সামিয়া রহমানকে আগাম অবসরের অনুমতি, আগে ১১ লাখ টাকা শোধতে হবে

প্রকাশ | ১০ আগস্ট ২০২২, ১৬:০৪ | আপডেট: ১০ আগস্ট ২০২২, ১৭:৪০

ঢাবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সামিয়া রহমানকে দেনা-পাওনা সমন্বয় সাপেক্ষে আগাম অবসরের অনুমতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের দপ্তর থেকে সামিয়ার নামে পাঠানো এ-সংক্রান্ত চিঠির অনুলিপি থেকে এ তথ্য জানা যায়। গত ৩ আগস্ট তাকে চিঠিটি দেওয়া হয় বলে আজ বুধবার জানা যায়।

গবেষণা জালিয়াতির দায়ে গত ২৮ জানুয়ারি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিয়া রহমানকে পদাবনতি করে ‘সহকারী অধ্যাপক’ করা হয়। গত মার্চের শেষ দিন তিনি আগাম অবসরের আবেদন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন তিনি।

আবেদন অনুযায়ী সামিয়াকে ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর থেকে দেনা-পাওনা সমন্বয় সাপেক্ষে আগাম অবসরের অনুমতি দেয় সিন্ডিকেট।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, সামিয়ার কাছে বিশ্ববিদ্যালয় ১১ লাখ ৪১ হাজার ৬০১ টাকা পাবে। এই টাকা পরিশোধের জন্য তাকে তাগাদা দেওয়া হয় চিঠিতে। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে তার কাছে বিশ্ববিদ্যালয় কোনো টাকা পাবে না বলে দাবি করেন সামিয়া রহমান। তিনি একে মামলায় হেরে বিশ্বদ্যিালয়ের প্রতিশোধের চেষ্টা বলে বর্ণনা করেছেন সংবাদমাধ্যমের কাছে।

সামিয়াকে দেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিঠিটি নিচে হুবহু তুলে ধরা হলো:

‘প্রিয় মহোদয়া,

আপনার ৩১-০৩-২০২২ তারিখের পরের বরাতে এবং ২৬-০৪-২০২২ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুসারে জানানো যাচ্ছে যে, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে আপনাকে দেনা-পাওনা সমন্বয় সাপেক্ষে ১৫-১১-২০২১ তারিখ হতে বিধি মোতাবেক আগাম অবসর (আর্লি রিটায়ারমেন্ট) গ্রহণের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে। সিন্ডিকেটের ২৬-০৪-২০২২ তারিখের সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে আপনাকে আরও জানানো যাচ্ছে যে, আপনার নিকট বিশ্ববিদ্যালয়ের পাওনা টাকা পরিশোধ না করলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

‘হিসাব পরিচালকের দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী আপনার দেনা-পাওনা: মূল বেতন ৬,০৭,৫৭৪ টাকা, বাড়ি ভাড়া ৩,০৩,৭৮৭ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ১২,৮০০ টাকা, গবেষণা ভাতা ৪২,৬৬৭ টাকা, অফ ক্যাম্পাস ভাড়া ৮,৫৩৩ টাকা, বৈশাখী ভাতা ১৪,২৪০ টাকা, উৎসব ভাতা ১,৪২,৪০০ টাকা, মোবাইল ভাতা ৯,৬০০ টাকা। মোট ১১ লাখ ৪১ হাজার ৬০১ টাকা (এগার লাখ একচল্লিশ হাজার ছয় শত এক টাকা মাত্র)। আপনার প্রভিডেন্ট ফান্ড-এ সুদসহ জমাকৃত টাকার পরিমাণ ১৬,৫৮,২১৬ টাকা (ষোল লাখ আটান্ন হাজার দুই শত ষোল টাকা)।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে তার দেনা ১১ লাখ ৪১ হাজার ৬০১ টাকা পরিশোধ করে এর রশিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের দপ্তরে জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয় চিঠিতে।

এ ব্যাপারে গণমাধ্যমকে সামিয়া রহমান বলেন, ‘আমার কাছে বিশ্ববিদ্যালয় কোনো টাকা পায় না বরং অর্জিত ছুটি থাকায় আমিই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে টাকা পাই। মামলায় হেরে আমাকে টাকা বুঝিয়ে না দিতে এবং প্রতিশোধ নিতে এই চিঠি দেওয়া হয়েছে।’

এদিকে হাইকোর্টে সামিয়ার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি শেষে আদালত গত ৪ আগস্ট রায়ে সামিয়া রহমানের পদাবনতির সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন। তাকে তার সব ধরনের বিভাগীয় সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় রায়ে।

(ঢাকাটাইমস/১০আগস্ট/মোআ)