাডপ্রেসার , সুগার অচিরেই এসে পড়বে৷ অবসাদ এমনকী শরীরের নানা গ্রন্থি থেকে নিঃসরণেও হ্রাস -বৃদ্ধি ঘটবে৷ যার ফল মারাত্মক হতে পারে৷ তাই কঠিন কাজ শুরু করার আগে রিল্যাক্সড থাকুন৷ পজিটিভ মনোভাব নিয়ে কাজ শুরু করুন৷

(ঢাকাটাইমস/১০ আগস্ট/আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :