প্রতিমাসে ১৮ হাজার লিটার চোরাই তেল কেনা-বেচা করত চক্রটি

প্রকাশ | ১০ আগস্ট ২০২২, ১৮:৫২ | আপডেট: ১০ আগস্ট ২০২২, ২০:২৮

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

তিনটি দোকানে প্রতিমাসে ১৮ হাজার চোরাই তেল কেনা-বেচা করত বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) এ.এইচ.এম আজিমুল হক। তিনি বলেন, রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায় সরকারি অফিসের আধিক্যের কারণে এই চক্রটি এই এলাকাকে বেছে নিয়ে এমন অসাধু কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল।

বুধবার বিকালে তেজগাঁওয়ের উপকমিশনারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তেজগাঁও বিভাগের ডিসি এইচ এম আজিমুল হক।

এর আগে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে চোরাই তেল কেনা-বেচা করার চক্রের চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- মো. আবু কালাম (৫৬), মো. সুমন (৪০), মো. বাবু (২১), মো. শাহিন (১৯)। তাদের কাছ থেকে প্রায় ৬০০ লিটার অকটেন ও পেট্রোল জব্দ করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের ডিসি বলেন, বেশকিছু দিন আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল আগারগাঁওয়ে বিজ্ঞান প্রযুক্তি যাদুঘরের সামনের কয়েকটি দোকান সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের অফিসিয়াল গাড়ির জ্বালানি তেল চুরি করে বিক্রি হচ্ছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার দুপুরে তেজগাঁও জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মো. মাহমুদ খানের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে তিনটি দোকান থেকে প্রায় ৬০০ লিটার অকটেন ও পেট্রোল উদ্ধার করে। এ সময় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে এইচ এম আজিমুল হক বলেন, রাজধানীর তেজগাঁওয়ের আগারগাঁও থেকে সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের অফিসিয়াল গাড়ির জ্বালানি তেল চুরি চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চক্রটি প্রতিদিন ৫০টি সরকারি গাড়ি থেকে তিন থেকে চার লিটার তেল সংগ্রহ করতো। প্রতিদিন একটি দোকানে সরকারি গাড়ি থেকে প্রায় ২০০ লিটার তেল ক্রয় করতো, যার মাসিক হিসাব প্রায় ছয় হাজার লিটার। এ রকম মোট তিনটি দোকানে মাসে প্রায় ১৮ হাজার লিটার চোরাই তেল কেনাবেচা হয়ে আসছিল।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এইচ এম আজিমুল হক বলেন, প্রতি লিটার অকটেন ১০০ টাকায় কিনতো তারা। এরপর খোলা বাজারে ১২৮ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি করত। প্রতি লিটার পেট্রোল ১১০ টাকায় কিনে খোলা বাজারে ১৩০ টাকায় এবং প্রতি লিটার ডিজেল ১০০ টাকায় কিনে করে খোলা বাজারে ১০৮ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি করে আসছিলো।

সংবাদ সম্মেলনে তেজগাঁও বিভাগের ডিসি বলেন, সুনির্দিষ্ট কিছু তথ্য পেয়েছি যা যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি যে সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়িচালক এই তেল চুরি চক্রের সঙ্গে জড়িত তাদেরকেও বিষয়টি অবহিত করা হবে।

বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলায় জ্বালানি তেল ব্যবহারে সদাশয় সরকার যে কৃচ্ছতা সাধন নীতি বা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন, প্রত্যেক নাগরিকের তা বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে হবে। তাদের নিজেদের ক্ষেত্রে এই ধরনের চক্রের উপস্থিতি আছে কি না, সেটা নিশ্চিত হয়ে সরকারের কৃচ্ছতা সাধন নীতি বাস্তবায়নে যেন প্রত্যেক নাগরিক নিজ নিজ জায়গা থেকে ভূমিকা রাখেন।

(ঢাকাটাইমস/১০আগস্ট/এএ/কেএম)